যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বেশি ভালো প্রার্থী কে? ট্রাম্প না বাইডেন? রুশ গণমাধ্যমের দৃষ্টিতে সেটি মূল প্রশ্ন নয়। বরং রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল জনগণকে এ বার্তাই দিয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। যার মানে দেশটির গণতন্ত্র মুখথুবড়ে পড়ছে, সেটাই বোঝানো হচ্ছে এবং এর আরও একটি অন্তর্নিহিত তাৎপর্য হচ্ছে এই যে, কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল, তা অন্যকে শেখানোর মতো অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র আর নেই।
বুধবার সকালে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত টিভি চ্যানেল রোশিয়া-২৪ যুক্তরাষ্ট্রের রাস্তায় লোকজনের চিৎকার ও মারামারির ভিডিও দেখিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনকে ‘পাগলামি’ আখ্যা দিয়েছেন তারা। রাশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল এনটিভিও যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতিতে অস্থিরতার পূর্বাভাস দিয়েছে।
এদিকে, জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্নেগ্রেট ক্রাম্প কারেনবাউয়ার বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি বিস্ফোরক বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এ এমন এক পরিস্থিতি, যা থেকে দেশটিতে সাংবিধানিক সংকট দেখা দিতে পারে। এতে জার্মানি উদ্বিগ্ন না হয়ে পারছে না।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ইতিহাস গড়া প্রার্থীরা
বিবিসি জানায়, ইউরোপের আরও অনেক নেতৃস্থানীয় রাজনীতিবিদ এবার যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের এই পরিস্থিতি দেখে ‘ইউরোপের নিজেদের নিয়তি নিজেদের হাতে নেওয়ার’ যুক্তি দিচ্ছেন। বেলজিয়ামের সাবেক এক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ইউরোপের ভাগ্য নির্ধারণে যুক্ত নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে থাকা আর নয়।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চার বছরের শাসনামলে কূটনীতি, বাণিজ্য, বৈদেশিক নীতি, নিরাপত্তা, প্রযুক্তি, জলবায়ু এবং আরও অনেক ক্ষেত্রেই যুক্তরাষ্ট্র-ইইউ সম্পর্কের অনেক ক্ষতি হয়েছে।
তারপরও ইউরোপের নেতারা পুরোপুরি একলা চলো নীতি নেওয়ার পক্ষপাতি নন। অনেক নেতাই নীরবে বাইডেনের জয় আশা করছেন। যদিও তারা জানেন, ট্রাম্পের থেকে বাইডেনের নেতৃত্ব কিছুটা আলাদা হলেও ট্রান্স আটলান্টিক মিত্রতায় যে চিড় ধরেছে, তা নাও মেরামত হতে পারে।
ফলে যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষত এই উৎকণ্ঠার নির্বাচনের পর শেষ পর্যন্ত যিনিই হোয়াইট হাউসে যান না কেন, ইউরোপ যে প্রাথমিকভাবে বৈদেশিক সম্পর্কের পরিবর্তে নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয়েই বেশি নজর দেবে, তা একরকম নিশ্চিত।