চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে দল ব্যর্থ, দায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর
স্পোর্টস ডেস্কঃ
ঘরের মাঠে আয়োজিত হচ্ছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, আর টুর্নামেন্টের কিনা এক সপ্তাহ না যেতেই দর্শক বনে গেছে পাকিস্তান! অবশ্য গ্রুপ পর্বে আরও একটা ম্যাচ বাকি আছে মোহাম্মদ রিজওয়ান-বাবর আজমদের।
কিন্তু আগামীকাল বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটা বাংলাদেশ ও পাকিস্তান দুই দলের জন্য শুধুই নিয়মরক্ষার। নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ও ভারতের কাছে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়েছে তাদের।
অথচ এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ঘিরে উচ্ছ্বাসের কমতি ছিল না পাকিস্তানের। উচ্ছ্বাস থাকবে না-ই বা কেন? ঘরের মাঠে ২৯ বছর পর আইসিসির কোনো টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে তারা। কিন্তু সে আনন্দে পানি ঢেলেছে বাবরদের বেহাল পারফরম্যান্স।
পাকিস্তানের এমন ভরাডুবিতে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। কেউ দোষ চাপাচ্ছেন ক্রিকেটারদের ওপর, কেউ-বা আঙুল তুলছেন বোর্ডের দিকে। কিন্তু পিসিবির সাবেক চেয়ারম্যান নাজাম শেঠি সব দায় দিয়েছেন বতর্মানে ‘জেলবন্দি’ দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ওপর! তাঁর দাবি, পাকিস্তানের ক্রিকেট তলানিতে যাওয়ার জন্য দায়ী ইমরান খান।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে নাজাম শেঠি লিখেছেন, ‘পুরো জাতি ক্ষুব্ধ, এর যৌক্তিকতা আছে। ক্রিকেট মহল বলছে, পাকিস্তানের ক্রিকেট তলানিতে পৌঁছেছে। যে ক্রিকেট দলটা টি-টোয়েন্টি (২০১৮), টেস্ট (২০১৬) ও ওয়ানডেতে (১৯৯০ ও ১৯৯৬) একসময় (র্যাঙ্কিংয়ে) এক নম্বরে ছিল, যারা ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপ ও ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতেছে, তাদের আজ কীভাবে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে!’
নাজাম শেঠির অভিযোগ, পাকিস্তান ক্রিকেটের এই অধঃপতন শুরু হয়েছে ২০১৯ সাল থেকে। সে সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ইমরান খান। পদাধিকার বলে পিসিবির পৃষ্ঠপোষকও ছিলেন তিনি। তাঁর আমলে পিসিবির ম্যানেজমেন্টে পরিবর্তন আসে।
পিসিবির চেয়ারম্যান পদ ছাড়তে বাধ্য হন নাজাম শেঠি, তাঁর বদলে দায়িত্ব পান এহসান মানি। দায়িত্ব নেওয়ার পর এহসান মানি ঘরোয়া ক্রিকেটের কাঠামোতে আমূল বদল এনে অস্ট্রেলিয়ান হাইব্রিড মডেল চালু করেন।
সেই বদলের কারণে কীভাবে পাকিস্তানের ক্রিকেট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এক্স-এ পোস্টে সে ব্যাপারে নিজের বিশ্লেষণ জানিয়েছেন নাজাম শেঠি, ‘পতনের শুরুটা ২০১৯ সাল থেকে, যখন একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী (ইমরান খান) পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে কয়েক দশক ধরে চলে আসা কাঠামো বদলে দিয়েছিলেন। একটা অকার্যকর অস্ট্রেলিয়ান হাইব্রিড মডেল আমদানি করে পাকিস্তান ক্রিকেটে চাপিয়ে দেন।
নাজাম শেঠি আরও লেখেন, বোর্ডের ওপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ অব্যাহত ছিল। পাশাপাশি পিসিবির নীতিতে বদল আনা হয়। বিদেশি কোচ আনা হতো, কয়েকদিন পরই আবার তাঁদের ছাঁটাই করা হতো। নির্বাচকদের মনোনীতি করা হতো ইচ্ছেমতো। বাদ পড়া পুরোনোদের ফিরিয়ে মেন্টর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতো।
উল্লেখ্য, নাজাম শেঠির পরিবর্তে বোর্ড চেয়ারম্যান হওয়া এহসান মানি বেশিদিন পদে থাকতে পারেননি। ২০২১ সালে বোর্ড প্রধান হন দেশটির সাবেক ক্রিকেটার রমিজ রাজা। পরের বছর ইমরান খান প্রধানমন্ত্রীত্ব হারালে রমিজকে সরিয়ে ফের পিসিবি চেয়ারম্যান হয়েছিলেন নাজাম শেঠি।