পাঁচবিবিতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, হুমকিতে বাগজানা সেতু
জয়নাল আবেদীন জয়/জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ
অবৈধভাবে বালু ও মাটি কেটে নেওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ছোট যমুনা নদীর ওপর নির্মাণাধীন বাগজানা সেতু। সেতুটি রক্ষায় জেলা প্রশাসনের কাছে চিঠি দিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। প্রকৌশল বিভাগের দাবি, স্থানীয় বালু মহাল ইজারাদার অবৈধভাবে নদীর উভয় পাশের বালু ও মাটি কেটে নেওয়ায় বর্ষা মৌসুমে সেতুটি হুমকির মুখে পড়বে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকাবাসির দীর্ঘদিনের দাবির মুখে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বাগজানা ও ধরঞ্জী ইউনিয়নের মানুষদের যোগাযোগ সহজ করতে কুটাহারা-বাগজানা এলাকায় ছোট যমুনা নদীর ওপর ৯৬ মিটার দীর্ঘ গার্ডার সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেতুটি নির্মাণ করছেন জয়পুরহাট সদরের মেসার্স বিএইচবি-লিটন জেভি ও মেসার্স লিটন ট্রেডার্স নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক আনিছুর রহমান লিটন।
যার চুক্তি মূল্য ৮ কোটি ৭৩ লাখ ৬৯ হাজার ৫৯৮ টাকা। ২০২১ সালের ২২ এপ্রিল সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। আগামী নভেম্বর মাসে এর কাজ শেষ হওয়ার কথা। ইতোমধ্যে সেতুটির ৭০ শতাংশ নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার পর সেতুটির উভয় পাশের নদীর পার থেকে ট্রাকে ট্রাকে মাটি ও বালি কেটে নেয়ায় সেতু সংলগ্ন নদী প্রশস্ত ও বড় বড় গর্ত হয়েছে।
ফলে বর্ষা মৌসুমে পানি ভরাট হয়ে নদীর প্রশস্ততা বেড়ে যাবে। ফলে প্রবল স্রোতে সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে যেতে পারে। এছাড়াও স্রোতের ধাক্কা সেতুতেও লাগবে। এতে সেতুটি মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।বাগজানা গ্রামের সুজন বর্মণ, রতনপুর গ্রামের আবুল কালাম, সুজাউল ইসলাম জানান, সেতুঘেঁষে ট্রাক্টর দিয়ে বালু ও মাটি কাটা হয়েছে। বর্ষার সময় এই নতুন সেতু হুমকিতে পড়বে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুটাহারা-বাগজানা বালুমহাল ইজারা নিয়েছেন পাঁচবিবি উপজেলার আবু সাঈদ রনি নামের এক বালু ব্যবসায়ী। যিনি পাঁচবিবি উপজেলা যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক পদে আছেন।
স্থানীয় বাগজানা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আরিফ হোসেন বলেন, ‘সেতুর ৪০০ মিটারের মধ্যে মাটি ও বা বালি তোলার আইনগত কোন বৈধতা নেই। এমনকি নদীর শ্রেণি পরিবর্তনও করা যাবে না। কিন্তু স্থানীয় বালু মহাল ইজারাদার আইনের তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমত সেতু পার্শ্ববর্তী নদীর পাড় ও জমি থেকে বালি ও মাটি বিক্রি করেছে।
তবে বালু মহাল ইজারাদার আবু সাঈদ রনি অভিযোগ অস্বীকার করে মোবাইল ফোনে বলেন, ‘ওই সেতুর পাশ থেকে নয়, ইজারাকৃত ঘাট থেকে বালু বিক্রি করছি। এতে সেতুর কোন ক্ষতি হওয়ার কথা নয়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) এর নির্বাহী প্রকৌশলী আলাউদ্দিন হোসেন বলেন, বর্ষার আগে ব্যবস্থা নেওয়া না গেলে সেতুটি হুমকিতে পড়বে। ‘সেতু রক্ষায় আইনগত সহযোগীতার জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক সালেহীন তানভীর গাজী বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।