হিলিতে বোরো ধানের বাম্পার ফল, নেই কৃষকের মুখে হাসি
জয়নাল আবেদীন জয়/হিলি প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের হিলিতে বোরো ধান কাটার ধুম পড়েছে। শ্রমিক বা আধুনিক যন্ত্র দিয়ে অনেকটা উৎসব আমেজের মধ্য দিয়ে চলছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ। ফলনও ভালো হয়েছে। তবে উৎপাদন খরচের তুলনায় দাম কম হওয়ায় হতাশ কৃষকরা। সার, বিদ্যুত, কৃষি শ্রমিকের মজুরিসহ সবধরণের কৃষি পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদন খরচও বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই উৎপাদন খরচ কিভাবে পুষিয়ে নিবে তা নিয়ে হতাশ কৃষকরা। সেই সাথে আগামী ১১ মে থেকে ঘুর্ণিঝড় মোচা ও বৃষ্টির খবরে হতাশা বাড়িয়েছে কয়েকগুন।
উপজেলার মনশাপুর গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম জানান, তার নিজস্ব ২ বিঘা জমির সাথে আরোও ৩ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে ৫ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। এতে বিঘা প্রতি খরচ পড়েছে ১৪ হাজার টাকা। ফলন হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ মাণ। মণ প্রতি ধান বিক্রি হচ্ছে ১১শ থেকে ১১শ ৫০ টাকায়। নিজের জমিতে কিছুটা লাভবান হলেও বর্গা নেওয়া জমিতে দামের চেয়ে খরচ হয়েছে বেশি। এতে লোকসান গুনতে হবে।
এদিকে জাংগই গ্রামের কৃষক আকরাম আলী জানান, গত বারে বোরো ধান ১২শ’ থেকে ১৩শ’ টাকায় মণ প্রতি বিক্রি হয়েছে। সার, বিদ্যুৎ ও ডিজেলের দাম অনেক বেশি। ধানের দাম গত বারের থেকে অন্তত ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা বেশি হওয়া দরকার।
বৈগ্রাম গ্রামের কৃষক মোজাহার আলী বলেন, ৭ বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগিয়েছি। আর মাত্র কয়েকদিন পর ধান কাটার উপযোগী হবে। উৎপাদন খরচের তুলনায় ধানের দাম অনেক কম। ছেলে-মেয়ের পড়ালেখা ও সংসার চালানো নিয়ে বেশ চিন্তায় আছি। এদিকে আবার ঝড় বৃষ্টির সম্ভবনা থাকায় কৃষি অফিস তাড়াতাড়ি ধান কাটতে বলছে।
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আরজেনা বেগম জানান, চলতি বোরো মৌসুমে ৭ হাজার ১২০ হেক্টর লক্ষমাত্রার বিপরীতে ৭ হাজার ৫৯৫ হোক্টার জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪৫ ভাগ ধান কর্তন করা হয়েছে। আগামী ১১ মে থেকে ঘুর্ণিঝড় মোচা আঘাত হানতে পারে। তাই ৮০ শতাংশ পাকা ধান দ্রুত কাটার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।