জেলা প্রতিনিধিঃ আলমডাঙ্গা রেলস্টেশন-সংলগ্ন রেলওয়ের জমিতে এসকেভেটর দিয়ে গভীর পুকুর খনন করা হচ্ছে। এতে করে হুমকির মুখে পড়েছে আলমডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন। রাত-দিন ধরে ওই পুকুর খনন করছেন পুকুরের জমি অবৈধভাবে সাব-লিজ গ্রহণকারী ফরহাদ।
জানা যায়, আলমডাঙ্গা রেলস্টেশনের পিছন দিক দিয়ে বাইপাস সড়ক। এ বাইপাস সড়ক নির্মাণের সময় আলমডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের পাশের জমি কাটা হয়। পরে রেলওয়ের ওই নীচু জমি লিজ নিয়ে অনেকে মাছ চাষ শুরু করেন। বর্তমানে রেলওয়ের ওই নিচু জমি লিজ গ্রহণ করেছেন পাকশী বাঘইলের পান্না হোসেন। পরে তাঁর নিকট থেকে সাব লিজ নিয়েছেন আলমডাঙ্গার ফরহাদ হোসেন।
যদিও সাব লিজ দেওয়া অবৈধ। গত কয়েক দিন ধরে সাব লিজ গ্রহণকারী ফরহাদ এসকেভেটর মেশিন দিয়ে স্টেশনের পেছনে গভীর পুকুর খনন করছেন। এসকেভেটর মেশিন দিয়ে গভীর পুকুর খননের ফলে রেলপথের মাটি ভেঙে পড়ছে। সঙ্গত কারণে বর্ষাকালে এ ভাঙন ভয়াবহ হয়ে উঠবে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে আলমডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন ও সংশ্লিষ্ট রেলপথ।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘যত খুশি ছবি তোলেন, নিউজ করেন অসুবিধা নেই। আমার লিজের কাগজপত্র আছে। আমি পুকুর কাটি আর গাঙ কাটি, তাতে মানুষের কী?’
রেলওয়ের বিশিষ্ট ঠিকাদার জাহিদ হোসেন রেণ্টু বলেন, এসকেভেটর দিয়ে পুকুর খনন কিংবা ভূমির রূপ পরিবর্তনের সুযোগ নেই লিজ গ্রহণকারীর।
বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা (পশ্চিম) ড. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘সাব লিজের কোনো সুযোগ নেই। তা ছাড়া রেলওয়ের জমি লিজ নিয়ে নতুন করে পুকুর খনন কিংবা পূনর্খননেরও সুযোগ নেই। এ সব অনিয়মের ফলে ওই লিজ বাতিল করা হবে।’
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা নুরুজ্জামান বলেন, ‘আমি দ্রুত প্রতিনিধি পাঠাচ্ছি সরেজমিন গিয়ে পরিদর্শন করতে। অভিযোগ সত্য হলে লিজ বাতিল করা হবে।’
আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পুলক কুমার মণ্ডল বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর খননকাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পুকুর খনন কিংবা পূনর্খনন করা বিষয়ে রেলওয়ের অনুমতিপত্র থাকলে তা দেখাতে বলা হয়েছে।’
আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. সালমুন আহমেদ ডন বলেন, ‘উপমহাদেশের প্রথম রেললাইনের প্রথম স্টেশনগুলোর একটি আলমডাঙ্গা। এমনকি, উপমহাদেশের একমাত্র দ্বিতল স্টেশন। ফলে এটি আমাদের তথা বাংলাদেশ রেলওয়ের গর্ব।
এ গর্ব ধ্বংস হবে স্বার্থান্বেষী কোনো ব্যক্তির কারণে এটা মেনে নেওয়া যায় না। বৃহত্তর জনস্বার্থে এ লিজ বাতিলের দাবি আলমডাঙ্গাবাসীর।’