আফগানিস্তানের নতুন সরকারকে স্বীকৃতি না দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তালেবানবিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, তালেবান ও তাদের সহযোগীদের নিয়ে গঠিত এই সরকার অবৈধ।-খবর বিবিসির
মার্কিন বাহিনীর ওপর হামলায় জড়িতদেরও অন্তবর্তীকালীন সরকারে অন্তর্ভুক্ত করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলছে, একটি অন্তবর্তীকালীন ও সবার প্রতিনিধিত্বে সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি দিলেও সে পথে হাঁটেনি ইসলামপন্থীরা।
আফগান অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান করা হয়েছে মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুনদকে। মার্কিন কালোতালিকায় যার নাম রয়েছে। এছাড়া মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের মোস্ট-ওয়ান্টেড সিরাজউদ্দিন হাক্কানিকে করা হয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তালেবানবিরোধী গোষ্ঠী দ্য ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (এনআরএফ) বলছে, তালেবানের গঠন করা অন্তবর্তীকালীন সরকারে আফগানবিরোধিতার স্পষ্ট আভাস রয়েছে। তালেবান জোর দিয়ে বলছে, কাবুলের উত্তরাঞ্চলের পাঞ্জশির উপত্যকার এনআরএফ বিদ্রোহীদের তারা পরাজিত করেছে।
কিন্তু এখনো লড়াই চালিয়ে যাওয়ার দাবি করেছে এনআরএফ যোদ্ধারা। এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, মন্ত্রিসবার কয়েকজনের অতীত ইতিহাস ও যোগসাজশে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিদেশি নাগরিক ও আফগানদের নিরাপদে দেশ ছাড়ার অনুমোদন দিতে তালেবানকে অঙ্গীকার পালনে বাধ্য করা হবে। এছাড়া আফগানিস্তানে প্রস্তুত থাকা ফ্লাইটের উড়ালের অনুমোদন দিতেও জোর দেওয়া হবে।
পাশ্চাত্যের ২০ দেশের সঙ্গে একটি ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকিন। এতে তালেবানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে একগুচ্ছ শর্তের সমন্বয় করা হয়েছে।
সপ্তাহতিনেক আগে ব্যাপক হামলার মাধ্যমে আফগানিস্তানের পশ্চিমা সমর্থিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে বড় ধরনের প্রতিকূলতার মধ্যে রয়েছে তারা। আর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের উদ্যোগও তার মধ্যে অন্যতম।
সরকার গঠনে পাকিস্তানের হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে উত্তাল আফগানিস্তানের রাজপথ। দেশটিতে দিন দিন জোরালো হচ্ছে ইসলামাবাদবিরোধী আন্দোলন। পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর মদদে চলছে তালেবান—এমন অভিযোগও করেন তারা।
এদিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাতে বিক্ষোভে তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত বেশ কয়েকজন। রাজধানী কাবুলেও তালেবানের রোষানলে পড়েন প্রতিবাদকারীরা। তবে রাজনৈতিক সমাধানের কথা বলছে পাকিস্তান।
কাবুল থেকে হেরাত—সর্বত্রই এখন পাকিস্তানবিরোধী বিক্ষোভ। হেরাতে বিক্ষোভে ঘটে হতাহতের ঘটনা। তালেবান চড়াও হলে শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে বাধ্য হয় বিক্ষোভকারীরা। তবে বিক্ষুব্ধরা বলছেন, তারা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
মূলত তালেবান সরকারে পাকিস্তানের মদদের প্রতিবাদে জোরালো হয়েছে বিক্ষোভ। কাবুলের সরকারে ইসলামাবাদ কেন তাদের প্রভাব বলয় তৈরি করেছে তার প্রতিবাদেই রাস্তায় নামে আফগানরা।
তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে—ইসলামাবাদ চায় রাজনৈতিক সমাধান। এতে দোষের কিছু নেই।