“হাইকোর্টের রায়” ডক্টর ইউনূসের আবেদন খারিজ, ১২ কোটি টাকা কর দিতে হবে।
স্টাফ রিপোর্টারঃ
নিজ নামে প্রতিষ্ঠিত তিনটি ট্রাস্টে দান করা অর্থের বিপরীতে আয়কর কর্তৃপক্ষের ‘দানকর’ আরোপের বিরুদ্ধে নোবেলজয়ী ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের করা পৃথক তিনটি আবেদন খারিজ করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি সরদার মোঃ রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রায় দেন।
তিনটি ট্রাস্টে তিন করবর্ষে ডক্টর ইউনূসের দেওয়া উপহারের (দান) বিপরীতে কর আরোপ ও কর থেকে তাঁকে অব্যাহতি না দেওয়ার সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে মনে করছে হাইকোর্ট।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, এই রায়ের ফলে ডক্টর ইউনূসকে আরোপিত দানকর দিতে হবে। যার পরিমাণ ১২ কোটি টাকার বেশি হবে।
আদালতে ডক্টর ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুস্তাফিজুর রহমান খান ও আইনজীবী সুমাইয়া ইফরিত বিনতে আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ফারজানা রহমান।
ডক্টর ইউনূসের আইনজীবী মুস্তাফিজুর রহমান খান প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের রায়ের প্রত্যায়িত অনুলিপি পাওয়া সাপেক্ষে আপিল করা কিংবা দানের বিপরীতে আরোপিত কর পরিশোধ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আইনজীবীদের তথ্যমতে, প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস ট্রাস্ট, ইউনূস ফ্যামিলি ট্রাস্ট এবং ইউনূস সেন্টার ট্রাস্টে ডক্টর ইউনূস ৭৬ কোটি ৭৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা দান করেন। পরে ডেপুটি কমিশনার অব ট্যাক্সেস (ডিসিটি) মূল্যায়ন করে ২০১১–১২, ২০১২–১৩ এবং ২০১৩–১৪ করবর্ষের জন্য ওই অর্থের ওপর ‘দানকর’ হিসেবে ১৫ কোটি ৩৯ লাখ ১৬ হাজার ৮শ টাকা আরোপ করেন। ‘দানকর’ আরোপের বিরুদ্ধে ডক্টর ইউনূস কমিশনার অব ট্যাক্সেসে আপিল করে বিফল হলে ডিসিটির সিদ্ধান্ত বহাল থাকে।
কর ট্রাইব্যুনালে আপিল করে বিফল হলে ডক্টর ইউনূস ২০১৫ সালে হাইকোর্টে পৃথক তিনটি আবেদন করেন ডক্টর ইউনূস। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ২ এপ্রিল হাইকোর্ট রুল দিয়ে দানকর আদায়ে নোটিশের কার্যক্রম অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য স্থগিত করেন।
এরপর রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সম্প্রতি রাষ্ট্রপক্ষ এ–সংক্রান্ত রুল শুনানির জন্য উদ্যোগ নেয়। আবেদনগুলো ১৬ মে কার্যতালিকায় উঠলে সেদিন আদালত শুনানির জন্য ২৩ মে দিন রাখেন। সেদিন আবেদনগুলোর ওপর শুনানি শেষে আজ রায়ের জন্য দিন ধার্য্য করে এবং আজ সেই রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।