ফের রাজপথে মুখোমুখি আওয়ামী লীগ-বিএনপি
ঢাকায় পাল্টাপাল্টি সমাবেশ, এক দফার কর্মসূচীতে যাচ্ছে বিএনপি, মোকাবেলায় প্রস্তুত আওয়ামী লীগ।
স্টাফ রিপোর্টারঃ
ঢাকায় পাল্টাপাল্টি সমাবেশ, এক দফার কর্মসূচীতে যাচ্ছে বিএনপি, মোকাবেলায় প্রস্তুত আওয়ামী লীগ। এনিয়ে ফের রাজধানীতে মুখোমুখি হচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। সরকারের পতনের এক দফা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করতে বুধবার রাজধানীতে বড় ধরনের সমাবেশ করবে বিএনপি। অপর দিকে শান্তি সমাবেশের নামে আওয়ামী লীগও বড় জমায়েত করে রাজধানীর রাজপথে সরব থাকবে।
জানা গেছে, সরকারের পতনের এক দফার আন্দোলনে যাচ্ছে বিএনপিসহ আন্দোলনরত সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। বুধবার রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপি আয়োজন করেছে সমাবেশের। সমাবেশে লক্ষাধিক নেতাকর্মীর অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করতে নেয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। বুধবারের সমাবেশ থেকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘোষণা করবেন সরকার পতন ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এক দফার কর্মসূচি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একটি নিরপেক্ষ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য নতুন আন্দোলনের যে যাত্রা, সেটি ১২ জুলাই ঘোষণা করা হবে। বর্তমানে যে যুগপৎ আন্দোলন চলছে, সে আন্দোলনের সব রাজনৈতিক দল- জোটগুলো-আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী ১২ তারিখে আমরা প্রত্যেকে আমাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে গণতন্ত্রের জন্য, একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আন্দোলনের নতুন যে যাত্রা, সে যাত্রার ঘোষণা আমরা ইনশা আল্লাহ দেব।
অপরদিকে রাজনৈতিক ভাবে বিএনপিকে রাজপথে মোকাবেলার অংশ হিসেবে বরাবরের মতো বুধবারও রাজধানীতে শান্তি সমাবেশ করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এছাড়া যুবলীগ ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য সহসোগী সংগঠনগুলোও নিজেদের মতো কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে সক্রিয় থাকবে।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, বিএনপি-জামায়াত ততই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। তাদের এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা বরাবরের মতো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজপথে সক্রিয় থাকবে। বুধবার বিকাল ৩টার দিকে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শান্তি সমাবেশে অংশগ্রহণ করবেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ এবং ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। শান্তি সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী এবং সঞ্চালনা করবেন ঢাকা মহানগর উত্তর সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ বছর ব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আমরা বিএনপির সঙ্গে পাল্টাপাল্টি কোনো কর্মসূচিতে যাচ্ছি না। আমরা নিজেদের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকছি। তবে বিএনবি জামাত কর্মসূচি পালনের নামে সন্ত্রাস নৈরাজ্য করতে চাইলে তা রাজনৈতিক ভাবে প্রতিহত করার জন্য আওয়ামী লীগ রাজপথে সক্রিয় থাকবে সব সময়।
গণফোরাম (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, আমরা মতিঝিলে দলের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচি ও একদফা ঘোষণা করবো। অপরদিকে গণতন্ত্র মঞ্চ বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন ঘোষণা দেবে বলে জানান মঞ্চের সমন্বয়ক সাইফুল হক।
বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদত হোসেন সেলিম জানান, ১২ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এছাড়া, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, লেবার পার্টি প্রভৃতি দলও যুগপৎ কর্মসূচি ঘোষণা করবে ১২ জুলাই।
এদিকে সমাবেশের জন্য ডিএমপির কাছ থেকে মৌখিক অনুমতিও পেয়েছে বিএনপি। সোমবার দুপুর ২টার দিকে ডিএমপির প্রধান কার্যালয়ে কমিশনার সঙ্গে দেখা করেন বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। ডিএমপি কমিশনারের কাছে সমাবেশের জন্য একটি লিখিত আবেদন দেন দলটির প্রতিনিধিরা। এতে কমিশনার সমাবেশ করতে তাদের মৌখিক আশ্বাস দেন বলে জানান তারা।
ডিএমপির প্রধান কার্যালয় থেকে বেরিয়ে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আগামী বুধবার (১২ জুলাই) বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে আমরা সমাবেশের আহ্বান জানিয়েছি। ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা সহযোগিতা চেয়েছি। আমরা আশাবাদী পুলিশ আমাদের সহযোগিতা করবে। আমরা আশা করছি এদেশের জনগণকে সম্পৃক্ত করে এ সমাবেশকে আমরা সফল করতে পারবো।