তৃণমূল বিএনপিতে যাচ্ছেন তৈমুর ও সমশের মবিন!
আস্থা ডেস্কঃ
ইসির নিবন্ধন পাওয়া তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন বিএনপির সাবেক দুই নেতা তৈমুর আলম খন্দকার ও সমশের মবিন চৌধুরী। এই দুই নেতা তৃণমূল বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বে আসছেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অন্তরা হুদা।
এছাড়াও বিএনপি থেকে বিভিন্ন সময় বাদ পড়া এবং ক্ষোভ-অভিমানে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া অনেক নেতাও দলটিতে যোগ দিতে পারেন। গণমাধ্যমকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করে তৃণমূল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অন্তরা হুদা বলেন, সমশের মবিন চৌধুরী ও তৈমুর আলম খন্দকার আমাদের দলে যোগ দিচ্ছেন। তারা ভালো পদে থাকবেন। বিএনপিকে ভাঙার কোনো ইচ্ছা তাদের নেই বলে জানান তিনি।
এই তালিকায় বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তারও রয়েছেন।
সমশের মবিন চৌধুরী ছিলেন বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান। এর আগে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তিনি বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন। আর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। তাকে বিএনপি থেকে গত দেড় বছর আগে বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে তৈমুর আলম খন্দকার গণমাধ্যমকে বলেন, বিএনপি তাকে গত দেড় বছর ধরে বহিষ্কার করে রেখেছে। তিনি তো আর দল ছাড়েননি। তিনি আওয়ামী লীগেও যাবেন না। যেহেতু বিএনপি তাকে বহিষ্কার করেছে, তাকে এখন তৃণমূল বিএনপিকে আঁকড়ে ধরে থাকতে হবে। তৃণমূল বিএনপির শীর্ষ পদে থাকবেন বলে আশা তার।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপির সাবেক নেতা সমশের মবিন চৌধুরীর সঙ্গে তার কথা হয়েছে, তিনিও তাদের সঙ্গে থাকছেন। তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেয়ার জন্য বিএনপির অনেক নেতা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলে দাবি করেন তিনি।
২০০৮ সালে বিএনপিতে যোগ দেন চার দলীয় জোট সরকারের সময়কার পররাষ্ট্রসচিব সমশের মবিন চৌধুরী। পরের বছর দলটির ভাইস চেয়ারম্যান হন তিনি। এরপর ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে বিএনপির রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান।
পরে আবার ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিকল্পধারা বাংলাদেশে যোগ দিয়ে প্রেসিডিয়াম সদস্য হন। এখনও তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বিকল্পধারা থেকে পদত্যাগ করেননি। অন্যদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে নির্বাচন করায় সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তৈমুর আলম খন্দকারকে বহিষ্কার করে বিএনপি।
তৃণমূল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা নাজমুল হুদা। তিনি ১৯৯১ ও ২০০১ সালে দুই দফায় খালেদা জিয়ার সরকারে মন্ত্রী ছিলেন। তবে ২০১২ সালে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে বিএনএফ নামে নতুন দল গঠন করেন। পরে সেই দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করেন দলটির প্রধান সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ। এরপর বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স (বিএনএ) এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার পার্টি (বিএমপি) নামে দুটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন নাজমুল হুদা। এরপর ‘তৃণমূল বিএনপি’ গঠন করেন তিনি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তৃণমূল বিএনপি নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে। কমিশন তখন তাদের নিবন্ধন দেয়নি। পরে দলটি আদালতের দ্বারস্থ হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশে গত ফেব্রুয়ারিতে তৃণমূল বিএনপিকে নিবন্ধন দেয় ইসি। দলটির প্রতীক সোনালি আঁশ। নিবন্ধন পাওয়ার কয়েক দিনের মাথায় নাজমুল হুদা মারা যান। এখন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন নাজমুল হুদার মেয়ে অন্তরা সেলিমা হুদা।