নাইমুল ইসলামের সফলতা
বিনোদন প্রতিবেদক : সময়ের তরুণ প্রতিশ্রুতিশীল একজন ফটোগ্রাফার হিসেবে শোবিজ অঙ্গনে নিজের অবস্থান মজবুত করে নিয়েছেন নাইমুল ইসলাম। এরই মধ্যে শোবিজাঙ্গনের বিভিন্ন তারকার ফটোশুট করেছেন তিনি। নতুন বছরের শুরুতে করেছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও সঙ্গীতশিল্পী মেহের আফরোজ শাওনকে নিয়ে একটি ব্রান্ড `রোজবেলা’ নামের সিনেমাগ্রাফি। সম্প্রতি চিত্রনায়িকা বিদ্যা সিনহা সাহা মিমকে নিয়ে একটি ফটোগ্রাফির কাজ করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, মিম আপুকে নিয়ে একটি ফটোশুট করেছি, যা ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে আমার ফটোগ্রাফিক ক্যারিয়ারে। `এলিগান’ টিমের হয়ে একটি নতুনধারার ফটোশুটের কাজ করেছি। এইটাও বেশ ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। তাছাড়াও, মডেল এবং অভিনেতা আজাদ ভাইকে নিয়ে দুটি ফ্যাশন মুভি বানানো হয়েছে। উনাকে দর্শকরা ফ্যাশন শো’তে দেখবে এইটা একটা দারুণ ব্যাপার ছিলো। আর তার পরিচালক ছিলেন আশিকুর রহমান পনি।
এখানেও ফটোশুটের কিছু কাজ আমি দক্ষতার সাথে নিপুণভাবে করার চেষ্টা করেছি। বর্তমান সময়ে ফ্যাশন ফটোগ্রাফিতে যে বেশ আশার আলো জ্বালিয়েছেন তরুণ এই ফটোগ্রাফার তা নিঃসন্দেহেই বলতে পারা যায়। মূলত, ২০১৩ সাল থেকে তিনি ক্যামেরা দিয়ে বিভিন্ন ছবি তোলার কাজ শুরু করেন। তবে ছবি তোলার প্রতি তার আগ্রহের সূত্রপাত এবং ক্যামেরা চালানোর কাজটি শুরু হয়েছিলো সেই শৈশবকাল থেকেই। জানতে পারা যায়, তার বাবার নিজস্ব একটি ক্যামেরা ছিলো আর ওইটা দিয়েই দুষ্টুমির ছলে ছবি তোলার ভূত চেপে বসে তার মাথায়।
স্বপ্ন মানুষকে নিয়ে যায় অনেকদূর। স্বপ্ন পূরণের প্রতি প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রম থাকলে মানুষ অনেক অসাধ্যকেও সাধন করতে পারে। আর এমন অনেক ইতিহাসের নজির হয়ে আছে আমাদের বর্তমান প্রেক্ষাপট। নাইমুল ইসলামের উঠে আসার গল্পটাও যেন ঠিক তেমনটাই ছিলো। পরিবার থেকে একবার তাকে ল্যাপটপ ক্রয়ের জন্য টাকা দিলেও তিনি অর্ধেক টাকা দিয়ে ল্যাপটপ ক্রয় করেন এবং বাকি অর্ধেক টাকায় একটি ক্যামেরা সংগ্রহ করেন। পরে বাসায় ফিরলে তার মা তার প্রতি বেশ রাগান্বিত এবং ক্ষুব্ধ হন। তবে চোখ ভরতি স্বপ্ন যার খেলা করে ফটোগ্রাফিকে নিয়ে, কোনো প্রতিবন্ধকতা কী তাকে আর আটকে রাখতে পারে! ঠিক যেমনটা নাইমুলকেও পারেনি।
তিনি ওই ক্যামেরা দিয়েই নিজের ছবি তুলতেন এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৃশ্যের নয়নাভিরাম মনোমুগ্ধকর ছবি তুলে তা নিজের সংগ্রহে রাখতেন। প্রথমদিকে এভাবেই অতিবাহিত হতে থাকে নাইমুলের ফটোগ্রাফির ধূসর রঙিন দিনগুলো। তবে তিনি কখনো ভাবেননি যে শৈশবে সেই দুষ্টুমির ছলে ফটোগ্রাফিকে ভালোবেসে ছবি তোলার নেশাটাই আজ তাকে একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার হিসেবে দেশে প্রতিষ্ঠিত করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। একসময় তার ইচ্ছে ছিলো বড়ো হয়ে হয়তো ইঞ্জিনিয়ার হবে। কেননা ২০১৬ সালে তিনি পড়াশুনায় ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সও শেষ করেছিলেন। তবে ইঞ্জিনিয়ার যেন আর হওয়া হলো না নাইমুলের; তিনি হয়ে উঠলেন আপাদমস্তক একজন পেশাদার ফটোগ্রাফার।
