বেশ কয়েকদিন চলে ধরা চরম রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই পাকিস্তানের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে এবার প্রকাশ্যে এল অন্তর্দ্বন্দ্ব। পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন জানিয়েছে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের জামাইয়ের গ্রেফতারির নির্দেশ দিতে বাধ্য করতে সিন্ধ প্রদেশের পুলিশের প্রধানকে অপহরণ করে দেশের আধাসেনা বাহিনী পাক রেঞ্জার্স। এদিকে এমন ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া।
এক বিবৃতিতে পাক সেনার তরফে জানানো হয়, করাচির সেনা কমান্ডার ঘটনার তদন্ত করবেন। এদিকে পুলিশ প্রধানের এই অসম্মানের প্রতিবাদে সিন্ধ পুলিশের বিভিন্ন পদাধিকারীরা গণছুটির আবেদন করেন। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার পরে করাচির বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষ বেধে গিয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে জাতীয় স্বার্থে তাই আপাতত দশ দিনের জন্য নিজেদের ছুটির আবেদন পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সিন্ধ পুলিশের আইজি মুস্তাক মেহর। নিজের অধস্তন অফিসারদেরও একই অনুরোধ করেছেন তিনি।
পাকিস্তানে আবাসিক ভবনে বিস্ফোরণ, আহত ২০,নিহত ৫
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং পাক প্রশাসনের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে মিছিল করেন পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলি। এর পরপরই তড়িঘড়ি নওয়াজ শরিফের জামাই এবং পাকিস্তান মুসলিম লিগের নেতা মোহম্মদ সফদরকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ ওঠে, সিন্ধ পুলিশের আইজি মুস্তাক মেহেরের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে দিয়ে সফদরের গ্রেফতারির নির্দেশে সই করিয়ে নেয় পাকিস্তানের আধাসেনা রেঞ্জার্সরা। পরে অবশ্য আদালত থেকে জামিন পেয়ে যান নওয়াজ শরিফের জামাই।
এই ঘটনার পরই সিন্ধ প্রদেশের পুলিশ বাহিনীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়। বাহিনীর প্রধানের অপমানের প্রতিবাদে ছুটির আবেদন জানাতে শুরু করেন ছোট বড় কর্মকর্তারা। এই ঘটনায় পুলিশ বাহিনীকে অপমান এবং অপদস্থ করা হয়েছে বলেও সিন্ধ পুলিশের পক্ষে টুইট করা হয়৷
দুর্ভাগ্যজনক এই ঘটনায় গোটা বাহিনীর মনোবল ভেঙে গিয়েছে বলেও অভিযোগ তোলা হয়৷ এদিকে পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি টুইটারে একটি ছবি প্রকাশ করে সিন্ধ পুলিশকে সমর্থন জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে পাকিস্তানের জনগণকে সিন্ধ পুলিশকে সমর্থন জানানোর জন্যেও আহবান জানিয়েছেন।
এদিকে কারা জোর করে রেঞ্জার্স-এর অফিসে নিয়ে গিয়েছিল বা কারা তাকে অপহরণ করেছিল, এ বিষয়ে এখনো মুখ খোলেননি সিন্ধ পুলিশের আইজি মুস্তাক মেহর৷ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও এই ঘটনা নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি৷ তবে পুলিশ- সেনা সংঘাতের ঘটনায় প্রবল অস্বস্তিতে পাকিস্তান সরকার৷