আমেরিকার ইতিহাসে সব থেকে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট বাইডেন।রাজনৈতিক উত্থান একেই বলে৷ আমেরিকার রাজনীতির সঙ্গে কয়েক দশক ধরে যুক্ত জো বাইডেন৷ প্রথমে সেনেটার এবং পরবর্তীতে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন৷ এবার ট্রাম্পকে হারিয়ে তিনি নির্বাচিত হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে৷ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়লেন বাইডেন, কারণ তিনিই হলেন প্রবীণতম মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷ এর আগে আমেরিকার সব থেকে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট ছিলেন ট্রাম্প৷ শপথ নেওয়ার সময় তাঁর বয়স ছিল ৭০৷
প্রেসিডেন্টের লড়াই শুরু থেকেই বাইডেন জানান তিনি কোনও অন্ধকারের পথ অনুসরণ করবেন না৷ দেশকে আলোর দিশা দেখানোর জন্যই লড়বেন তিনি ও তাঁর দল! ১৯৭২ থেকে মাত্র ২৯ বছর বয়সে দেলাওয়ারের মার্কিন সেনেটর হিসেবে নির্বাচিত হয়ে, নিজের রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন বাইডেন৷ ৩৬ বছরের তাঁর সেনেটর জীবন৷ পরে ২০০৯ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ওবামা আমলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি৷ ওবামার অত্যন্ত বিশ্বস্ত সৈনিক ছিলেন জো৷ বকলমে সামলেছেন বিদেশ নীতি থেকে অভ্যন্তরীন সমস্যা৷ যার মধ্যে অন্যতম ছিল মার্কিন বন্দুক নীতি থেকে অর্থনৈতিক বিষয়৷
প্রচারে বাইডেনের বিরুদ্ধে নানা কুরুচিকর মন্তব্য করেন ট্রাম্প৷ তাঁকে ডেমক্রেটদের হাতের পুতুল বলতেও ছাড়ননি বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প৷ অন্যদিকে করোনাকালে এই নির্বাচনে ট্রাম্পের ব্যার্থতাকে তুলে ধরেন বাইডেন৷ করোনা আক্রান্ত হয়ে ট্রাম্প মাত্র ৩ দিন হাসপাতালে থেকে ফিরে আসেন হোয়াইট হাউজ৷ তার কিছুদিনের মধ্যেই তিনি ফের বেরিয়ে পড়েন প্রচার সভায়৷ ট্রাম্পরে এই ধরণের যুক্তিহীন ব্যবহারকে প্রচারের হাতিয়ার করেন বাইডেন৷
নির্বাচনে হেরে বিয়ে খেতে গেলেন ট্রাম্প
জো বাইডেনের জন্ম ১৯৪২ সালের ২০ নভেম্বর পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের স্ক্রানটনে। চার ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় বাইডেন বেড়ে ওঠেন স্ক্রানটন, নিউ ক্যাসল কাউন্টি ও ডেলাওয়ারের মধ্যেই। বাবা জোসেফ রবিনেট বাইডেন সিনিয়র আর আইরিশ বংশোদ্ভূত মা ক্যাথরিন ইউজেনিয়া ফিনেগান। ডেলাওয়ার ইউনিভার্সিটিতে ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়াশোনা করেন বাইডেন। পরে তিনি আইনে ডিগ্রি নেন। ১৯৬৬ সালে সিরাকিউজ ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় বাইডেন নিলিয়া হান্টারকে বিয়ে করেন। ১৯৭২ সালে বড় দিনের আগে ক্রিসমাস ট্রি কিনতে গিয়ে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিলিয়া মারা যায়। তার মেয়ে নাওমিও দুর্ঘটনায় মারা যান। এর পর ভেঙে পড়েছিলেন বাইডেন। কিভাবে কি করবেন জানতেন না তিনি। তবে ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। একজন যোদ্ধা তো এমনই হয়। জীবন যুদ্ধেও সে কখনও হারে না।