ফুলবাড়ীতে টিসিবি’র কার্ড বিতরণে অর্থ গ্রহনের অভিযোগ
হেলাল উদ্দিন/ফুলবাড়ী প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর সুবিধাভোগীদেরকে মাঝে ফ্যামিলি কার্ড বিতরণে অর্থ গ্রহনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফুলবাড়ী উপজেলায় সুবিধাভোগীদের মাঝে সরবরাহ করা ফ্যামিলি কার্ড পরিবর্তন করে নতুন কার্ড বিতরণ কাজ চলমান রয়েছে। বিনামূল্যে নতুন কার্ড বিতরণের কথা থাকলেও উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রতিটি কার্ডের বিপরীতে ৫০ টাকা করে আদায় ও নিজের খেয়াল খুশিমত তালিকা থেকে নাম পরিবর্তন করায় তার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করে বড়ভিটা ইউনিয়নের টিসিবি সুবিধাভোগীরা।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে নিয়মিত পণ্য ক্রয় করে আসছেন টিসিবির সুবিধাভোগীরা। এমতাবস্থায় বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাইকিং করে পুরাতন ফ্যামিলি কার্ড জমা দিয়ে নতুন কার্ড গ্রহনের বিষয়টি প্রচার করেন। মাইকিং শুনে সুবিধাভোগীরা কার্ড জমা দিয়ে নতুন কার্ড গ্রহনের জন্য পরিষদে যান। এসময় চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ একই ইউনিয়নের ঘোগারকুটি এলাকার বাসিন্দা নুরল হুদার ছেলে রোকনুজ্জামান রোকন, আজিমুদ্দিনের ছেলে আক্তারুজ্জামান, মাঝিপাড়া এলাকার আলহাজ্ব আব্দুল আউয়াল সরকারের ছেলে মুরাদ হাসান প্রতিটি কার্ডের বিনিময়ে ৫০ টাকা করে দাবি করেন। এবং টাকা ছাড়া কার্ড প্রদানে অস্বীকৃতি জানান। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে নিরুপায় হয়ে টাকা দিয়ে কার্ড সংগ্রহ করেন সুবিধাভোগীরা।
এছাড়াও ঘোগারকুটি এলাকার বাসিন্দা মৃত মেছের আলীর ছেলে বেলাল হোসেন বাড়িতে বাড়িতে ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ করে কার্ড প্রতি ৫০ টাকা করে আদায় করেন। পাশাপাশি চেয়ারম্যান নিজের খেয়াল খুশিমত টিসিবির সুবিধাভোগীর তালিকা থেকে অনেকের নাম বাদ দিয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্টদের বাদ দিয়ে বহিরাগত লোকদের দিয়ে কার্ড বিতরণ, কার্ড বিতরণে টাকা আদায় ও সুবিধাভোগীর তালিকা থেকে নাম বাদ দেয়ার বিষয়ে চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টুর শরণাপন্ন হলেও তার কাছ থেকে কোন সদুত্তর মেলেনি বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
এব্যাপারে ইউনিয়নটির চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ইউনিয়নের সচিব ছুটিতে গেছেন। দ্রুত সময়ে কার্ড বিতরণ কাজ শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে। তাই আমি কয়েকজন লোকের মাধ্যমে মাস্টার রোল তৈরি ও বিতরণ কাজ করিয়েছি। আর তাদের পারিশ্রমিক দেয়ার জন্য সুবিধাভোগীদের কাজ থেকে টাকা নেয়া হয়েছে। আর সুবিধাভোগীর তালিকা থেকে নাম পরিবর্তন দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি যাচাই বাছাই করে নাম পরিবর্তন করেছি। সুবিধাভোগীর তালিকার নাম পরিবর্তনে সরকারি নির্দেশনা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এরিয়ে যান।
ইউনিয়নটিতে টিসিবি সুবিধাভোগীদের মাঝে কার্ড বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলী পোদ্দার রতন বলেন, গরীব ও নিম্ন আয়ের মানুষের লসহায়তার জন্য সরকারের টিসিবি’র পণ্য বিক্রি কার্যক্রমকে বিতর্কিত করতে একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে। যারা ফ্যামিলি কার্ড বিতরণে সুবিধাভোগীদের নিকট টাকা আদায় করছে, সরকারি বিধিমালা উপেক্ষা করেছে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সবুজ কুমার গুপ্ত জানান, উপজেলায় ২১ হাজার ৩শ ৫০ জন ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য ক্রয় করছেন। বড়ভিটা ইউনিয়নে সুবিধাভোগী ৩নহাজার ৬শ ২৩ জন। কার্ডের তথ্য লিখার জায়গা না থাকায় সুবিধাভোগীদের কার্ড পরিবর্তন করে নতুন কার্ড দেওয়া হচ্ছে। সুবিধাভোগীর তালিকায় নাম পরিবর্তনের কোন নির্দেশনা নাই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন দাস বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। সুবিধাভোগীদের কেউ যাতে বঞ্চিত না হয় সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।