চিরিরবন্দরে চলাচলের রাস্তা বন্ধ, বিপাকে ৪৯ পরিবার
নিজামুল ইসলাম/দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে সাধারণ মানুষের চলাচলের রাস্তায় বেড়া দেওয়ায় চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছে ৪৯ পরিবারের লোকজন। এ বিষয়ে রবিবার (২৮ অক্টোবর) সকালে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও রাস্তা খুলে দেয়ার পদক্ষেপ নিতে প্রায় দের শতাধিক এলাকাবাসীর স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ পত্র চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম শরিফুল হক বরাবর দাখিল করেন অবরুদ্ধ এলকাবাসী।
এর আগে শনিবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে ভুক্তভোগী অসহায় পরিবার গুলো স্থানীয় দবিরের বাজারে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন।
উপজেলার ৮নং সাইতাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম সাইতাড়া গ্রামের দবিরের বাজার সংলগ্ন দরবেশ পাড়ায় চলাচলের রাস্তার মাঝখান দিয়ে বেড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একই এলাকার কিনামদ্দীন ও তার ছেলে মাদ্রাসা শিক্ষক আকতার হোসেন এর বিরুদ্ধে।
কিনামদ্দীন পেশায় একজন কৃষক ও তার ছেলে আকতার পূর্বসাইতাড়া সূখীপির দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সূত্রে জানা যায়, গত ৫০ বছর যাবৎ একটি রাস্তায় যাতায়াত করতো এলাকাবাসী। অভিযুক্ত কিনামদ্দীন ও তার ছেলে আকতার হোসেন গত ৫ বছর আগে রাস্তাটি বন্ধ করে পাকা বাড়ী নির্মানের কাজ শুরু করলে এলাকাবাসী বাধা দেয়।
পরবর্তীতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড সদস্য সদস্যাগনসহ এলাকার প্রধানরা বসে বিষয়টি আপোষ মিমাংসা করেন। সেই বৈঠকে অভিযুক্ত বাবা ও ছেলে বিকল্প রাস্তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং সেই মোতাবেক এলাকাবাসী ও ইউনিয়ন পরিষদের ৪০ দিনের কর্মসূচীর লোকজন দিয়ে ইউপি সদস্য মনিন্দ্র নাথ এর উপস্থিতিতে ১০ দিনে বিকল্প রাস্তাটি নির্মান করা হয়। যা গত ৫ বছর যাবত ঐ এলাকার মানুষ সাচ্ছন্দ্যে যাওয়া আসা করতো।
কিন্তু হটাৎ করে গত ২৪ শে অক্টোবর মঙ্গলবার বাঁশের বেড়া ও গাছ লাগিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেয় অভিযুক্ত কিনামদ্দীন ও তার ছেলে মাদ্রাসা শিক্ষক আকতার হোসেন। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী রাস্তা বন্ধ করার বিষয় জানতে চাইলে তাদেরকে মারধরসহ হামলা মামলার হুমকি প্রদান করেন।
ফলে গত পাচ দিন যাবত ৪৯ টি পরিবারের মধ্যে কমপক্ষে ৩০টি পরিবারের দেড় শতাধিক মানুষের চলাচল একবারেই বন্ধ। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
এ বিষয়ে প্রতিবেশী দবিরুল ইসলাম বলেন, প্রায় ৫০ বছর ধরে এলাকার লোকজন এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। হঠাৎ দেখি কিনামদ্দীন ও তার ছেলে রাস্তার মাঝে বেড়া দিয়েছে। এটা অমানবিক কাজ।
একই এলাকার মসজিদের ইমাম আলতাফ হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন দিয়ে শান্তিপূর্নভাবে চলাচল করা রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়ায় অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে ৮ নং সাইতাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তোষ কুমার রায় এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাস্তা বন্ধের বিষয়টি জানার পর ঐ এলাকার ইউপি সদস্য রাবিন্দ্র নাথ, ইউপি সদস্যাসহ গ্রাম পুলিশকে পাঠিয়ে দেই। কিন্তু কিনামদ্দীন ও তার ছেলে আকতার হোসেন বিষয়টি আমলে নেয়নি।
অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, রাস্তা সংক্রান্ত বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যাবস্থা গ্রহনে কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কিনামদ্দীন ও তার ছেলে আকতার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তার বাড়ীতে গেলে কেউ দরজা না খুলে বাড়ীতে নেই বলে ভিতর থেকে জানানো হয়। পরে মুঠোফোনে আকতার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখন আমার সময় নেই পরে কথা বলবো বলে ফোন কেটে দেয়।