ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকা একতরফাভাবে সমস্ত নিষেধাজ্ঞা বহল করার যে ঘোষণা দিয়েছে তার নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া। দেশটি বলেছে, স্ন্যাপব্যাক মেকানিজমের নামে ওয়াশিংটন নাটক করছে; যার লক্ষ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করা। খবর পার্সটুডের।
রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
এর আগের দিন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ঘোষণা দেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবের আওতায় ইরানের বিরুদ্ধে আগের সমস্ত নিষেধাজ্ঞা বহাল করা হচ্ছে। একইসঙ্গে তিনি নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, তারা যদি নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের বিরোধিতা করে তাহলে তাদেরকে ‘পরিণতি’ ভোগ করতে হবে।
পম্পেওর এই বক্তব্যের জবাবে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আমেরিকা বিশ্বকে এখনো বিভ্রান্ত করছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ যেকোনোভাবে হোক ব্যবহার করে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের আওতায় কিছু নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, নিরাপত্তা পরিষদ এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি যার কারণে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বহাল হয়। এসব কারণে বলা যায়, নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোকে সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি অনুসরণ করতে বাধ্য করার জন্য এবং বিশ্ব সংস্থাকে তাদের হাতিয়ারে পরিণত করতে আমেরিকা মঞ্চ নাটক ছাড়া আর কিছুই করছে না।
আরো পড়ুন: আল আকসায় ইসরাইলি দখলদারদের তাণ্ডব
মাইক পম্পেওর বক্তব্য মোটেও গ্রহণযোগ্য নয় বলেও মন্তব্য করেছে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
২০১৫ সালে বিশ্বের ছয় শক্তিধর দেশের সঙ্গে ইরান যে পরমাণু চুক্তি করেছিল তার আওতায় ইরানের ওপর জারি থাকা জাতিসংঘ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে ১৮ অক্টোবরে। এর সপ্তাহ দুয়েক পর অর্থাৎ ৩ নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।
শনিবার ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, ইরানের ওপর জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করতে হবে এবং অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদও অক্টোবরের মাঝামাঝিতে শেষ হবে না।
ধারণা করা হচ্ছে নির্বাচনে ভোটারদের আকৃষ্ট করতে ইরানের প্রতি বিন্দুমাত্র ছাড় না দেয়ার মানসিকতা দেখাচ্ছেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালে ইরানের সঙ্গে করা পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে এলেও তারা ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞাসহ সব জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা আবার আরোপের তোড়জোড় শুরু করেছে। যদিও ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি সই করা অন্যান্য দেশগুলো এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বেশিরভাগ সদস্যই বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বাহলের অধিকার আছে বলে তারা মনে করে না।