আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
করোনাভাইরাস সংক্রমণে বিপর্যস্ত ভারত। গত দু সপ্তাহ ধরে দৈনিক সংক্রমণের হার আগের চেয়ে দ্বিগুণ। প্রতিদিনই দেশটিতে দুই লাখেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হচ্ছেন। ফলে ভারতের সর্বত্র হাসপাতালগুলোতে দেখা দিয়েছে বেড ও অক্সিজেনের অভাব। ঘাটতি দেখা দিয়েছে জীবনদায়ী ওষুধের।
রাজ্যগুলোর রাষ্ট্রায়ত্ত হাসপাতালগুলোকে কোভিড হাসপাতালে পরিণত করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে ২২ এপ্রিল থেকে শিল্পক্ষেত্রে অক্সিজেনের ব্যবহারে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করছে কেন্দ্রীয় সরকার।
গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ক্রমবর্ধমান হারে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে ভারতে।
ভারতীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ১২ দিনে দৈনিক সংক্রমণের হার ৮ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৬৯ শতাংশে। সংক্রমণের হারে এই মুহূর্তে শীর্ষে ছত্তিশগড়। রাজ্যটিতে সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার প্রায় ৩০ দশমিক ৩৮ শতাংশ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে গোয়া (২৪ দশমিক ২৪ শতাংশ) ও মহারাষ্ট্র (২৪ দশমিক ১৭ শতাংশ)। আগামী এক মাসেও পরিস্থিতি উন্নয়নের তেমন সম্ভাবনা নেই বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
তাদের আশঙ্কা, পশ্চিমবঙ্গে চলমান বিধানসভা নির্বাচন শেষ হলে সেখানকার সংক্রমণের আসল অবস্থা বোঝা যাবে। একই সঙ্গে কুম্ভ মেলা থেকে সংক্রমিত ব্যক্তিরা পুরো দেশে ছড়িয়ে নতুন করে সংক্রমণ ছড়াবেন। বিশেষ করে মেলায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে একটি বড় অংশ গ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় ভবিষ্যতে ভারতের গ্রামগুলোতে করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতালে অক্সিজেনের স্বল্পতা দূর করতে শিল্পক্ষেত্রে সাময়িকভাবে অক্সিজেন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করছে কেন্দ্রীয় সরকার। সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক জরুরি বৈঠকে ওষুধ শিল্প, তেল, স্টিল, পরমাণু চুল্লি, বর্জ্য নিষ্কাশন প্ল্যান্টের মতো ৯টি ক্ষেত্র ছাড়া অন্য কোনো শিল্প কারখানা আগামী ২২ এপ্রিল থেকে শিল্প উৎপাদন খাতে অক্সিজেন ব্যবহার করতে পারবে না। পাশাপাশি, রাজ্যগুলোকে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বুঝেশুনে অক্সিজেনের ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।