কুমিল্লায় প্রতিষ্ঠান না করেই ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা
সাইদুজ্জামান ভুইয়াঃ
মোচাগড়া মডেল কলেজ’ নামের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না করেই ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা সেজে বিভিন্ন ব্যানার, ফেষ্টুন, এমনকি বাড়ির গেইটে নামের পাশে প্রতিষ্ঠাতা ব্যবহার করে আলোচনায় এসেছেন শামীম মিঞা নামের একব্যক্তি। এ বিষয়ে কেউ সম্মুখে কথা না বললেও নীরবে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে ওই এলাকায়। কেউ কেউ বলছে টাকা থাকলে সবকিছই সম্ভব, আবার কেউ কেউ বলছে এটি নিছক ভন্ডামী ছাড়া আর কিছু নয়।
বলছিলাম কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের মোচাগড়া গ্রামের কাল্পনিক মোচাগড়া মডেল কলেজের কথা। আলোচিত শামীম মিঞা ঐ গ্রামের আব্দুর রহিম মিয়ার ছেলে। সে ঢাকায় এসিডের ব্যবসা করে।
সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, কলেজ যেখানে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা সেখানে একটি ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের ফলক দাড়িয়ে আছে, যেখানে লেখা রয়েছে ‘মোচাগড়া মডেল কলেজ’ প্রতিষ্ঠাতা মোঃ শামীম মিঞা, হুমায়ন কবির। গত ২০ মার্চ ২০২১ সালে সাবেক সংসদ সদস্য ইফসুফ আব্দুল্লাহ হারুনকে দিয়ে জাকজমক ভাবে এই কলেজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন উদ্ভোধন করেন। দুঃখের বিষয় তিন বছর পেরিয়ে গেলেও কলেজের নামে ইট-পাথরের কাজতো দূরের কথা সেখানে একটি টিনের ঘরও নির্মান হয়নি। অথচ সে কলেজ প্রতিষ্ঠাতা হয়ে দিব্বি কলেজের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতিষ্ঠাতা বনে গেছে।
এলাকার লোকজন বলছে, আশপাশের দশটি গ্রামের সপ্ন ছিলো মোচাগড়াতে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হবে। শামীম মিঞা প্রথমে বিভিন্ন গ্রাম থেকে গন্যমান্য ব্যক্তিদেরকে ডেকে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করলেও এখন সে একাই প্রতিষ্ঠাতা হয়ে ভন্ডামী করছেন। তারা আরো বলছে, কলেজের জায়গাটিও এখন পর্যন্ত ওয়াকফ করে দেয়নি শামীম মিঞা। এই কলেজটি আদৌ প্রতিষ্ঠিত হবে কিনা তা নিয়ে চিন্তিত কয়েক গ্রামের মানুষ।
শামীম মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় গেইটের পাশে মোজাইক পাথরের একটি সাইনবোর্ড, সেখানে শামীম মিঞার নামের পাশে প্রতিষ্ঠাতা মোচাগড়া মডেল কলেজ লেখা রয়েছে। তাকে বাড়িতে না পেয়ে মুঠোফোনে কথা হলে সে এই বিষয়ে সঠিক জবাব না দিয়ে সামনা-সামনি কথা বলবেন বলে লাইন কেটে দেন।
জমির মালিক ইউপি সদস্য সেলিম মুন্সী বলেন, কলেজের কথা বলাতে, আমি আমার জায়গাটি শামীম মিঞার কাছে বিক্র করি। কিন্তু সে জায়গাটির দলিল করে নেয়ার পর কলেজের নামে এখন পর্যন্ত ওয়াকফ করে দেয়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা কাজী ফরিদ আহম্মেদ সাংবাদিকদের বলেন, মোচাগড়া মডেল কলেজ নামে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আমাদের তালিকায় নেই। যেহেতু কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই নেই সেই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা হয় কিভাবে আমার জানা নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুস সামাদ সিকদার বলেন, এই বিষয়টি আমার জানা নেই খতিয়ে দেখতে হবে। তবে প্রতিষ্ঠান না করে প্রতিষ্ঠাতা ব্যবহার করা আইনত অপরাধ।