নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে অনৈতিক কাজের অপবাদে দেলোয়ার মামা বাহিনীর নির্যাতনের শিকার ওই নারীকে (৩৬) অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন দেলোয়ার।
শারীরিক সম্পর্কে রাজি না হলে নিজ বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে গণধর্ষণের হুমিকও দিতেন দেলোয়ার। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ-তদন্ত) আল আহমুদ ফয়জুল কবির।
ধর্ষণ মামলা: রায় পেছাল ৬ বার, আদালত পাল্টেছে দুই বার, আসামি লাপাত্তা
মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অডিটরিয়ামে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ তথ্য জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বিবস্ত্র করে গৃহবধূকে নির্যাতন, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে ডিআইজি
আল আহমুদ ফয়জুল কবির জানান, মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বেগমগঞ্জ থানায় তিনিসহ তাদের তদন্ত কমিটির সদস্যরা নির্যাতিতা ওই গৃহবধূর সাথে কথা বলেন। গৃহবধূ তাদের কাছে অভিযোগ করেন, গত এক বছর আগে দেলোয়ার তার ঘরে ঢুকে প্রথমে তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। এসময় দেলোয়ার তার সাথে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হতে বলেন। তিনি চিৎকারের চেষ্টা করলে দেলোয়ার তাকে হত্যা ও তার দলের লোকজন দিয়ে গণধর্ষণের ভয় দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়।
এর কিছুদিন পর দেলোয়ার ও তার সহযোগী কালাম ওই নারীকে তার বাড়ি থেকে বের করে একটি নৌকা যোগে বাড়ীর পার্শ্ববর্তী একটি বিলে নিয়ে যায়। সেখানে দেলোয়ার ও কালাম তাকে গণধর্ষণের চেষ্টা করলে হাতে পায়ে ধরে কালামের হাত থেকে রক্ষা পেলেও দেলোয়ার তাকে নৌকার মধ্যে আবারও ধর্ষণ করেন। এরপর থেকে দেলোয়ার তার সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করতে ব্যর্থ হয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
তিনি আর জানান, এ ঘটনায় নির্যাতিতা বাদী হয়ে আদালতে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করবেন। মামলাটি পরিচালনা করবেন অ্যাডভোকেট জাফর উদ্দিন বাবুল। আদালতে ২২ ধারায় পুনরায় ভিকটিমের জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে। আমাদের তদন্ত শেষে চূড়ান্ত রিপোর্ট চেয়ারম্যান মানবাধিকারের কাছে জমা দেয়া হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় মানবাধিকারের উপ-পরিচালক গাজী সালা উদ্দিন, নোয়াখালী জেলা মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কামরুন নাহার।
প্রসঙ্গত, ২ সেপ্টেম্বর রাতে ওই নারীর আগের স্বামী তার সাথে দেখা করতে তার বাবার বাড়ি একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে এসে তাদের ঘরে ঢোকেন। বিষয়টি দেখে স্থানীয় মাদকব্যবসায়ী ও দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার। রাত ১০টার দিকে দেলোয়ার তার লোকজন নিয়ে ওই নারীর ঘরে ঢুকে অন্য পুরুষের সাথে অনৈতিক কাজ ও তাদের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে পিটিয়ে নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করেন।
৪ অক্টোবর দুপুরে ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়।