শিশুদের সবুজের গুরুত্ব বোঝানোর দায়িত্ব পরিবারের। বাবা-মা হিসেবে এ দায়িত্ব প্রথমে আপনার ওপরেই বর্তায়। ঘরে বসেও পরিবেশ রক্ষায় দায়িত্ব নেওয়া সম্ভব। যেমন বাসা থেকে বের হওয়ার সময় লাইট বন্ধ করা, প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি খরচ হতে না দেওয়া- এসবই সহজ সাধারণ শিক্ষা। তাই পরিবেশবান্ধব হওয়া শেখাতে গেলে আপনাকে খুব একটা কাটখড় পোড়াতে হবে না। পরিবেশ-সহায়ক কিছু সাধারণ অভ্যাস আপনার সন্তানকে পরিবেশবান্ধব হতে সাহায্য করবে।
প্লাস্টিক পরিবেশের প্রধান শত্রু। সুতরাং যতটা সম্ভব প্লাস্টিক বর্জন করুন। চেষ্টা করুন কাঠের বা কাপড়ের খেলনা দিতে। প্লাস্টিকের খেলনা যে শুধু পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর তা-ই নয়, আপনার শিশুর স্বাস্থ্যের পক্ষেও ভালো নয়। প্লাস্টিকে রয়েছে বিসফেনল নামের পদার্থ যা শিশুর শরীরে প্রবেশ করলে তার শারীরিক বিকাশে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাই খেলনা কেনার সময় পরিবেশ-সহায়ক বুঝে কিনুন।
কোনো ফলের খোসা বা চিপসের প্যাকেটের গন্তব্য রাস্তা নয়। নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে এসব ফেলার অভ্যাস করান শিশুকে। ছোট থেকেই এসব শেখানো দরকার। এতে যে শুধু ওর পরিবেশের প্রতি দায়িত্ববোধ গড়ে উঠবে তা-ই নয়, সন্তান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হতেও শিখবে।
রিসাইক্লিং হচ্ছে ব্যবহার করা জিনিসপত্র ফেলে না দিয়ে তা পুনরায় ব্যবহারের প্রচেষ্টা। পুরোনো বোতল, খবরের কাগজ বা জামাকাপড় দিয়ে নানা রকম হাতের কাজ শেখাতে পারেন। ইন্টারনেটে এমন অনেক সাইট রয়েছে যেখানে পুরোনো জিনিস থেকে নতুন জিনিস বানানো শেখানো হয়।
অপচয় না করার শিক্ষা দিন
ঘর থেকে বের হওয়ার সময় বাতি-পাখার সুইচ নেভাতে শেখান। ব্রাশ করার সময় পানির কল খুলে রেখে যেন পানির অপচয় না করে সেই শিক্ষা দিন। কোনো খাবারের পুরোটা শেষ করতে শেখান।
গাছ রোপণে উৎসাহ দিন
ছোট থেকেই সন্তানকে গাছ লাগাতে উৎসাহ দিন। গাছের বীজ কিনে বীজ থেকে গাছ হওয়া পর্যন্ত তা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ওকে দিন। বাসায় বাগান বা ইনডোর প্লান্টস থাকলে সন্তানকে তার যত্ন নিতে শেখান। এতে পরিবেশবান্ধব শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে ওর অবসরের সদ্ব্যব্যবহারও হবে।
শিশুকে পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীল করে তোলার জন্য খুব বেশি আয়োজনের প্রয়োজন নেই। তবে শুধু সন্তানকে নির্দেশ দিলেই চলবে না, আপনাকেও এই ধরনের ছোট ছোট বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে। আপনাকে দেখেই আপনার সন্তান শিখবে।