DoinikAstha Epaper Version
ঢাকারবিবার ২২শে ডিসেম্বর ২০২৪
ঢাকারবিবার ২২শে ডিসেম্বর ২০২৪

আজকের সর্বশেষ সবখবর

হৃদয় বাহিনীর কাউন্টারে দেলোয়ার বাহিনীর উত্থান

News Editor
অক্টোবর ১২, ২০২০ ১০:৪৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় বেগমগঞ্জের একলাশপুর এখন দেশব্যাপী আলোচিত-সমালোচিত। মূলত এই জনপদের পাড়ায় পাড়ায় একেকটি বাহিনীর কাউন্টারে নতুন আরেকটি বাহিনীর উত্থান ঘটে। তেমনই একটি হৃদয় বাহিনী। যারা এখনো প্রশাসনের ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকায় সাধারণ জনগণ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। অন্যদিকে এই হৃদয় বাহিনীর কাউন্টারে দেলোয়ার বাহিনীর উত্থান ঘটে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, নোয়াখালী জেলা শহরের মাইজদী ও প্রধান বাণিজ্যিক নগরী চৌমুহনীর মাঝখানে প্রধান সংলগ্ন হওয়ায় একলাশপুর রাজনৈতিক প্রভাব ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বিস্তারের অন্যতম রুট হয়ে ওঠে। আবার এই অঞ্চলটি সুধারাম ও বেগমগঞ্জ থানার সীমান্তবর্তী হওয়ায় অপরাধীরা দ্রুত পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

আরো পড়ুন: বিএনপি মহাসচিব বাসায় ডিম নিক্ষেপের ঘটনায় ১৩ নেতা বহিষ্কার

এসব সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একলাশপুর ইউপির প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায় নানা বাহিনীর কর্মকাণ্ড চলছে। বেগমগঞ্জ উপজেলার আলোচিত সম্রাট বাহিনীর অনুসারী হৃদয়। একপর্যায়ে সে নিজেই তার এলাকায় হৃদয় বাহিনী গড়ে তোলে।

হৃদয় বাহিনীর প্রধান হৃদয় ও তার সদস্যরা একলাশপুর বাজারের পূর্ব পাশের ভিআইপি সড়কে নিয়মিত পথচারীদের ওপর হামলা চালিয়ে মোবাইল, অর্থসহ জিনিসপত্র লুটপাট করে নেয়। বাধা দিলে মারধর ও নানা নির্যাতন চালায়।

ওই এলাকায় কেউ নতুন বাড়ি করতে গেলে, জমি ক্রয়-বিক্রয় করলে, কোনো আচার-অনুষ্ঠান করলে হৃদয় বাহিনীকে টাকা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে চলে অমানসিক নির্যাতন ও মারধর। ভয়ে এতদিন কেউ মুখ না খুললেও এখন অনেকেই প্রতিবাদে সরব হয়ে উঠছেন।

হৃদয় বাহিনীর কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ এমন ভুক্তভোগী বলেছেন, তারা ওই অঞ্চলের অনেক বাড়িতে হামলা চালিয়ে অনেকের মূল্যবান মালামাল লুট করে। কেউ কেউ থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ কার্যকরী কোনো ভূমিকা না নেয়ায় হৃদয় বাহিনী দিন দিন আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে।

সম্প্রতি দেশব্যাপী আলোচিত সমালোচিত দেলোয়ার বাহিনী দ্বারা একলাশপুরের এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া ঘটনার পর বেগমগঞ্জের একলাশপুরের নানা বাহিনীর কথা আলোচনায় ওঠে আসে।

দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ারের মা আক্ষেপ করে বলেন, আমার ছেলে এক সময় সিএনজি অটোরিকশা চালাতো। একই এলাকার হওয়ায় হৃদয় বাহিনী আমার ছেলের কাছে বিভিন্ন সময় বিনা কারণে টাকা চাইতো। টাকা না দিলে হৃদয় ও তার বাহিনীর সদস্যরা দেলোয়ারকে মারধর করতো। এতে একপর্যায়ে সে আত্মরক্ষার্থে ও হৃদয়কে টেক্কা দিতেই নিজেই একটা বাহিনী গড়ে তোলে।

স্থানীয় ভুক্তভোগীরা অভিযোগ বলেন, পুলিশ ও প্রশাসন যদি সময়মতো এসব সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিতো, তাহলে আজ এসব বাহিনীর উত্থান ঘটতো না। সাধারণ মানুষের জীবনও এতো দুর্বিষহ হয়ে ওঠতো না। তারা দাবি করেন, এখনো যদি প্রশাসন এসব বাহিনীর লাগাম টেনে ধরে নির্মূলের ব্যবস্থা নেয় সাধারণ মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে।

আরো পড়ুন: সততার সঙ্গে জনগণের প্রয়োজন মেটানোই সুশাসনের ভিত্তি: রাষ্ট্রপতি

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি হারুনুর রশিদ চৌধুরী জানান, হৃদয়কে আমরা অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছি। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠিয়েছি। আমরা আমাদের কাজ করছি, বাকিটা আদালতের বিষয়। তার নামে থানায় কয়েকটি চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। সব মামলার বিষয়ে আমাদের যথাযথ তদন্ত চলছে।

প্রসঙ্গত, ঘরে ঢুকে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন এবং ঘটনার সময় মুঠোফোনে ধারণ করা একটি ভিডিও গত রোববার (৪ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওইদিন রাতে নির্যাতনের শিকার ওই নারীকে খুঁজে বের করে নিরাপত্তা হেফাজতে নেয় পুলিশ। ওই রাতে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন।

দুই মামলার এজাহারে দেলোয়ার বাহিনীর সদস্যসহ নয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়। দুই মামলায় এ পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এরমধ্যে এজাহারভুক্ত ৬ জন এবং তদন্তে যুক্ত করা হয়েছে ৫ জনকে।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৫:১৪
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৫:১৯
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:১১
  • ১১:৫৯
  • ৩:৪০
  • ৫:১৯
  • ৬:৩৮
  • ৬:৩৬