জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়ার ভারতের দাবিতে আপত্তি জানিয়েছে পাকিস্তান। শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ইসলামাবাদ জানায়, স্পর্শকাতর সিদ্ধান্ত গ্রহণে গঠিত কমিটিতে ভারতের মতো ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের কোনো জায়গা নেই।
ওইদিন, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বার্ষিক ভাষণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়ার জন্য জোর দাবি জানান। বলেন, আমাদের আর কতক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কতদিন ভারতকে জাতিসংঘের নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়া থেকে বাইরে রাখা হবে?
গেল সপ্তাহে ভারত সরকার ঘোষণা করে, সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে নয়াদিল্লি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়ার যোগ্যতা রাখে।
জাতিসংঘে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মুনির আকরাম বলেন, এটি তাদের অবাস্তব স্বপ্ন। ভারতের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের স্থানীয় সদস্য হিসেবে কোনো ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকে বিশ্ব চায় না।
তিনি বলেন, পাকিস্তান জাতিসংঘের সংস্কার চায়। কিন্তু তা নিরাপত্তা পরিষদের ৫টি আসনের জায়গায় ৬টি করার মাধ্যমে নয়। ইসলামাবাদ নিরাপত্তা পরিষদে অস্থায়ী সদস্যপদ সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে। আমরা নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্যপদের সংখ্যা বাড়ানোর পক্ষে। ১০ থেকে সেটি ২০/২১ হতে পারে। যাতে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের সবার সমান অংশগ্রণের সুযোগ থাকে।
জাতিসংঘের অন্তত ৩০টি সদস্য রাষ্ট্র নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্যপদ সংখ্যা বাড়ানোর পক্ষে রয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য চীন; যার ভেটো দেয়ার ক্ষমতা আছে; পরিষদের অস্থায়ী সদস্যপদ সংখ্যা বাড়ানোর পক্ষে সমর্থন দিয়েছে। বাকি স্থায়ী সদস্যরা হলো-যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, রাশিয়া এবং ফ্রান্স।
ব্রাজিল, জার্মানি, ভারত এবং জাপান নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হতে চায়। বুধবার ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকা জাতিসংঘের কাছে সংস্কার ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আকরাম বলেন, ইসলামাবাদ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্যপদ সংখ্যা বাড়ানের পক্ষে। এতে বড়, মাঝারি, ছোট দেশ- বিশেষ করে আফ্রিকা, এশিয়া এবং ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোর জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় কথা বলার সুযোগ পাবে। আন্তর্জাতিক ইস্যুতে কথা বলতে না পারায় এসব দেশের নজিরবিহীন অভিযোগ রয়েছে।
স্থায়ী সদস্য অস্থায়ী সদস্যদের মধ্যে এ প্রক্রিয়া ভারসাম্য তৈরি করবে বলেও মত আকরামের। তিনি বলেন, পাকিস্তান ভারতের প্রস্তাবে আপত্তি জানাচ্ছে। কারণ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ সংখ্যা বাড়ানো হলে সাধারণ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অংশগ্রহণের সুযোগ হ্রাস পাবে।
কাশ্মীর সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপে ভেটো দেয়ার জন্য ভারত নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ লাভে ব্যাকুল বলেও মন্তব্য করেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত।