ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার শেখপাড়ার ইউসুফ আলীর মেয়ে উলফাতারা তিন্নী। সদ্য কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স শেষ করে স্বপ্ন দেখছিলেন বিসিএস ক্যাডার হওয়ার। সে স্বপ্ন পূরণ করতে পারলেন না তিন্নি। বৃহস্পতিবার রাতে নিজ ঘরেই আত্মহত্যা করেন তিনি।
স্বজনদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে তিন্নির বড় বোন মিন্নীর সাবেক স্বামী একই গ্রামের জামিরুল ও তার তিন সহযোগী বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। ওই সময় তারা তিন্নীর ঘরে ঢুকে শ্লীলতাহানী করে। এতে লজ্জায় আত্মহত্যা পথ বেছে নেন তিন্নী।
তিন্নীর বড় বোন মিন্নি জানান, কয়েক বছর আগে তার বিয়ে হয় একই গ্রামের কুনুরুদ্দীনের ছেলে জামিরুলের সঙ্গে। কিন্ত স্বামীর পরিবারে বনিবনা না হওয়ায় তাদের বিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে জামিরুল তাদের দুই বোনকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে। কিছুদিন আগে তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে বিষয়টা অবহিত করেন। কিন্ত কোনো ফল আসেনি।
মিন্নি আরো জানান, বৃহস্পতিবার তিন্নী তার এক বান্ধবীর বিয়ের অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়া যান। রাত ৮টার দিকে বাড়ি ফিরে আসেন। সে। রাত ১০টার দিকে জামিরুল ও তার তিন সহযোগী বাড়িতে ঢুকে হামলা-ভাঙচুর চালায়। এরপর রাত ১১টার দিকে দ্বিতীয়বার বাড়িতে এসে সবার মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে নেয় জামিরুল। ওই সময় সহযোগীদের বাইরে রেখে তিন্নীর ঘরে প্রবেশ করে। কিছুক্ষণ পর তিন্নীর কান্নার আওয়াজ মেয়ে ছুটে যান তার মা ও বড় বোন মিন্নি। কিন্তু জামিরুলের সহযোগীদের বাধায় নিচে নেমে আসেন। রাত ১২টার দিকে জামিরুল চলে গেলে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেন তিন্নী।
তিন্নীর খালাতো ভাই মোখলেসুর রহমান জানান, প্রতিবেশীদের সহযোগীতায় তিন্নীকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরো জানান, বিয়ের কয়েক বছর পর বিচ্ছেদ হলেও মিন্নিকে আবারো ফিরিয়ে নিতে চায় জামিরুল। কিন্তু মিন্নি ও তার পরিবার রাজি না হওয়ায় তাদের হয়রানি ও হুমকি দিতে শুরু করে জামিরুল। মিন্নির বাবা মারা যাওয়ার পর হয়রানির মাত্রা আরো বেড়ে যায়। বৃহস্পতিবার রাতে মিন্নির বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর ও তার ছোট বোন তিন্নীর শ্লীলতাহানি করে জামিরুল। এতে লজ্জায় আত্মহত্যা করে তিন্নী।
শৈলকুপা সার্কেলের এএসপি আরিফুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তিন্নীর মৃত্যু রহস্যজনক। ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।