DoinikAstha Epaper Version
ঢাকাবৃহস্পতিবার ২৮শে নভেম্বর ২০২৪
ঢাকাবৃহস্পতিবার ২৮শে নভেম্বর ২০২৪

আজকের সর্বশেষ সবখবর

সেনাবাহিনীর হাতে অং সান সু চি আটক

DoinikAstha
ফেব্রুয়ারি ১, ২০২১ ৪:৫৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের প্রধান অং সান সু চিকে সেনাবাহিনী আটক করেছে। ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) মুখপাত্র বলেছেন, দেশের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ কয়েকজন নেতাকে আটক করা হয়েছে।

এই ঘটনা এমন সময় ঘটছে, যখন মিয়ানমারে একটি সামরিক অভ্যুত্থান এর সম্ভাবনা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।গত বছর নভেম্বরের নির্বাচনে অং সান সু চির এনএলডি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু সেনাবাহিনী নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তোলে।

মিয়ানমার বার্মা নামেও পরিচিত যা ২০১১ পর্যন্ত শাসন করেছে সামরিক বাহিনী। সু চি অনেক বছর ধরে গৃহবন্দী ছিলেন।সোমবার নব-নির্বাচিত সংসদের প্রথম বৈঠক হবার কথা, কিন্তু সেনাবাহিনী অধিবেশন স্থগিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়।

রাজধানী নিপিড এবং প্রধান শহর ইয়ানগনের রাস্তায় সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে। প্রধান প্রধান শহরগুলোতে মোবাইল ইন্টারনেট এবং কিছে টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম এমআরটিভি জানিয়েছে যে তারা কিছু কারিগরি সমস্যার মুখে পড়েছে এবং তাদের সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে।

বিবিসির দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া সংবাদদাতা জনাথান হেড জানিয়েছেন, যদিও গত সপ্তাহ সামরিক বাহিনী সংবিধান মেনে চলার অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছে তার পরও এটাকে পুরো মাত্রায় সামরিক অভ্যুত্থান বলেই মনে হচ্ছে। এক দশকেরও বেশি সময় আগে সংবিধান তৈরি করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন:

৫ সহস্রাধিক আটক,রাশিয়ায় বিক্ষোভ অব্যাহত

জরুরি অবস্থা জারি, মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল

তিনি জানান, সংবিধান অনুযায়ী সামরিক বাহিনী উল্লেখযোগ্য ক্ষমতা রয়েছে যার মাধ্যমে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারে তারা। কিন্তু সু চির মতো রাজনৈতিক নেতাকে আটক করার ঘটনা উস্কানিমূলক এবং খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এমন পদক্ষেপ তীব্র বাঁধার মুখে পড়বে।

সৈন্যরা দেশের বিভিন্ন প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর বাসায় গিয়ে তাদের আটক করে নিয়ে যায় বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে।এনএলডি মুখপাত্র মিও নয়েন্ট রয়টার্স সংবাদ সংস্থাকে জানায়, প্রেসিডেন্ট মিন্ট এবং অন্যান্য নেতাদের ভোরে আটক করা হয়। আমি জনগণকে বেপরোয়া কিছু না করার অনুরোধ করছি, আমি চাই তারা আইন মেনে চলবে।

গত ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে এনএলডি পার্টি ৮৩% আসন পায় যাকে সু চির বেসামরিক সরকারের প্রতি সর্বসাধারণের অনুমোদন হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

২০১১ সালে সামরিক শাসন শেষ হওয়ার পর এটি দ্বিতীয় বার নির্বাচন ছিলো মাত্র। তবে সামরিক বাহিনী নির্বাচনের ফলকে বাধাগ্রস্ত করেছে। তারা সুপ্রিম কোর্টে দেশটির প্রেসিডেন্ট এবং ইলেক্টোরাল কমিশনের প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে।

সম্প্রতি সামরিক বাহিনী নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলার পর থেকে সামরিক অভ্যুত্থানের শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। তবে এই অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।

মিয়ানমারের স্বাধীনতার নায়ক জেনারেল অং সানের মেয়ে অং সান সু চি। তার যখন দুই বছর বয়স তখন তার বাবাকে হত্যা করা হয়েছিল। ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র দুই বছর পর এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল।

সু চিকে একসময় মানবাধিকারের বাতিঘর বলা হতো- যিনি একজন নীতিবান অধিকারকর্মী হিসেবে দশকের পর দশক ধরে মিয়ানমারের শাসন ক্ষমতায় থাকা নির্দয় সামরিক জেনারেলদের চ্যালেঞ্জ করতে নিজের স্বাধীনতাকে জলাঞ্জলি দিয়েছিলেন।

১৯৯১ সালে তাকে নোবেল শান্তি পুরষ্কার দেয়া হয় এবং তাকে ক্ষমতাহীনদের ক্ষমতার অনন্য উদাহরণ হিসেবে সম্বোধন করা হতো। তখনও তিনি গৃহবন্দীই ছিলেন।১৯৮৯ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে অন্তত ১৫ বছর বন্দী জীবন কাটিয়েছেন সু চি।

২০১৫ সালের নভেম্বরে ২৫ বছরের মধ্যে প্রথমবার অনুষ্ঠিত অবাধ নির্বাচনে অংশ নিয়ে ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি এনএলডি’র নেতৃত্ব দেন এবং যাতে বড় ধরণের জয় পান তিনি।

মিয়ানমারের সংবিধান অনুযায়ী তিনি প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি কারণ তার সন্তানেরা বাইরের দেশের নাগরিক। তবে ৭৫ বছর বয়সী সু চি একজন ডি ফ্যাক্টো নেতা হিসেবেই সুপরিচিত।

তবে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর তার নেতৃত্বকে দেশটিতে মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি হওয়া আচরণ দিয়েই বর্ণনা করা হয়।

২০১৭ সালে রাখাইন রাজ্যে পুলিশ স্টেশনে প্রাণঘাতী হামলার পর রোহিঙ্গাদের উপর সেনাবাহিনীর নির্যাতন শুরু হলে লাখ লাখ রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নেয়।

তবে সু চির সাবেক আন্তর্জাতিক সমর্থকরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন যে, তিনি ধর্ষণ, হত্যা এবং সম্ভাব্য গণহত্যা রুখতে কোন পদক্ষেপ নেননি এবং ক্ষমতাধর সামরিক বাহিনীর নিন্দা কিংবা তাদের নৃশংসতার মাত্রাও স্বীকার করেননি।

প্রাথমিকভাবে অনেকেই তার পক্ষে যুক্তি দেয়ার চেষ্টা করে বলেছেন যে, তিনি একজন বাস্তববাদী রাজনীতিবিদ যিনি বহু-জাতি বিশ্বাসের সম্প্রদায়ভুক্ত একটি দেশ শাসন করছেন যার জটিল ইতিহাস রয়েছে।

তবে ২০১৯ সালে হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে অনুষ্ঠিত শুনানিতে সামরিক বাহিনীর পদক্ষেপের বিষয়ে তার নিজের স্বপক্ষে উপস্থাপিত যুক্তি মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এর পর তার আন্তর্জাতিক সুনাম বলতে তেমন কিছু অবশিষ্ট থাকে না।

দেশের ভেতরে ‘দ্য লেডি’ নামে পরিচিত সু চি বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠদের কাছে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় যারা রোহিঙ্গাদের প্রতি তেমন সহানুভূতিশীল নয়।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৫:০০
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৫:১৪
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:০৫
  • ১১:৪৯
  • ৩:৩৫
  • ৫:১৪
  • ৬:৩১
  • ৬:২০