রিয়াজুল হক সাগর,রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশেরমত রংপুরের চলছে লকডাউন। এরই অংশ হিসেবে খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ, কাঁচাবাজারসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান খোলা রেখে বাকি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
ফলে বিপাকে পড়েছেন রংপুরের ফুটপাতের ক্ষুদ্র দোকানিসহ ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা। উপার্জনের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় তাদের অনেকেই বাধ্য হয়ে দিনমজুরি করছেন। আর যারা নগরে বসবাস করছেন, তারা ভ্যানগাড়ি বা ফেরি করে পাড়া-মহল্লার গলিতে গলিতে ঘুরে অনেকটা ভয়ে ভয়ে ব্যবসা করছেন। তবে, ঠিকমতো বেচাকেনা না হওয়ায় পরিবার নিয়ে বিপাকে এসব স্বল্প আয়ের ব্যবসায়ীরা।
এমন পরিস্থিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফুটপাতে সীমিত পরিসরে দোকান খোলার আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, ফুটপাতে ব্যবসা করে স্বল্প আয়ে সপরিবারে জীবনযাপন করছেন। লকডাউনের কারণে গত বছর বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছিলেন তারা।
এবারও একই অবস্থা চলতে থাকলে ভিক্ষা করতে হবে, না হয় অনাহারে মরতে হবে। বুধবার (৭ এপ্রিল) রংপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখে গেছে, সুপার মার্কেট, জামাল মার্কেট, সালেক মার্কেট জাহাহ কোম্পানীর মোড়, সিটি মার্কেটসহ অধিকাংশ ফুটপাতের দোকান ও ভ্রাম্যমাণ দোকান বন্ধ।
তবে, পরিবারের তিনবেলা খাবার জোটাতে ঝুঁকি নিয়েও কেউ কেউ দোকান খুলে এদিক ওদিক ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছ। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত এক বছর ধরে তাদের ব্যবসা খারাপ যাচ্ছে। সম্প্রতি করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় আবারও বিপাকে পড়েছেন তারা।
এমন অবস্থা চলতে থাকলে সামনে রমজান ও ঈদকে কেন্দ্র করে যে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা রয়েছে, তাও ভেস্তে যাবে। তারা জানান, ফুটপাতে সারা বছর টুকটাক ব্যবসা হলেও বিভিন্ন উৎসব বা দিবসকে কেন্দ্র করে বিক্রি জমে ওঠে। তবে, দেশে করোনার সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে তাদের ব্যবসায় মন্দা চলছে। সম্প্রতি করোনাসহ বিভিন্ন কারণে ব্যবসা বন্ধ থাকায় অনেকের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে।
অনেকে ঋণগ্রস্তও হয়ে পড়েছেন। জামাল মার্কেটে পাশে ফুটপাতে জামা-কাপড় বিক্রি করেন রুবেল। তিনি বলেন, গক লকডাউনসহ বিভিন্ন কারণে ৬ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে দোকান নিয়ে বসতে পারি নাই। ব্যবসা না হওয়ায় হাতে টাকাও নেই।
জমানো পুঁজি শেষ করে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। কিছুদিন হলো আবার ব্যবসা শুরু করেছি। দোকান না খুললে সংসার চালবো কী করে?’ স্টেশন এলাকায় ভ্যানে করে ফল বিক্রেতা ফরহাদ বলেন, ‘বাসায় চাল নেই, হাতে টাকা নেই। সকালে চা-নাস্তা খেয়ে বের হয়েছি।
দুপুরে কী খাবো, তার ঠিক নেই। লকডাউনে দোকান না খুললে টাকা পাবো কোথায়? এক-দুই টাকা বিক্রি হলেও তো চাল কিনতে পারবো। তাই ঝুঁকি নিয়ে বের হয়েছি।
সীমিত সময়ের জন্য সরকার লকডাউনে দোকান খোলার সুযোগ দিলে ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা বাঁচবে।