বাজিতপুরে শতাধিক দোকান ভাংচুর
নুরুজ্জামান আশরাফ/বাজিতপুর প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুরে বিকাশে লেনদেনকে কেন্দ্র করে প্রায় দেড় শতাধিক দোকান ভাংচুর করেছে প্রভাবশালী মহলের একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছে সাধারণ দোকানীরা। এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আতংকে সকাল থেকে দোকানপাট বন্ধ করে রেখেছে অন্যান্য দোকানীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাজারে অতিরিক্ত ৩০জন পুলিশ মোতায়েনসহ থানা থেকে আরো ১০ জন অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান থানা পুলিশ সূত্র।
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার সরারচর বাজারে গত শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫ দিকে সিএমবি রোডের জাহিদের বিকাশের দোকানে অপরিচিত তিনজন লোক লোক এসে বিকাশের মাধ্যমে ২৮ হাজার পাঁচ’শ টাকা জরুরি ভিত্তিতে পাঠানোর তাগিদ দিলে দোকানী তার (01734284870) নাম্বার থেকে টাকা পাঠান।তখন একজন লোক টাকা নিয়ে আসতেছে বলে বাকীরা অপেক্ষা করেন। টাকা পাঠানোর কয়েক মিনিট পরে একটি অটোরিকশা ও চালককে জিম্মায় রেখে বাকী দু’জনই দোকান থেকে চলে গেলে আনুমানিক ৩০ মিনিট পরে পাশ্ববর্তী দোকানের মোটর বাইক মিস্ত্রী মামুনের মাধ্যমে মুঠোফোনে দক্ষিণ সরারচর এলাকার ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সুজন মিয়া জাহিদকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতে বলেন। মানুন তাকে বাজারের ছাগল মহলের সুজন মেম্বারের কাছে নিয়ে গেলে জিম্মায় রাখা অটোরিকশাটি নিয়ে আসতে চাপ প্রয়োগ করলে।
এই বিষয়ে বিকাশের দোকানি জাহিদুল ইসলাম মিঠু গাড়ি ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানালে সুজন মেম্বার তাকে মারধর করেধ বলে জাহিদ অভিযোগ করেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যা ৭ টার দিকে দুই পক্ষের লোকজনই দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাল্টাপাল্টি দোকান পাট ভাংচুর করে রাত প্রায় ১১ টা পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি এই ঘটনা চলে। দক্ষিণ সরারচরের সুজন মেম্বারের লোকজন খালেকের ভান্ডার জাহিদের এলাকার এলাকার লোকজনের দোকানপাট ভাংচুর করে আর জাহিদের গ্রামবাসীরা দক্ষিণ সরারচরের লোকজনের দোকানপাট ভাংচুর করে। এতে করে ক্ষতির মুখে পড়ে সাধারণ ব্যবসায়ীরা। পরদিন সকালে বাজারের সকল ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে বাজারের দোকানপাট ভাংচুর ও লুটপাটের প্রতিবাদে পরদিন ১৭ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল করে।
সরারচর ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার সুজন মিয়া তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরারচরের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা হলে তারা ক্ষোভের ভাষায় বলেন, সুজন মেম্বার প্রভাবশালী লোক। প্রতিনিয়ত সে এমন ধরনের কাজ করে।
সবজি ব্যসায়ী মোঃ আসলাম উদ্দিন বলেন, সবজি বিক্রি করে কোন রকমে কষ্টে আমার সংসার চলে। আমি কি দোষ করেছি, এখন আমার ক্ষতিপূরণ কে দিবে?
জাহিদুর রহমান মিঠু জানান, আমি গতকাল বিকালে বিকাশে টাকা পাঠিয়েছিলাম। টাকা না দেয়ায় জন্য আমার সাথে প্রতারণা করে একটি চক্র। এই চক্রের অন্যত্তম সুজন মেম্বার আমাকে লোক মারফতে ডেকে নিয়ে টাকা না দিয়ে উল্টো আমাকে মারধর করে। আমার গ্রামবাসীরা প্রতিবাদ জানালে তাদের দোকানপাট ভাংচুর করে।
বাজিতপুর থানার ওসি মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, বিকাশের লেনদেনকে কেন্দ্র করে এই বিবাদমান ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দোকানপাটে কোপানোর ঘটনার খবর তিনি শুনেছেন। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশসহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান। তবে এখন পর্যন্ত কেউ এই ঘটনার বিষয়ে থানায় কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি।