নীলফামারীর পুলিশ সুপার (এসপি) মোখলেছুর রহমানের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণাকালে গ্রেফতার হয়েছেন প্রতারক মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ওরফে নীরব। ৬৮ জনের কাছ থেকে বিকাশে টাকা আদায়ের পর ধরা পড়লেন তিনি।
নীরব নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার চৌরাপাড়া এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে এবং বর্তমানে চট্টগ্রাম জেলার মধ্যম হালিশহর মাইজপাড়া এলাকায় বসবাস করেন।
আরও পড়ুনঃ ভিপি নূরের আইন অনুযায়ী বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নীলফামারী পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রতারক মোস্তাফিজুর রহমানের কুকীর্তি তুলে ধরেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান।
এসময় মোখলেছুর রহমান বলেন, আমার ফেসবুক আইডি থেকে ছবি সংগ্রহ করে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খোলেন নীরব। বিষয়টি জানার পর তদন্ত শুরু হয়। এক পর্যায়ে আমার নাম ব্যবহার করে টাকা আদায়ের চেষ্টা করলে বিষয়টি নজরে আসে এবং তাকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। সোমবার সন্ধ্যায় সৈয়দপুর শহরের শুটকির মোড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তারই সহযোগী চাচাতো বোন সুফিয়া বেগমকে গ্রেফতার করা হয় দিনাজপুর জেলার কাহারোল এলাকার রামচন্দ্রপুর এলাকা থেকে।
এসপি বলেন, প্রতারক নীরব ডিআইজি, বিভিন্ন জেলার এসপির নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে সরকারের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, দেশদ্রোহী কমেন্ট, লাইক শেয়ার করা এমন ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ফোন করতেন এবং মামলা থেকে বাঁচানোর কথা বলে টাকা আদায় করতেন।
তার এই কাজে সহায়তা করতেন চাচাতো বোন সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সুফিয়া বেগম। বিকাশে টাকা আদায়ে সুফিয়ার নম্বর ব্যবহার করা হত। বিকাশে আসা টাকা তারা দুইজনে ভাগ করে নিতেন।
তিনি আরও বলেন, নীরব ভোলা জেলা থেকে এই প্রতারণা শুরু করে একজন এসআইয়ের ছবি ব্যবহার করে ভুয়া আইডি খুলে। এ নিয়ে মামলা হলে ২৩ মাস জেল খেটে বের হয়ে আসলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়। পরে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসার পর আবারও নতুন করে ভুয়া আইডি খুলে প্রতারণা শুরু করেন তিনি।
এসপি বলেন, বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন তিনি। ৬৮ জনের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা আদায় করেছেন তিনি। যেটি বিকাশের স্টেটমেন্টে প্রাথমিকভাবে পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় আরও কারা জড়িত রয়েছেন এবং কতজনের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন তা বের করা হবে বলেও জানান মোখলেছুর রহমান। বিকেলে আদালতের মাধ্যমে গ্রেফতার দু’জনকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, অশোক কুমার পাল, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুন উর রশিদ উপস্থিত ছিলেন।