চট্টগ্রামে ২২ বছরের এক গৃহবধূকে তুলে নিয়ে দলবেঁধে গণধর্ষণ করার অভিযোগে আটজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ঘটনায় সম্পৃক্তার অভিযোগে এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে নগরের চান্দগাঁও থানার মৌলভী পুকুর পাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর গ্রেফতাররা হলেন- রিন্টু দত্ত ওরফে বিপ্লব, মো. রিপন, মো. সুজন, মো. শাহেদ, জাহাঙ্গীর আলম, সুমন ও মনোয়ারা বেগম ওরফে লেবুর মা।
ধর্ষিতার ডায়েরির ‘পাতায় পাতায়’ প্রতারণার গল্প
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) বিজয় কুমার বসাক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের জানান, ভুক্তভোগী গৃহবধূর গ্রামের বাড়ি রাঙ্গুনিয়ায়। তিনি গ্রামের বাড়ি থেকে চট্টগ্রাম নগরীর বাসার উদ্দেশ্যে ফিরছিলেন। রাত ১১টায় চান্দগাঁও থানার কাপ্তাই সড়কের মাথায় পৌঁছে রিকশায় চকবাজারে পথে রওনা হন। ওই সময় আসামিরা ওই গৃহবধূকে অনুসরণ করে। রিকশাটি মৌলভীপুকুর পাড় এলাকায় পৌঁছালে গতিরোধ করে তাকে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। রাত দেড়টা পর্যন্ত তার ওপর শারীরিকভাবে নির্যাতন চালানো হয়। পরে দেড়টা থেকে ভোর চারটা পর্যন্ত আরো ৮ থেকে ১০ জন মিলে তাকে ধর্ষণ করে।
তিনি আরো জানান, ধর্ষণের পর ওই গৃহবধূর সব টাকা পয়সা ও মোবাইল কেড়ে নেয়া হয়। শুক্রবার ভোরে ওই ভুক্তভোগী চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে গেলে খবর পায় পুলিশ। পরে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দিনভর অভিযান চালিয়ে নারীসহ আটজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় যতজনকে জড়িত পাওয়া যাবে ততজনকে আইনের আওতায় আনা হবে।
গ্রেফতার আসামি দেবু বড়ুয়া অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, করোনার সময় ওই গৃহবধূ তার বন্ধু সুমনের কাছ থেকে দুই হাজার টাকা ধার নেন। সেই টাকা না দিয়েই যোগাযোগ বন্ধ করেন ওই গৃহবধূ। বৃহস্পতিবার রাতে ওই গৃহবধূকে সুমন ফোন করে নিয়ে যান। এরপর তাদের বন্ধুদের খবর দেন। সুমন ওই গৃহবধূ ও তার সঙ্গে থাকা এক কিশোরকে মারধর করে ছেড়ে দেন। রাতে ফিরেও যায় তারা। ভোর রাতে সুমন তার বাসায় আসবেন বলেও জানান। কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে। কিন্তু ওই গৃহবধূকে যে মারধর করেছে তাকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
তবে পুলিশের এক কর্মকর্তা কাছে তার দাবি, মামলার এক নম্বর আসামি জাহাঙ্গীর ও ওই গৃহবধূর স্বামী আগে থেকেই পরিচিত। তাই গৃহবধূর বাসায় যাতায়াতি ছিল জাহাঙ্গীরের। তখন তাকে উত্ত্যক্ত করতেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাতে ওই গৃহবধূকে একা যেতে দেখেই অনুসরণ করেন জাহাঙ্গীর। একপর্যায়ে সড়কে গতিরোধ করে গৃহবধূর সঙ্গে থাকা কিশোরকে মারধর করে তাড়িয়ে দেন। পরে জাহাঙ্গীর অন্যান্য আসামিদের খবর দিয়ে ঘটনাস্থলে নিয়ে ওই গৃহবধূকে একের পর এক ধর্ষণ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (উত্তর) নাদিয়া নূর, সহকারী পুলিশ কমিশনার শহীদুল ইসলাম, চান্দগাঁও থানার ওসি আতাউর রহমান খোন্দকার ও ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রাজেস বড়ুয়া।