রায়হানের শরীরে অনেকগুলো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তার দুই তিনটি নখ উপড়ানো ছিলো। ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতেই সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে ‘হেফাজতে’ থাকা রায়হান আহমদের মৃত্যু হয়েছে। কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্তে এ তথ্য মিলেছে। দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য রায়হানের লাশ বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) কবর থেকে তোলা হয়েছে। তদন্ত শেষে জড়িত সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে পিবিআই। এদিকে হত্যায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়েছে।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পুনঃময়নাতদন্তের জন্য বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) সকাল সোয়া ১০টার দিকে নবাবী মসজিদ গোরস্থান থেকে রায়হানের লাশ তোলা হয়। পরে ম্যাজিস্ট্রেট ও পিবিআই কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সুরতহাল শেষে লাশ ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইর পুলিশ সুপার জানান, তদন্তসাপেক্ষে মামলার এজাহারে যাদের নাম আসবে, সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
পিবিআই পুলিশ সুপার মো. খালেদুজ্জামান বলেন, ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে লাশের সুরতাহাল হয়েছে। হাসপাতালে লাশ পাঠানো হয়েছে সেখানে পোস্টমর্টেম করা হয়েছে।
এরমধ্যেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথম ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করেছে সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ। ওই রিপোর্টে উঠে এসেছে ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতেই রায়হানের মৃত্যু হয়েছে।
ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শামসুল ইসলাম বলেন, ভোঁতা অস্ত্রের আঘাত ছিল, সারা শরীরেই ছিল। এ ছাড়া দুটি নখ উপাড়ানো ছিল এবং সারা শরীরেই অনেক ক্ষত ছিল।
রায়হানের বাড়িতে তার আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করেছেন সিএমপি কমিশনার। এ সময় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দেন তিনি।
এদিকে বৃহস্পতিবারও সিলেটের বন্দরবাজারে পুলিশি নির্যাতনে রায়হান হত্যার বিচারের দাবিতে কয়েকশ’ মানুষ স্লোগান দিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন।
১১ অক্টোবর নগরীর বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রীর করা মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই। তবে এখনো এ মামলায় প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবরসহ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।