জেলা প্রতিনিধিঃফরিদপুর সালথায় গত ৫ মে গুজবকে কেন্দ্র সংঘটিত সহিংসতায় গ্রেপ্তার হওয়া এক আসামি পুলিশের হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে। শনিবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় তার মৃত্যু হয়। মামলাটি তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এসআই হান্নান।
নিহতের পরিবার বলছে, পুলিশের নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, স্ট্রোক করে আসামির মৃত্যু হয়েছে।ওই আসামির নাম আবুল হোসেন মোল্যা (৪৮)। তিনি উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের গোপালিয়া গ্রামের ইমান উদ্দিন মোল্যার ছেলে। তার স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
ফরিদপুর সদর হাসপাতালের দায়িত্বরত ডাক্তার তোফাজেল হোসাইন জানান, শনিবার সকাল ৬টায় ডিবি পুলিশের সদস্যরা আবুল হোসেনকে নিয়ে আছে। আমি তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। কীভাবে মারা গেছে সেটি ময়নাতদন্ত শেষে বলা যাবে।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান জানিয়েছেন, আজ ভোর সাড়ে ৫টার সময় আবুল হোসেন বাথরুমে পড়ে যান। ধারণা করা হচ্ছে সেখান থেকেই তিনি স্ট্রোক করেছেন। আমরা বিষয়টি তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তারা প্রকৃত রিপোর্ট দেবে। তারপরে বলতে পারবো কেন, কী কারণে তার মৃত্যু হল।তিনি বলেন, গত এপ্রিল ১৬ সালতা থানা পুলিশ তাকে আটক করে।
সালথার সোনাপুর ইউপি চেয়ারম্যান খায়রুজ্জামান বাবু বলেন, আবুল হোসেন কৃষিকাজ করতো। তার পরিবার সচ্ছল ছিল। যে কারণে গ্রামের কোনো দলাদলিতে সে যেত না। সহিংসতার ঘটনায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে পাঁচ দিনের রিমান্ডের তিন দিন যেতে না যেতেই তার মৃত্যুর খবর পেলাম।
তিনি আরও বলেন, গত ২৮ এপ্রিল ফরিদপুরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারুক হোসাইনের আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আগামী ২ মে রিমান্ড শেষ হওয়ার কথা ছিল।
নিহত আবুল হোসেনের মেয়ে তানিয়া আক্তার-কান্নারত অবস্থায় বলেন, আমার বাবা নির্দোষ ছিল, গ্রামে কোনো রাজনীতি করতো না, তাকে অন্যায়ভাবে আসামি করা হয়েছিল, এখন তাকে রিমান্ডে নিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি সঠিক তদন্ত এবং ন্যায় বিচার চাই।
উল্লেখ্য, দেশে চলমান লকডাউনকে কেন্দ্র করে ও গুজব ছড়িয়ে গত ৫ এপ্রিল রাতে সালথা উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন সরকারি অফিসে তাণ্ডব চালায় কয়েক হাজার উত্তেজিত জনতা।
এ সময় দুটি সরকারি গাড়িসহ কয়েকটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় তারা। এতে প্রায় আড়াই কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংস হয়েছে। এ ঘটনায় এর আগে দুই যুবক নিহত হয়।