ঢাকা ০১:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
Logo শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়ালেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সনেট Logo শাপলা না পাওয়ার প্রশ্নই আসে না: ময়মনসিংহে এনসিপির সারজিস আলম Logo অধ্যক্ষসহ ৫৫ জনের ভুয়া সনদ! বনপাড়া আদর্শ কলেজে নিয়োগ কেলেঙ্কারি ফাঁস Logo মিরপুরের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ১৬ জনের প্রাণহানির ঘটনায় গভীরভাবে শোক প্রকাশ : তারেক রহমান Logo পানছড়ির জিয়ানগরে ভোট ফর ওয়াদুদ ভূইয়া-ভোট ফর ধানের শীষ ক্যাম্পেইন অনুষ্টিত Logo সব সরকারি কলেজে শিক্ষকদের ক্লাস বর্জন, পরীক্ষাও স্থগিত Logo ১৬ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে প্রথম সুষ্ঠু নির্বাচন হবে: প্রধান উপদেষ্টা Logo জয়ের সুযোগ হাতছাড়া করল বাংলাদেশ Logo শান্তি সম্মেলনে গাজা পুনর্গঠন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত Logo আমেরিকান দূতাবাসের সামনে হঠাৎ নিরাপত্তা জোরদার

পাথর নিয়ে আবারও টার্গেট বিএনপি

Astha DESK
  • আপডেট সময় : ০৬:০৬:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
  • / ২০৮৩ বার পড়া হয়েছে

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রের পাথর লুটপাটের ঘটনায় তোলপাড় চলছে দেশব্যাপী। সিলেটে পাথর উত্তোলন নিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপিকে টার্গেট করে পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ উঠেছে।

নেপথ্যে থেকে কলকাঠি নাড়ছে মাফিয়া গোষ্ঠী ও পাথর আমদানি সিন্ডিকেট। অভিযোগ রয়েছে, এক বছরেও মাফিয়া গোষ্ঠীটি শাস্তির আওতায় না আসায় সুযোগ বুঝে মাঝেমধ্যেই বিষাক্ত ফনা তুলছে বিএনপির দিকে।

জানা যায়, সিলেটের সবক’টি পাথর কোয়ারীতে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয়, সেই সাথে বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান জড়িত। পাথরকোয়ারীগুলো মূলত সিলেটের স্থানীয় অর্থনীতির মজুবত ভিত্তি। প্রায় ১৫ লাখ ব্যবসায়ী-শ্রমিক ও পরিবহণ মালিক-শ্রমিক এ পাথর ব্যবসার সাথে জড়িত।

কোয়ারিগুলো থেকে ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন করলে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না মর্মে মোটামুটি একমত পরিবেশবিদরা। তবুও স্থায়ীভাবে দীর্ঘদিন পাথর কোয়ারি বন্ধ রাখার নেপথ্যে অসৎ কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে চাওর আছে স্থানীয়ভাবে।

বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পাথরসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও শ্রমিক সংগঠন পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। তবে এসব দল পরিবেশের ক্ষতি না করে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অধীনে পরিমিতভাবে পাথর কোয়ারির পক্ষে দাবি জানিয়ে আসছেন।

কিন্তু দেশের একটি বড় বাণিজ্যিক গোষ্ঠী পুরো বিষয়টি আড়াল করে এই ঘটনায় কেবল বিএনপিকে টার্গেট করে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এসব গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলা হয়, এই পাথর লুটের ঘটনায় বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতার নাম উঠে এসেছে। আর এই অজুহাতে যেন পুরো দলকেই টার্গেটে পরিণত করে কোণঠাসা করার প্রচেষ্টা দেখা গেছে। এনিয়ে চাপা ক্ষোভ দেখা গেছে দলটির নেতাকর্মীদের মাঝে।

পাথর ব্যবসায়ীরা বারবারই দাবি জানিয়ে আসছেন, কয়েক বছর কোয়ারি বন্ধ থাকা ও পাথর উত্তোলন না করায় নদীর প্রবেশমুখে স্তূপাকারে আটকে আছে পাথর। এতে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হচ্ছে। অন্যদিকে, পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় প্রতিবছরই ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণ পাথর আমদানি করতে হচ্ছে। এতে দেশে ডলার সংকট আরও বাড়ছে।

সচেতন মহল অভিযোগ করেছেন, পাথরকোয়ারী গুলো বন্ধ করে দেয়া হয় দেশের কতিপয় লুটেরা শিল্পগোষ্টির স্বার্থে। তাই এটি বন্ধের অজুহাত হিসেবে একতরফাভাবে সামনে আনা হয় পরিবেশ ধ্বংসের বিষয়টি। অথচ পাশ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে পাথর উঠছে, সেই পাথর আমদানী করছে বাংলাদেশে। পাথর তুলতে ভারতের পরিবেশ নষ্ট হয় না, কেবল যেন নষ্ট হয় বাংলাদেশের। এ যেনে ‘মাথা ব্যাথার জন্য মাথা কাটা’। পাথর কোয়ারী বন্ধের ঘটনা সিলেটের স্থানীয় অর্থনীতির জন্য বিশাল এক ধাক্কা।

