সাইবার নিরাপত্তায় দেশের ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা বাস্তবায়নে অনেকটাই উদাসীন বলে মনে করেন প্রযুক্তিখাতের কর্মকর্তারা। তাদের মতে, অনলাইন ব্যাংকিং বৃদ্ধি পাওয়ায় সাইবার নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে দেশের আর্থিক অত্যন্ত ঝুঁকির মুখে পড়বে। রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে বলা হয়, প্রযুক্তিগত ঝুঁকি মোকাবিলা করতে না পারলে আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং থেকেও বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা আছে।
করোনা মহামারিতে যখন তখন অর্থ উত্তোলন ও কেনাকাটায় কার্ডের ব্যবহার আরো বেড়েছে। তখন উত্তর কোরিয়া ভিত্তিক একদল হ্যাকারের সাইবার হামলার আশঙ্কায় ২৭ আগস্ট সতর্কতা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারপর থেকেই বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথ রাত ১১ টা থেকে সকাল ৭ টা পর্যন্ত বন্ধ থাকছে। কিন্তু আর্থিকখাতের প্রযুক্তির নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বলছেন বুথ বন্ধ রাখা গ্রাহকের ভোগান্তি, টেকসই কোনো সমাধান নয়।
তাদের মতে, সাইবার নিরাপত্তায় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনাগুলোর বাস্তবায়ন জরুরি। চার বছর আগে জারি করা প্রজ্ঞাপনের মধ্যে ছিলো- সাইবার নিরাপত্তা গভর্নেন্স ব্যবস্থা গড়ে তোলা, ঝুঁকি মূল্যায়ন, আপদকালীন ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম প্রণয়ন, সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে তথ্য নিরাপত্তা কেন্দ্র স্থাপনসহ মোট দশটি নির্দেশনা। কিন্তু এসব বিষয়ে ব্যাংকগুলোর মধ্যে একরকম উদাসীনতা আছে বলে মন্তব্য করেন ব্যাকডোর প্রাইভেট লিমিটেডের সিইও এম আবুল কালাম আজাদ। সেইসাথে ব্যাংকের প্রযুক্তিখাতের কর্মীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের অভাবের বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি।
২০১৯ সালে বাংলাদেশে বিক্রি ৮ হাজার কোটি সিগারেট!
এটিএম বুথের ম্যালওয়ার ও অনলাইন ব্যাংকিং এর নিরাপত্তা নিয়ে আয়োজিত সেমিনারে ব্যাকডোরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভির হাসান জোহা বলেন, ক্রমবর্ধমাণ ঝুঁকি মোকাবিলায় ব্যাংকগুলোর প্রযুক্তিখাতে আরো বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে অত্যন্ত ঝুঁকিতে পড়তে পারে দেশের আর্থিক খাত। সেইসাথে আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং থেকেও বিচ্ছিন্নতার আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। তারমতে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদকে প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর যুক্তি তুলে ধরতে হবে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে।
তিনি আরও জানান, দেশের ব্যাংকখাতে ঘটে যাওয়া ছোট বড় হ্যাকিং এ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানেরও কেউ না কেউ জড়িত থাকার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
বাংলাদেশে হ্যাকিং একটি অপরাধ এবং এর সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছর কারাদন্ড বা ১ কোটি টাকা অর্থদন্ড। দ্বিতীয় বার একই অপরাধের শাস্তি হবে যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা পাঁচকোটি টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড।