স্বস্তি মিলবে সাইবার নিরাপত্তা আইনে!?
স্টাফ রিপোর্টারঃ
কিছু সংশোধন এনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ করার সরকারি উদ্যোগেও স্বস্তি দেখছেন না আইনজীবীরা। সাংবাদিক নেতারা বলছেন, অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ করে আইনটি করলে বিতর্ক এড়ানো যেতো। তারা বলছেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা না গেলে এমন সংশোধন কাজে আসবে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন আইনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা কতটা নিশ্চিত হবে তাই এখন দেখার বিষয়।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ সংশোধনের দাবি উঠে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংগঠন থেকে। এ নিয়ে আন্দোলনও হয়। নির্বাচন সামনে রেখে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন প্রতিনিধিরা ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশ সফরের সময় এই আইন নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানান।
এরমধ্যেই বিতর্কিত এই আইনটি পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আগের আইনটিকে প্রতিস্থাপন করে এবার করা হচ্ছে সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩। গত সোমবার আইনটির নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।
বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোঃ মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ সালে অনুমোদনের পর পাঁচ বছরে আমাদের অভিজ্ঞতা হয়েছে। অভিজ্ঞতার পাশাপাশি সারাবিশ্বে আইসিটি সংক্রান্ত বিষয় ছিল। সেটির কিন্তু অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আইসিটি সংক্রান্ত বিশ্বের যে ধরন, তা বেশ পরিবর্তন এসেছে। সে সমস্ত কিছুকে বিবেচনায় রেখে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এ আইন কার্যকর করার সাথে সাথে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত হয়ে যাবে।
আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, এ আইনের আরও ব্যবহারিক ত্রুটি ও নিপীড়নমূলক চরিত্র নিয়ে তাদের শঙ্কা রয়েই গেছে। অজামিনযোগ্য ধারাগুলোকে জামিনযোগ্য করায় হয়তো বা কিছুটা জামিন হওয়ার সম্ভাবনাটুকু হয়তো তৈরি হবে। কিন্তু এ আইনের আরো ব্যবহারিক যে ত্রুটি ও নিপীড়নমূলক যে চরিত্র সেটার আসলে বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হবে বলে আমি মনে করি না।
আইনের খসড়া হাতে পাওয়ার পর এ নিয়ে মন্তব্য করতে চান সাংবাদিক নেতা ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবল। তবে সংশোধনে উদ্যোগের জন্য তিনি সরকারকে ধন্যবাদ জানান। আমি সাংবাদিক সমাজের পক্ষ থেকে অনুরোধ করবো যে এই আইনের খসড়াটি নিয়ে স্ট্রেকহোল্ডারদের সাথে আরো একটু আলোচনা করে নিতে হবে। আলোচনা না করলে আবার যদি ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের মত জটিলতা থাকে, সেই সাংবাদিকরা যদি বিপদগ্রস্থ হয়, মত প্রকাশে স্বাধীনতার জন্য নাগরিক সমাজ যদি বিপদগ্রস্থ হয় তাহলে কিন্তু আবার সেই সমালোচনা আমাদের করতে হবে।
আইনজীবী মনজিল মোরশেদ বলছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সবারই প্রবল আপত্তি ছিলো। আন্তর্জাতিকভাবে চাপ আছে, সামনে নির্বাচন আছে, সরকার তড়িঘড়ি করে আইনটি সংশোধনের করছে। এটি কি হবে, তা সময়ই বলবে।