বছরের পর বছর ধরে ‘পাথররাজ্য’ সিলেটের কোয়ারি ও নদ-নদীগুলো থেকে যেভাবে অপরিকল্পিতভাবে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে তাতে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এভাবে পাথর তোলার ফলে ভয়াবহ পরিবেশগত ও মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। অবৈধ যান্ত্রিক পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের কারণে জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের পাশাপাশি নদীভাঙন, ভূমিধস ও প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটছে।

বিশেষজ্ঞরা এও বলছেন, পাথর কোয়ারি পুরোপুরি বন্ধ রাখা হলেও স্থানীয় লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের হারানোর পাশাপাশি সেটা পরিবেশের ওপর বিরূপ ফেলবে। নদীর প্রবেশ মুখে পাথরের স্তুপ থাকায় পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হচ্ছে।

নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হওয়ায় জাফলং কোয়ারির পাশে খাসিয়াপুঞ্জি, বিছনাকান্দি কোয়ারির পাশে বগাইয়া, ভোলাগঞ্জ কোয়ারির কালাইরাগ, কালাসাদক মৌজাসহ নদীর আশপাশের গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে এবং এলাকাগুলো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। পাথরকোয়ারির প্রবেশমুখগুলো উন্মুক্ত করার জন্য পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে পাথর উত্তোলনের অনুমতি দিলে নদীর নাব্যতা বৃদ্ধিসহ নদীর পানি প্রবাহ ঠিক থাকবে।

বিশেষজ্ঞরা পরিকল্পিত পাথর কোয়ারির জন্য একটি নতুন নীতিমালার প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, চলমান অস্থিরতা এবং সরকারের দৃঢ়তার মধ্যে এটি অত্যন্ত সময়োপযোগী দাবি। সুপ্রাচীনকাল থেকে সিলেটের সীমান্তবর্তী নদ-নদী থেকে পাথর উত্তোলন হতো সনাতন পদ্ধতিতে, কোন যন্ত্রের ব্যবহার ছাড়াই। আধুনিক ইজারা প্রথা বাতিল করে সরকার সরাসরি সনাতন পদ্ধতিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিতে পারে।

পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে শুধুমাত্র স্থানীয় শ্রমিকদের অনুমোদনের মাধ্যমে সীমিত উত্তোলনের সুযোগ রাখা যেতে পারে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোথা থেকে, কী পরিমাণ পাথর তোলা হবে, কে তুলবে, কত টাকায় বিক্রি হবে, এইসব বিষয়ে একটি আধুনিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন তারা।

উল্লেখ্য, প্রাণ, পরিবেশ ও পর্যটন শিল্প রক্ষায় অপরিকল্পিতভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধের দাবি জানানো হচ্ছিলো দীর্ঘদিন থেকেই। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) একটি মামলার কারণে পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিত থাকে চার বছর। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশের সব কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করে। এরআগে বেলার রিটের প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলোতে যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে উচ্চ আদালত।

পাথর নিয়ে আবারও টার্গেট বিএনপি

আপডেট সময় : ০৬:০৬:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রের পাথর লুটপাটের ঘটনায় তোলপাড় চলছে দেশব্যাপী। সিলেটে পাথর উত্তোলন নিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপিকে টার্গেট করে পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ উঠেছে।

নেপথ্যে থেকে কলকাঠি নাড়ছে মাফিয়া গোষ্ঠী ও পাথর আমদানি সিন্ডিকেট। অভিযোগ রয়েছে, এক বছরেও মাফিয়া গোষ্ঠীটি শাস্তির আওতায় না আসায় সুযোগ বুঝে মাঝেমধ্যেই বিষাক্ত ফনা তুলছে বিএনপির দিকে।

জানা যায়, সিলেটের সবক’টি পাথর কোয়ারীতে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয়, সেই সাথে বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান জড়িত। পাথরকোয়ারীগুলো মূলত সিলেটের স্থানীয় অর্থনীতির মজুবত ভিত্তি। প্রায় ১৫ লাখ ব্যবসায়ী-শ্রমিক ও পরিবহণ মালিক-শ্রমিক এ পাথর ব্যবসার সাথে জড়িত।

কোয়ারিগুলো থেকে ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন করলে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না মর্মে মোটামুটি একমত পরিবেশবিদরা। তবুও স্থায়ীভাবে দীর্ঘদিন পাথর কোয়ারি বন্ধ রাখার নেপথ্যে অসৎ কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে চাওর আছে স্থানীয়ভাবে।

বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পাথরসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও শ্রমিক সংগঠন পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। তবে এসব দল পরিবেশের ক্ষতি না করে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অধীনে পরিমিতভাবে পাথর কোয়ারির পক্ষে দাবি জানিয়ে আসছেন।

কিন্তু দেশের একটি বড় বাণিজ্যিক গোষ্ঠী পুরো বিষয়টি আড়াল করে এই ঘটনায় কেবল বিএনপিকে টার্গেট করে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এসব গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলা হয়, এই পাথর লুটের ঘটনায় বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতার নাম উঠে এসেছে। আর এই অজুহাতে যেন পুরো দলকেই টার্গেটে পরিণত করে কোণঠাসা করার প্রচেষ্টা দেখা গেছে। এনিয়ে চাপা ক্ষোভ দেখা গেছে দলটির নেতাকর্মীদের মাঝে।

পাথর ব্যবসায়ীরা বারবারই দাবি জানিয়ে আসছেন, কয়েক বছর কোয়ারি বন্ধ থাকা ও পাথর উত্তোলন না করায় নদীর প্রবেশমুখে স্তূপাকারে আটকে আছে পাথর। এতে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হচ্ছে। অন্যদিকে, পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় প্রতিবছরই ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণ পাথর আমদানি করতে হচ্ছে। এতে দেশে ডলার সংকট আরও বাড়ছে।

সচেতন মহল অভিযোগ করেছেন, পাথরকোয়ারী গুলো বন্ধ করে দেয়া হয় দেশের কতিপয় লুটেরা শিল্পগোষ্টির স্বার্থে। তাই এটি বন্ধের অজুহাত হিসেবে একতরফাভাবে সামনে আনা হয় পরিবেশ ধ্বংসের বিষয়টি। অথচ পাশ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে পাথর উঠছে, সেই পাথর আমদানী করছে বাংলাদেশে। পাথর তুলতে ভারতের পরিবেশ নষ্ট হয় না, কেবল যেন নষ্ট হয় বাংলাদেশের। এ যেনে ‘মাথা ব্যাথার জন্য মাথা কাটা’। পাথর কোয়ারী বন্ধের ঘটনা সিলেটের স্থানীয় অর্থনীতির জন্য বিশাল এক ধাক্কা।

বছরের পর বছর ধরে ‘পাথররাজ্য’ সিলেটের কোয়ারি ও নদ-নদীগুলো থেকে যেভাবে অপরিকল্পিতভাবে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে তাতে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এভাবে পাথর তোলার ফলে ভয়াবহ পরিবেশগত ও মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। অবৈধ যান্ত্রিক পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের কারণে জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের পাশাপাশি নদীভাঙন, ভূমিধস ও প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটছে।

বিশেষজ্ঞরা এও বলছেন, পাথর কোয়ারি পুরোপুরি বন্ধ রাখা হলেও স্থানীয় লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের হারানোর পাশাপাশি সেটা পরিবেশের ওপর বিরূপ ফেলবে। নদীর প্রবেশ মুখে পাথরের স্তুপ থাকায় পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হচ্ছে।

নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হওয়ায় জাফলং কোয়ারির পাশে খাসিয়াপুঞ্জি, বিছনাকান্দি কোয়ারির পাশে বগাইয়া, ভোলাগঞ্জ কোয়ারির কালাইরাগ, কালাসাদক মৌজাসহ নদীর আশপাশের গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে এবং এলাকাগুলো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। পাথরকোয়ারির প্রবেশমুখগুলো উন্মুক্ত করার জন্য পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে পাথর উত্তোলনের অনুমতি দিলে নদীর নাব্যতা বৃদ্ধিসহ নদীর পানি প্রবাহ ঠিক থাকবে।

বিশেষজ্ঞরা পরিকল্পিত পাথর কোয়ারির জন্য একটি নতুন নীতিমালার প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, চলমান অস্থিরতা এবং সরকারের দৃঢ়তার মধ্যে এটি অত্যন্ত সময়োপযোগী দাবি। সুপ্রাচীনকাল থেকে সিলেটের সীমান্তবর্তী নদ-নদী থেকে পাথর উত্তোলন হতো সনাতন পদ্ধতিতে, কোন যন্ত্রের ব্যবহার ছাড়াই। আধুনিক ইজারা প্রথা বাতিল করে সরকার সরাসরি সনাতন পদ্ধতিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিতে পারে।

পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে শুধুমাত্র স্থানীয় শ্রমিকদের অনুমোদনের মাধ্যমে সীমিত উত্তোলনের সুযোগ রাখা যেতে পারে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোথা থেকে, কী পরিমাণ পাথর তোলা হবে, কে তুলবে, কত টাকায় বিক্রি হবে, এইসব বিষয়ে একটি আধুনিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন তারা।

উল্লেখ্য, প্রাণ, পরিবেশ ও পর্যটন শিল্প রক্ষায় অপরিকল্পিতভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধের দাবি জানানো হচ্ছিলো দীর্ঘদিন থেকেই। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) একটি মামলার কারণে পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিত থাকে চার বছর। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশের সব কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করে। এরআগে বেলার রিটের প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলোতে যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে উচ্চ আদালত।