পরবর্তীতে নিজেই একটি ডিএসএলআর ক্যামেরা কিনে নিয়েছিলেন তিনি৷ নাইমুল ইসলাম ২০১৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে এসে তার বন্ধু-বান্ধবীদের ছবি তোলা শুরু করেন। তখন তিনি নিজের নামে একটা ফেসবুক পেজও খোলেন। আর ওই পেজেই পোস্ট করতেন তার তোলা বিভিন্ন বর্ণিল অনিন্দ্যসুন্দর ছবিগুলো। এভাবেই মন্থর গতিতে চলতে থাকে তার ফটোগ্রাফির কাজ। একসময় এসে মানুষ তার ফটোগ্রাফিতে মুগ্ধ হয়ে তাকে নানানভাবে উৎসাহিত এবং প্রশংসা করতে থাকেন।
এরই মধ্যে একদিন হঠাৎ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় ঘটে যায় তরুণ প্রজন্মের অত্যন্ত জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী এবং বাংলা নাটকের উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয় অভিনেতা তাহসান খানের সঙ্গে। এই অভিনেতা তার ফেসবুক অফিশিয়াল পেজে `একজন ফটোগ্রাফার প্রয়োজন’ শিরোনামে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। তখন অনেকে ওই পোস্টের নিচে ফটোগ্রাফি করতে চান লিখে মন্তব্য জানান। আজকের নাইমুল ইসলামও সেখানে মন্তব্য করেছিলেন। এ প্রসঙ্গে নাইমুল পিবিএন টোয়েন্টিফোর ডট কমকে জানান, `একদিন একটি বিজ্ঞাপন শুটিংয়ে গিয়ে তাহসান খানের সঙ্গে দেখা করি।
শুটিং স্পটে বিশিষ্ট নির্মাতা অমিতাভ রেজার সঙ্গে আমার পরিচয় করিয়ে দেন তিনি। তারপর তাদের কিছু যুগলবন্দি ছবি তুলে দিই আমি। এভাবেই ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা পেতে থাকে আমার করা ফটোশুটগুলো।’ নাইমুল ইসলাম আরও জানান, কিছুদিন পূর্বেই `বিজেএমই’- এর একটি ফটোশুট করেছি। কাজটি এখনও চলমান। মাহমুদুর হাসান মুকুল দেশের একজন স্বনামধন্য ফ্যাশন নির্মাতা। তিনি দেশের বৃহৎ ফ্যাশন হাউজ `আড়ং’ থেকে শুরু করে বড়ো বড়ো ফ্যাশন হাউজে ফ্যাশনশুট সম্বন্ধীয় নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। তার সাথে এই প্রথম একটা কোলাব্রশং ফটোশুটে অংশ নেওয়া হয়েছে। এই কাজটির ছবি এখনও প্রকাশ হয়নি, তবে খুব শীঘ্রই তা প্রকাশ করা হবে। আশা করি, সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে কাজটি।
তাছাড়াও, নাইমুল ইসলাম জনপ্রিয় তারকা, মডেল এবং অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়ার ফটোশুট করেছেন। যেই ফটোশুটের ছবি নুসরাত ফারিয়া তার নিজস্ব ফেসবুক পেজে আপলোডও করেছেন। ছবিগুলো বেশ ভালো সাড়াও ফেলেছে প্রকাশের সাথে সাথেই। আর তাছাড়া সামনে মাসে আমার করা আরেকটা ক্যাম্পেইন ফটোশুট প্রকাশ পাবে বলেও জানান নাইমুল ইসলাম। পরিশেষে নাইমুল ইসলাম তাহসান খানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, `আমি মনে করি, তাহসান খানের ভালোবাসা এবং সহযোগিতাতেই আমি আজকে প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার হিসেবে আত্নপ্রকাশ করতে সমর্থ হয়েছি।
আর আমি এই মানুষটার কাছে সবসময় কৃতজ্ঞ ও ঋণী থাকব, কেননা উনার ভালোবাসা ও সহযোগিতা ছিলো বলেই হয়তোবা আমি আজকের এই অবস্থানে আসতে পেরেছি। শুরুতে আমার পরিবার আমায় সাপোর্ট না দিলেও এখন আমায় সাপোর্ট দেয়। অদূর ভবিষ্যতে ফটোগ্রাফি দিয়েই নিজের স্বপ্নকে ছাড়িয়ে যেতে চাই আমি এবং স্থান করে নিতে চাই আন্তর্জাতিক অঙ্গনের কোনো সফল ফটোগ্রাফার হিসেবে।
আরো দেখুনঃ
ভালোবাসা দিবসে দারাজে সপ্তাহব্যাপী রিয়েলমি’র অবিশ্বাস্য অফার
ব্যবহারকারীদের ভালোবাসায় লাইকি’র পথচলা
# নাইমুল ইসলামের সফলতা # নাইমুল ইসলামের সফলতা
বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।