গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ষষ্ঠ বারের মতো বন্যা কবলিত হয়েছে উত্তরের কয়েকটি জেলা। বন্যা ও নদী ভাঙনের কবলে পড়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে এসব জেলার কয়েক লক্ষ মানুষ। নদী ভাঙনে বিলিন হয়ে যাচ্ছে বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি স্থাপনা। সড়ক কালভার্ট ভেঙ্গে বিচ্ছিন্ন গয়ে পড়ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার বাড়ছে বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ।
গাইবান্ধায় আবারও বাঁধ ও সড়ক ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ। রাজশাহীর বাগমারায় ৫০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ধসে গেছে ২০০ বাড়িঘর। নাটোরের সিংড়ায় দুটি বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে,বিলীন হয়েছে বেশকিছু বাড়িঘর।
এদিকে সিরাজগঞ্জে আবারও যমুনার পানি বৃদ্ধিতে আতঙ্কিত চরাঞ্চলের মানুষ। যমুনা ও বাঙ্গালী নদীর পানি বাড়ার ফলে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার সদর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল এবং চরাঞ্চলের রোপা আউশ,মাশকলাই,মরিচ,স্থানীয় জাতের গাঞ্জিয়া ধানসহ ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।
আরও পড়ুনঃ গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধ ভেঙ্গে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত
আবহাওয়া অফিসের রেকর্ড অনুসারে সেপ্টেম্বর মাসে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৩.১ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত সপ্তাহ খানেক ধরে প্রায় প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরে এবং সীমান্তের ওপারে এসময় এভাবে বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তরের নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানা গেছে।
প্রমত্ত মেঘনা আর বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলরাশির দাপটে ভাঙছে নোয়াখালী ও সন্দ্বীপের মাঝামাঝি অবস্থিত উড়িরচরের হাজার হাজার হেক্টর আবাদি জমি ও শত শত বসতবাড়ি। সেখানকার নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের দিন কাটে চরম আতঙ্কে। ভাঙনে ইত্যেমধ্যে এ চরের তিনটি ওয়ার্ডসহ অসংখ্য স্থাপনা উরির চরের মানচিত্র থেকে বিলীন হয়ে গেছে।
উল্লেখ্য,১৯৮৫ ও ১৯৯১ সালে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে এই চরে ব্যাপক ক্ষতি ও প্রাণহানি ঘটে। পরবর্তীতে সিডর,আইলা,মহাসেন,হুদহুদ,নার্গিস,রোয়ানু,আম্ফানসহ বিভিন্ন নামের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে এখানকার মানুষেরা এখনো বেঁচে আছে আসহায়ভাবে।তিন থেকে চারবার বসতঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় নিঃস্ব প্রায় এখানকার মানুষ।