ফরিদপুরে মাকে হত্যার দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন
মামুনুর রশীদ/ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ
নেশার টাকার জন্য ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে মা আমেনা বেগমকে খুন করার অপরাধ মামলায় ছেলেকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত এ আদেশ দেন। রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিল আসামী শেখ আক্কাচ। রায় প্রদানের পর পুলিশ প্রহরায় তাকে জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। শেখ আক্কাচ শহরের উত্তর আলীপুর মহল্লার বাসিন্দা।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার দিকে মা আমেনা বেগমের কাছে নেশার জন্য টাকা চান তার ছেলে আক্কাস। কিন্ত টাকা দিতে অস্বীকার করেন আমেনা বেগম। এতে মায়ের উপর চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে আক্কাস। নেশার টাকার জন্য একটি মেহগনি গাছের ডাল দিয়ে মায়ের মাথায় সজোরে আঘাত করে। এসময় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরক্ষণে একটি দা দিয়ে মায়ের মাথায় এলোপাথাড়ি কোপ দিয়ে পালিয়ে।
মা আমেনা বেগমকে এলাকাবাসী মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। কিন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিনই আমেনা বেগমের মৃত্যু হয়।
এঘটনায় ৭ ফেব্রুয়ারি আক্কাসের বাবা মোঃ মোজাহার শেখ বাদী হলে ছেলেকে একমাত্র আসামি করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার এসআই মোঃ ফরহাদ হোসেন ২০১৮ সালের ১৩ এপ্রিল ছেলের হাতে মা খুনের অপরাধে আক্কাসকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। আদালত মামলার দীর্ঘ শুনানী শেষে রায় প্রদান করেন।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের পিপি নওয়ার আলী মৃধা বলেন, আসামি আক্কাস পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে জেল হাজতে ছিলেন। আদালত আমেনা বেগম হত্যা মামলার ন্যায় বিচার করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন এ রায়ের ফলে সমাজে ন্যায় বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করবে।