DoinikAstha Epaper Version
ঢাকাশুক্রবার ৩১শে জানুয়ারি ২০২৫
ঢাকাশুক্রবার ৩১শে জানুয়ারি ২০২৫

আজকের সর্বশেষ সবখবর

সর্বত্র বিস্তার লাভ করছে কিয়ামতের ছোট ছোট আলামত

Astha Desk
মার্চ ২৭, ২০২৩ ১১:৩৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সর্বত্র বিস্তার লাভ করছে কিয়ামতের ছোট ছোট আলামত

 

জিয়া হাসান আকাশ/ঢাকা দক্ষিন প্রতিনিধিঃ

কিয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবে তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না। কিয়ামতের বড় বড় আলামত এখনও পরিদৃষ্ট না হলেও ছোট ছোট আলামতগুলো এমনভাবে সর্বত্র বিস্তার লাভ করেছে। যাকে রুখে দাঁড়াবার ক্ষমতা কারোরি নেই।

কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার আগে কিছু নিদর্শন দেখা যাবে। এ প্রসঙ্গে মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,
فَهَلْ يَنظُرُونَ إِلَّا السَّاعَةَ أَن تَأْتِيَهُم بَغْتَةً فَقَدْ جَاء أَشْرَاطُهَا فَأَنَّى لَهُمْ إِذَا جَاءتْهُمْ ذِكْرَاهُمْ

মহানবী (সাঃ) বলেছেন, ‘কিয়ামতের আগে অজ্ঞতা বেড়ে যাবে, ইলম উঠিয়ে নেয়া হবে, মানুষের হৃদয় কঠিন হয়ে যাবে এবং মারামারি, হত্যাযজ্ঞ বেড়ে যাবে।’ (সহিহ বুখারি)।

‘তারা শুধু এই অপেক্ষাই করছে যে, কেয়ামত অকস্মাৎ তাদের কাছে এসে পড়ুক। বস্তুতঃ কেয়ামতের লক্ষণসমূহ তো এসেই পড়েছে। সুতরাং কেয়ামত এসে পড়লে তারা উপদেশ গ্রহণ করবে কেমন করে?’ (সূরা : মুহাম্মাদ, আয়াত : ১৮)।

এটা স্পষ্ট যে, আমরা এখন অতিবাহিত করছি সৃষ্টিজগতের শেষ সময়টায়। পবিত্র আল্লাহতায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, আল্লাহর দয়ার সাগর তাই অসীম। তাই তো তিনি রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছেন নবী ও রাসূলদের। যারা মানুষকে জীবনপথের প্রতিটি মোড় চিনিয়ে দিয়েছেন স্নেহ ও মায়া-মমতার সঙ্গে। তারা দিয়ে গেছেন পথ পাড়ি দেওয়ার নির্দেশনাও। বিশেষ করে শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ)।

কিয়ামত কবে হবে এ প্রশ্নের উত্তর অজানা হলেও সময় প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, কিয়ামতের পূর্বে ঈমান নিয়ে বেঁচে থাকা এতটাই কঠিন, যতটা কঠিন তলোয়ারের সূক্ষ্ম ডগার ওপর খালি পায়ে হাঁটা। তবু আমাদের চলতে হবে ঈমান বাঁচিয়ে, ইসলামকে ধারণ করে। লোকসঙ্গ বর্জন করে একাকি নিজের মতো ঈমান নিয়ে বেঁচে থাকা, নিজ প্রয়োজন সেরে কেবলমাত্র রবের অভিমুখি হওয়া।

কেয়ামতের বড় বড় আলামত এখনো পরিদৃষ্ট না হলেও ছোট ছোট আলামতগুলো এমনভাবে সর্বত্র বিস্তার লাভ করেছে, যা রোধ করার ক্ষমতা কারো নেই। কেয়ামতের ছোট ছোট আলামত গুলো-কোরআন ও হাদিসের জ্ঞান থেকে মানুষকে দূরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। বদদ্বীনি আচরণ ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করছে। মানুষ থেকে নীতি-নৈতিকতা হারিয়ে যাচ্ছে। হিংসা, লোভ ও অহংকারের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। প্রতিযোগিতা করে অট্টালিকা নির্মাণ করা হচ্ছে। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালনের পরিবর্তে দুষ্টের লালন ও শিষ্টের দমনের কার্যক্রম গর্বের সঙ্গে করা হচ্ছে।

