রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
তামাক শিল্প রক্ষায় তামাক শিল্পের প্রাণ চাষীদের সুরক্ষা এবং বিদেশি কোম্পানীর আগ্রাসনের হাত থেকে দেশীয় মালিকানাধীন তামাক শিল্প রক্ষার দাবিতে রংপুরে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন তামাক চাষীরা। বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) সকাল সাড়ে নয়টা থেকে স্থানীয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় দেশীয় তামাক চাষী কল্যাণ সমিতির আয়োজনে অনশনরত চাষীরা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
চাষীদের অভিযোগ, বর্তমানে বিদেশী বিভিন্ন তামাক কোম্পানীর আগ্রাসনে দেশীয় তামাক শিল্পের অস্তিত্ব হুমকির মুখে। বিদেশী কোম্পানীগুলোর বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও সিন্ডিকেটের কাছে দেশীয় চাষীরা আজ জিম্মি হয়ে পড়েছে। কঠোর পরিশ্রম করেও তামাকের ন্যায্য মূল্য তারা পাচ্ছেন না। বিদেশী কোম্পানির চক্রান্তে কমমূল্যে তারা সিন্ডিকেটের কাছে তামাক বিক্রি করতে বাধ্য হন। সমিতির নেতাদের, একসময়ে বৃহত্তর রংপুরসহ দেশে হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানি তামাক ক্রয় করতো। তখন তারা ন্যায্যমূল্য পেতো। কিন্তু বর্তমানে বিদেশী কোম্পানির চক্রান্তে এখন প্রান্তিক চাষীরা অসহায় হয়ে পড়েছে।
কৃষক বেলাল হোসেন, বঞ্চ মিয়া, মানিক মিয়া,মনির হোসেন ও আশরাফুল ইসলামসহ অনেকেই আক্ষেপ করে জানিয়েছেন, কোটি কোটি টাকা বিদেশী কোম্পানিগুলো সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিদেশে পাচার করছে। এনিয়ে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করেন। তামাক শিল্প নিয়ে যে ষড়যন্ত্র চলছে, তামাক চাষীদের সাথে যে অন্যায়-অবিচার চলছে তার জন্য এই অনশন কর্মসুচি। প্রত্যেক কৃষকের জন্য আলাদা রেজিষ্ট্রেশনের ব্যবস্থা করাসহ তাদের উৎপাদিত পণ্য ন্যায্যমূল্যে বিক্রির আহবান জানান। দেশীয় তামাক চাষী কল্যাণ সমিতি’র আহবায়ক মাসুদার রহমান জানিয়েছেন, ২০১৭-১৮ সালে তামাক নিয়ে যে নীতিমালা করা হয়েছিলো তা বাস্তবায়ন হয়নি। দেশীয় শিল্পের জন্য পৃথক নীতিমালা তৈরি করার দাবি জানান তারা। একসময়ে বিদেশী কোম্পানি এদেশে নীল চাষ করে যেভাবে কৃষকদের সাথে অন্যায় অবিচার করতো আজ একই কায়দায় বিদেশী কোম্পানীগুলো তাদের সাথে অবিচার করছে। কোটি কোটি টাকা তারা এদেশ থেকে নিয়ে যাচ্ছে। তারা এসব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে এই কর্মসুচি। এসময় সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি। অনশনে চাষীরা দেশীয় তামাক শিল্প রক্ষায় বিভিন্ন শ্লোগান দেন। দাবি পুরণ না হলে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন তারা।
অনশনে রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার শতাধিক দেশীয় তামাক চাষীরা অংশগ্রহণ করেন।
পরে রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা আন্দোলনকারীদের স্যালাইন ও সরবত খাইয়ে দিয়ে অনশন কর্মসুচি ভাঙেন।