রাজনৈতিক ও ব্যাক্তি জিবনে জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ মিজানুর রহমান
নিজামুল ইসলাম/দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ
রাজনীতিতে সফল, নিবেদিত প্রাণ, সংগ্রামী এক নাম মিজানুর রহমান মানু। ক্রীড়া, সাংবাদিকতায়সহ সমাজ সংস্কারমূলক সকল কর্মকান্ডে যার অবদান অনস্বীকার্য। এই মহান রাজনৈতিক ব্যাক্তির অনেক অজানা তথ্য দৈনিক আস্থার মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হলো।
আওয়ামী লীগের সাবেক হুইপ মোঃ মিজানুর রহমান মানু ১৯৫৩ সালের ২১শে জুন দিনাজপুর শহরের নিমনগরে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম হবিবর রহমান ও মাতা মরহুমা রশিদা খাতুন। পেশা-সাংবাদিতা ও ব্যবসা। তিনি দু’কন্যা সন্তানের গর্বিত পিতা।
তিনি দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী পৌরসভা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে মাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৭৮ সালে দিনাজপুর কেবিএম কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন এবং ঢাকা বিশবিদ্যালয়ে গ্রন্থাগার বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করেন। একসময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা মানু দিনাজপুর সরকারী কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও সহ সভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন।
সাল ১৯৬৯’ এ পুর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন (মেনন) এর মাধ্যমে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮০ সালে বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক পরবর্তীতে ১৯৮১ সালে সভাপতি হন। ১৯৮০ সালে খুলনা জেলহত্যার প্রতিবাদে জেনারেল জিয়ার সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনে গঠিত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম নেতা ছিলেন।
১৯৮২ সালে সৈরাচার এরশাদের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনে গঠিত ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। ১৯৮৪ সালে ছাত্রে রাজনীতি ছেড়ে ওয়ার্কাস পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন ১৯৮৪-৬ পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক।
সাল ১৯৮৬’ এ ১৫ দলের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৭ সালে তিনি আওয়ামীলীগে যোগ দেন এবং আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়ে তিনি দিনাজপুর -৪ আসন হিসেবে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। ১ম বার নির্বাচিত হন ১৯৮৬ সালের তৃতীয় সংসদে, ২য় বার ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদে, ৩য় বার ১৯৯৬ সালের ১২ ই জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হয়ে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় জাতীয় সংসদের হুইপের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সংসদের হাউজ কমিটির সদস্য, টি এন্ড টি বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কৃষি বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি আওয়ামীলীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রায় ৪ বছর দায়িত্ব পালন করেন এবং ৯৬ সালে সারের দাবিতে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য নিষ্ঠার সাথে কাজ করেন।
বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশ সাইক্লিং ফেডারেসনের দায়িত্ব পালন করেন এবং সাউথ এশিয়ান সাইক্লিং ফেডারেসনের সহ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ক্রীড়া ক্ষেত্রে যোগ্য অবদানের জন্য ২০১০ সালে ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে শ্রেষ্ঠতা সংগঠক জাতীয় পুরস্কার (গোল্ড মেডেল) লাভ করেন। ২০১৬ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ পুরস্কার প্রদান করেন।
সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি ১৯৮২ সালে ঢাকা থেকে প্রকাশিত ” সাপ্তাহিক নতুন কথা” পত্রিকার মাধ্যমে। এর পর তিনি বিভিন্ন জাতীয় এবং স্থানীয় পত্রিকায় কাজ করেছেন। ১৯৯১ সালে তিনি দিনাজপুর শহর থেকে সাপ্তাহিক ‘অতঃপর’ নামে একটি প্রগতিশীল পত্রিকা বের করেন।
তিনি ঢাকায় মোহাম্মাদপুরে বিডিএম হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে জড়িত রয়েছেন। নিজ গ্রাম মহিষমারীতে মোঃ মিজানুর রহমান মানু এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠন চাঁদেরহাট সমিতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অগ্রনি ভুমিকা পালন করেন।
যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জার্মানি, জাপান, কিউবা, পাকিস্তান, ভারত ও ৭ম সাফ গেমসের সেফ দ্যা মিশন (দলপ্রধান) হিসেবে নেপাল সফর করেন। তিনি ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) সম্মেলনে রাশিয়া যান। সেখানে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ইসলামী পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন গঠনে প্রস্তুতি সভায় অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া ওসিএ (অলিম্পিক কাউন্সিল অব এশিয়া) সাধারণ সভার প্রতিনিধি হিসেবে জাপানের আমুরীতে এবং বিশ্ব যুব সমাবেশে কিউবার রাজধানী হাভানায় যোগদান করেন।
তিনি বর্তমানে দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম সদস্য ও দিনাজপুর-৪ আসনের নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন প্রত্যাশী। দিনাজপুর-৪ আসনের সর্বস্তরের জনগণের কাছে দোয়া ও আশীর্বাদ চেয়েছেন।
বি:দ্রঃ তিনি প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারও তৃনমুল রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন।