নববিবাহিত প্রেমিকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে ৪ দিন ধরে তরুণীর অনশন
রিয়াজুল হক সাগর/রংপুর প্রতিনিধিঃ
রংপুরের মিঠাপুকুরে বিয়ের দাবিতে চার দিন ধরে নববিবাহিত প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করছেন কলেজ পড়ুয়া এক তরুণী। স্থানীয়রা জানিয়েছেন ওই যুবক নতুন বিয়ে করেছে। নববধূকে নিয়ে সে তার শ্বশুরবাড়িতে থাকায় বিষয়টি মীমাংসা করা যাচ্ছে না।
বিয়ের দাবিতে অনশনে থাকা ওই তরুণীর দাবি ওয়ারেস আলী (২৮) নামের ওই যুবক সম্পর্কে তার জেঠাতো ভাই। তাদের দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। এরমধ্যে বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন ওয়ারেস আলী। এতে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে জোরপূর্বক গর্ভপাত করান।
ওই তরুণী আরও জানান, ওয়ারেস আলীর পরিবারের সঙ্গে তার বিয়ের কথাবার্তা চলছিল। এরমধ্যে গত ১৭ জুলাই গোপনে অন্যত্র বিয়ে করে নেন ওয়ারেস। ১৮ জুলাই বিষয়টি জানতে পারেন তিনি এবং তার পরিবার। এরপর ওই দিন সকাল থেকে বিয়ের দাবিতে ওয়ারেসের শয়নকক্ষেই অনশনে বসেন তিনি।
তিনি বলেন, তার সঙ্গে প্রতারণা হয়েছে। তাদের মধ্যে সম্পর্ক থাকা অবস্থান অনেক জায়গা থেকে বিয়ের জন্য লোকজন এসেছিলেন। কিন্তু সম্পর্কের দোহায় দিয়ে ওয়ারেস সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিতে বাধ্য করেছেন। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন সময় শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করেছেন। একপর্যায়ে তাকে গর্ভপাত করাতে বাধ্যও করেছেন। এখন ওয়ারেস আলীকে বিয়ে করা ছাড়া তার ফেরার পথ নেই।
ওয়ারেস আলীর বাবা আফসার আলী জানান, ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল তা তার জানা ছিল না। এরমধ্যে ধুমধাম করে ছেলের বিয়ে দিয়েছেন। মেয়েটি সম্পর্কের বিষয়ে আগে জানালে অন্য কোথাও বিয়ে করাতেন না ছেলেকে। এখন যেহেতু অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে গেছে আর কিছু করার নেই। এদিকে নববধূর বাবা আব্দুল জলিল জানান, তড়িঘড়ি করে বিয়ে হয়েছে। আমি এখন কী করব বুঝতে পারছি না।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আব্দুস ছালাম জানান, ওয়ারেস আগেও একটি মেয়ের সঙ্গে এমন করে পরে আর বিয়ে করেনি। সে ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা চলছে। এরমধ্যে আরেকটি মেয়ের জীবন নষ্ট করে অন্য জায়গায় বিয়ে করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে একটা মারামারি হলে আফজাল নামে একজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
মিঠাপুকুর থানার ওসি মোস্তাফিজার রহমান জানান, এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। তবে মারধর সংক্রান্ত একটি ঘটনায় জাতীয় জরুরি সেবায় ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।