মেগাফোন কূটনীতি স্তম্ভিত করেছে ভারতকে
স্টাফ রিপোর্টারঃসম্প্রতি গণমাধ্যমে আলচনায় উঠে এসেছে ডক্টর ইউনূসের ‘মেগাফোন কূটনীতি’। ডক্টর ইউনূসের এই ‘মেগাফোন কূটনীতি’ ভারতকে স্তম্ভিত করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা নেয়ার পর তার ভারতের সাথে কূটনৈতিক যে বিষয়টি গণমাধ্যমে সবেচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায় তা হলো ‘মেগাফোন কূটনীতি’।
‘মেগাফোন’ প্রকৃত অর্থে একটি যন্ত্র, যা মানুষের কণ্ঠস্বরকে উচ্চমাত্রায় বাড়িয়ে জনসমক্ষে পৌঁছে দেয়। এই ধারণা থেকে ‘মেগাফোন কূটনীতি’ শব্দটি এসেছে, যেখানে কোনো দেশ বা নেতা তাদের অবস্থান বা বক্তব্য সরাসরি গোপন কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে না করে জনসমক্ষে বা গণমাধ্যমের মাধ্যমে প্রকাশ করে।
এটি সাধারণত চাপ প্রয়োগ বা জনগণের মনোযোগ আকর্ষণ করার উদ্দেশ্যে করা হয়, যাতে সমঝোতার পরিবর্তে নিজেদের অবস্থান জোরালোভাবে তুলে ধরা যায়। এক্ষেত্রে কোনো রাষ্ট্র বা তার প্রতিনিধি গোপন বা আনুষ্ঠানিক আলোচনার পরিবর্তে প্রকাশ্যে গণমাধ্যমে বা জনসমক্ষে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিষয়াদি নিয়ে বক্তব্য দেয়। জনসম্মুখে বিবৃতি, বক্তব্য, বা সতর্কতা দেয়া হয়।
মোট কথা দুই পক্ষের মধ্যে সরাসরি আলোচনা না করে, মিডিয়ার মাধ্যমে বক্তব্য প্রদান করে পরস্পরের উপর চাপ সৃষ্টি করায় এই পদ্ধতির উদ্দেশ্য। লক্ষ্য নিজেদের অবস্থানকে জোরালো করা, জনমতকে প্রভাবিত করা। আর এতে কখনও কখনও বিরোধী পক্ষ প্রকাশ্যে বিব্রত হয়ে ওঠে। ডক্টর ইউনূরের এই পদ্ধতিতে তাই বিব্রত হচ্ছে ভারত।
‘মেগাফোন কূটনীতি’ শব্দটির উৎপত্তি নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো সময় বা স্থান নির্ধারণ করা কঠিন। তবে ধারণাটি ১৯৭০ এবং ১৯৮০-এর দশক থেকে কূটনৈতিক প্রসঙ্গে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শীতল যুদ্ধ চলছিলো তখন। দুই পক্ষই একে অপরের ঘোর শত্রু ছিল। সেসময় একে অপরকে হুমকি দিতে এমন পদ্ধতি নিত দুই পক্ষ। মূলত গণমাধ্যমের প্রসার এবং রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিষয়ে গণমাধ্যমের সক্রিয় ভূমিকা মেগাফোন কূটনীতির বিস্তারের কারণ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ভারতীয় কর্মকর্তাও বিবিসিকে বলেছেন, ‘ভারত বাংলাদেশের বক্তব্য পর্যবেক্ষণ করছে। ঢাকা থেকে আসা সরকারি মতামত এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্রকাশিত বিবৃতিগুলো নোট করছে।
ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার বীনা সিক্রি সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন, ‘ভারত অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে কথা বলার জন্য এবং বাংলাদেশ ও ভারতের সব উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করার জন্য তার প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিয়েছে।’ তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ইতি মধ্যেই বিবিসিকে বলেন, ‘ভারতীয় নেতারা কি কোনো সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন না?
মি. ইউনূসকে যদি নির্দিষ্ট বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি অবশ্যই তার মতামত প্রকাশ করতে পারেন। আপনি যদি সমালোচনা করতে চান তবে যেকোনো বিষয়েই সমালোচনা করতে পারেন।