শিরক, বিদআত, নিফাক ইত্যাদি বৃদ্ধি পাচ্ছে, মিথ্যা, আমানতের খিয়ানত, ওয়াদা খিলাফ অহরহ হচ্ছে। সন্তান পিতা-মাতার শুধু অবাধ্য নয়, বরং পিতা-মাতাকে খুন করছে। পিতা-মাতা সন্তানকে আদর-স্নেহ দিয়ে মানুষ করার পরিবর্তে নিজেই হত্যা করছে। যা জাহেলি যুগেও করা হতো না।

অন্যায়-অবিচার এতো প্রকট আকার ধারণ করেছে যে মানুষ অন্যায়কে অন্যায় মনে করছে না। ন্যায়নীতির পরিবর্তে অন্যায়-জুলুম করা হচ্ছে। নারীরা পর্দা করার পরিবর্তে পর্দাহীনতাকে অহংকারের বিষয় বানিয়ে নিয়েছে। সুদ-ঘুষ, মদ, জিনা-ব্যভিচার বেড়ে গেছে। জাহেলি যুগের মতো সুদকে ব্যবসার ন্যায় হালাল মনে করা হচ্ছে। ঘুষকে স্বাভাবিকভাবে দেখা হচ্ছে।

মদপানকে তুচ্ছ করে দেখা হচ্ছে। পাঁচ বছরের বালিকা পর্যন্ত ধর্ষিত হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যুবতীরা যুবকদের হাতে নির্যাতিত হচ্ছে। সমাজে সৎ ও নেককার লোকেরা লাঞ্ছিত হচ্ছে। অসৎ ও দুষ্ট লোকদের দৌরাত্ম্য বেড়ে গেছে। বদকর্মে পৃথিবী টইটম্বুর হয়ে গেছে।

কেয়ামতের ১০টি বড় নিদর্শন “মহানবী (সাঃ) বলেন, ১০টি নিদর্শন যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা দেখতে পাবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত কিয়ামত হবে না।” তা হলো-

১. ধোঁয়া।

২. দাজ্জাল।

৩. দাব্বাহ (জমিন থেকে একটি জন্তুর বের হওয়া)।

৪. পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয়, (কিয়ামতের ১০০ বছর আগে মাত্র এক দিনের জন্য পশ্চিম দিক দিয়ে সূর্য উদিত হবে)।

৫. হজরত ঈসা (আ.) এর আগমন।

৬. ইয়াজুজ-মাজুজের আগমন।

৭. পূর্ব দিকের তিনটি ভূমিকম্প।

৮. পশ্চিম দিকে ভূমিকম্প।

৯. আরব উপদ্বীপের ভূমিকম্প।

১০. ইয়েমেন থেকে উত্থিত আগুন, যা মানুষকে তাড়িয়ে সমাবেশের স্থানে নিয়ে যাবে। (সহিহ বুখারি)।

হাদিসে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো গর্হিত কাজ দেখবে, সে যেন তা নিজ হাতে প্রতিহত করে। যদি না পারে, তবে যেন জবান দ্বারা প্রতিবাদ করে। তাও যদি না পারে, তবে যেন অন্তর দ্বারা ঘৃণা করে। (জেনে রেখ) তা হলো ঈমানের সবচেয়ে শেষ স্তর। সূত্র-তিরমিজি।

বর্ণিত এসব আয়াত ও হাদিসের আলোকে বলা যায়, এ জামানায়ও ওই ব্যক্তিই সবচেয়ে উত্তম হবে; যে হকের পথে অবিচল থাকার পাশাপাশি বাতিলের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলবে। তা হোক অস্ত্রের মাধ্যমে, কলমের মাধ্যমে কিংবা আন্দোলনে। আল্লাহতায়ালা সবাইকে উত্তম পথের অনুসারী হওয়ার তওফিক দিন। আমিন।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৫:২২
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৫:৪৩
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:২৭
  • ১২:১৪
  • ৪:০৩
  • ৫:৪৩
  • ৭:০০
  • ৬:৪১