খাগড়াছড়িতে শিক্ষক নিহতের ঘটনায় ১৪৪ ধারা জারি
আস্থা ডেস্কঃ
খাগড়াছড়িতে মামুন হত্যার জেরে পাহাড়ে সৃষ্ট সংঘাত সহিংসতার রেষ কাটতে না কাটতেই ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানা নামে এক শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুরে দিকে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে।
হত্যার ঘটনার পরপরই এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে খাগড়াছড়ি উপজেলা সদরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মোঃ সহিদুজ্জামান।
নিহত শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানা খাগাড়ছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন ও সেফটি বিভাগের চিফ ইনস্ট্রাক্টর ছিলেন। তার বিরুদ্ধে একই প্রতিষ্ঠানের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, ওই শিক্ষক সোহেল রানার বিরুদ্ধ এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা হয়েছিল। মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর তিনি আবার চাকরিতে ফেরত আসলে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা তাকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিল। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানাকে একই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে অধ্যক্ষের রুমে অবরুদ্ধ করে রাখে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে গণপিটুনি দেওয়া হলে ওই শিক্ষক নিহত হন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ১৫-২০ জন পাহাড়ি কিশোর-যুবক ওই শিক্ষককে এলোপাতাড়ি মারতে থাকেন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করা খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে খাগাড়ছড়ি সদরে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তরা এ সময় মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর করে। ভাঙচুর হয়েছে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিভিন্ন কক্ষ ও আসবাবপত্র।
খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. রিপল বাপ্পি চাকমা বলেন, হাসপাতালে আনার আগে ওই শিক্ষক মারা গেছেন।
খাগড়াছড়ি সদর থানা ওসি মোঃ আব্দুল বাতেন মৃধা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।