অর্থ পাচারকারীদের সঙ্গে ‘সমঝোতার’ কথা ভাবছে সরকার
আস্থা ডেস্কঃ
বিদেশে অর্থ পাচারকারী ধনকুবেরদের সঙ্গে আর্থিক সমঝোতায় যেতে পারে অন্তর্বর্তী সরকার। এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর মামলার ক্ষেত্রে আর্থিক সমঝোতা ‘একটি সম্ভাব্য বিকল্প’ হতে পারে।
তিনি জানান, সরকারের সম্পদ পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে এই ধরনের সমঝোতা অর্থ ফেরত আনার পাশাপাশি দীর্ঘ ও জটিল আইনি প্রক্রিয়া এড়াতে সহায়ক হতে পারে। তবে গুরুতর দুর্নীতি কিংবা প্রতারণা সংশ্লিষ্ট মামলাগুলোর ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান বজায় থাকবে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন গভর্নর।
আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য হলো যতটা সম্ভব অর্থ ফেরত আনা। যদি কিছু ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়ার চেয়ে সমঝোতার মাধ্যমে বেশি সম্পদ ফিরে পাওয়া যায়, তাহলে সেটিও বিবেচনায় আনা হবে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বিদেশে পাচার হওয়া অবৈধ সম্পদ শনাক্ত ও ফেরত আনার উদ্যোগ জোরদার করেছে। এরই অংশ হিসেবে একাধিক ধনকুবের, রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীকে নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে নতুন প্রশাসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারসহ রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী কিছু পরিবারের বিরুদ্ধে জোরাল পদক্ষেপ নিয়েছে।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইতোমধ্যে অগ্রাধিকারভিত্তিতে ১১টি তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি মামলায় অভ্যন্তরীণ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।
এই উদ্যোগের লক্ষ্য, গত ১৫ বছরে ক্ষমতাসীনদের দ্বারা বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদ শনাক্ত ও ফিরিয়ে আনা। প্রশাসন এরই মধ্যে বিভিন্ন বিদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, সরকারি নির্দেশনায় তৈরি এবং গত ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত একটি অর্থনৈতিক শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার সরকারের সময় বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার হয়েছে। অর্থাৎ, এই সময়কালে দেশের বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, যা জাতীয় অর্থনীতির ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে।