করোনাভাইরাস সংক্রমণের অজুহাতে দেশব্যাপী লকডাউন দিয়েও ঠেকানো যায়নি প্রতিবাদকারীদের। আইনের ফাঁকফোকর গলে ঠিকই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর পদত্যাগ দাবিতে আবারও বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, লকডাউনের কারণে ইসরায়েলিদের নিজ বাসভবন থেকে এক মাইলের বেশি দূরে সমবেত হওয়া নিষিদ্ধ রয়েছে। একারণে নিয়মিত সমাবেশস্থল জেরুজালেমে নেতানিয়াহুর সরকারি বাসভবনের বাইরে জড়ো হতে পারেননি বিক্ষোভকারীরা।
তবে শনিবার ইসরায়েলজুড়ে কয়েকশ’ জায়গায় ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বিক্ষোভ করেছেন নেতানিয়াহুবিরোধীরা। সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়েছ তেল আবিবের হাবিমা চত্বরে। এদিন সেখানে সমবেত হয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ।
বিক্ষোভকারীরা তৃণমূল পর্যায়ে আন্দোলনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে কালো ও গোলাপি পতাকা প্রদর্শন করেন। বেশকিছু ব্যানারে নেতানিয়াহুর ডাকনাম ব্যবহার করে বলা ছিল ‘বিবি, তুমি আমার ভবিষ্যৎ নষ্ট করছ।’ কেউ কেউ স্লোগান দিয়েছেন ‘চলে যাও’ বলে।
এদিন তেল আবিব ও জেরুজালেমে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের দাবি করেছে ইসরায়েলি পুলিশ। এসময় পুলিশি বাধা অমান্য করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে অন্তত চারজনকে।
ইসরায়েলি পত্রিকা দৈনিক হারেৎজকে পুলিশ জানিয়েছে, শান্তিভঙ্গকারীরা দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় এবং তাদের দিকে বিভিন্ন জিনিস নিক্ষেপ করে। এতে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা আহত হন। তাদের ঘটনাস্থলেই চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
বিক্ষোভের আয়োজক দ্য ব্ল্যাক ফ্ল্যাগস মুভমেন্ট জানিয়েছে, শনিবার ইসরায়েলের অন্তত ১ হাজার ২০০ জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছে।
তবে বিক্ষোভকারী একটি গ্রুপ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, শনিবারের এ আন্দোলন বড় কর্মসূচির প্রস্তুতি মাত্র। সামনের সপ্তাহে বিধিনিষেধ উঠে গেলেই নেতানিয়াহুর বাসভবনের বাইরে আরও বড় বিক্ষোভের আয়োজন করা হবে।
প্রায় ৯০ লাখ জনসংখ্যা দেশ ইসরায়েলে এ পর্যন্ত অন্তত দেড় লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন এক হাজারেরও বেশি। মহামারির ধাক্কায় ইতোমধ্যেই বড় মন্দার মুখে পড়েছে দেশটি, বেকারত্বের হার চলে গেছে ২০ শতাংশের ওপর।
গত আগস্টে ইসরায়েল ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউটের এক জরিপে দেখা গেছে, করোনা সংকট মোকাবিলায় নেহানিয়াহুর সক্ষমতায় বিশ্বাস নেই দেশটির ৬১ শতাংশ মানুষের।
সমালোচকরা বলছেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী তার বিরুদ্ধে ওঠা ঘুষ, জালিয়াতি ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগের শুনানি নিয়ে এত বেশি ব্যস্ত ছিলেন যে মহামারি মোকাবিলায় নজর দিতে পারেননি।
৭০ বছর বয়সী এ নেতার বিরুদ্ধে গত মে মাসে বিচার শুরু হয়েছিল এবং আগামী জানুয়ারিতে তা ফের চালু হওয়ার কথা রয়েছে।