রংপুরে বিবাদে ঘরছাড়া-নির্জন বাগানে সন্তান প্রসব
রিয়াজুল হক সাগর/রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার কৃষক হরিশ চন্দ্রের (৩৭) সঙ্গে তাঁর সন্তান সম্ভবা স্ত্রী পানোবালা রায়ের (৩৩) এর ঝগড়া হয়। অভিমান করে বাড়ি ছেড়ে বের হয়ে দুই কিলোমিটার দূরে একটি শিম বাগানে আশ্রয় নেন পানোবালা।
এরপর প্রসব ব্যথার চিৎকার করতে থাকেন তিনি। চিৎকার শুনে পাশের মাঠ থেকে লোকজন ছুটে এসে দেখেন, সন্তান প্রসব করেছেন সে।
আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের আমরুলবাড়ি বটতলী গ্রামের বাদিয়ারকুড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তার স্বামীর বাড়ি একই ইউনিয়নের হিন্দুপাড়া গ্রামে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বটতলী গ্রামের আবদুল হাকিম বলেন, সকালে এক নারীকে আল ধরে হেঁটে চিকলি নদের ধারের শিম বাগানের ভেতরে ঢুকতে দেখি। কিছুক্ষণ পর ওই বাগানের ভেতর থেকে চিৎকার শুনতে পাই। এরপর পাশের মাঠে কাজ করা দুই শ্রমিককে সঙ্গে নিয়ে বাগানের ভেতরে গিয়ে দেখি, ওই নারী ছেলে সন্তান প্রসব করেছেন।
তিনি আরও বলেন, এ সময় পাশের গ্রামে খবর দিলে মোহসিনা বেগমসহ দুই-তিনজন নারী ছুটে এসে তাঁকে সহযোগিতা করেন। পরে আমরা হিন্দুপাড়া গ্রামে তাঁর স্বামীর বাড়িতে খবর দিই। বিষয়টি লোকমুখে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার পর উৎসুক লোকজন মা ও নবজাতককে দেখতে নদের ধারে ভিড় জমান। বেলা একটার দিকে ওই নারীর স্বামী এসে তাঁর স্ত্রী ও নবজাতককে বাড়িতে নিয়ে যান।
জানতে চাইলে মোহসিনা বেগম বলেন, ঘটনা শুনে একটি ব্লেড নিয়ে ছুটে ওই শিম বাগানে যাই। ততক্ষণে পানোবালা সেখানে সন্তান প্রসব করেছেন। পরে সাহস নিয়ে ব্লেড দিয়ে ওই নবজাতক সন্তানের নাড়ি কেটে দিই।
পানোবালার স্বামী হরিশ চন্দ্র বলেন, জমি থেকে আলু তোলা নিয়ে আজ সকালে পানোবালার সঙ্গে আমার সামান্য কথা কাটাকাটি হয়। এরপর আমি কাজে চলে যাই। কখন যে সে অভিমান করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছে টের পাইনি। দুপুরের পর লোকমুখে খবর পেয়ে শিম বাগানে ছুটে গিয়ে স্ত্রী সন্তানকে বাড়িতে নিয়ে এসেছি।
হরিশ চন্দ্র আরও বলেন, বর্তমানে স্ত্রী ও সন্তান সুস্থ রয়েছে। যাঁরা আমার স্ত্রীকে ওই কঠিন সময়ে সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।
পানোবালা বলেন, মাথা ঠিক ছিল না। রাগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। নদের ধারের নির্জন ওই শিম বাগানের ভেতরে ঢোকার পরই পেটে ব্যথা শুরু হয়। নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি। আমাদের জন্য আশীর্বাদ করবেন।