দেশের এমপিওভুক্ত বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একাধিক বিষয়ে ৫৭ হাজার ৩৬০ সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। ইতোমধ্যেই এসব পদের তালিকা সংগ্রহ করে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে তা চূড়ান্ত করা হলেও আদালতের আদেশের ফলে নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে চলতি সপ্তাহে শিক্ষক নিয়োগের নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করা হবে। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ- এনটিআরসি থেকে এমন তথ্য জানা গেছে।
এনটিআরসিএ জানায়, সারাদেশের এমপিওভুক্ত (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শূন্য পদের তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে। অনলাইন ও টেলিটক মোবাইলের মাধ্যমে সংগৃহীত ওই তালিকায় দেখা গেছে, অনুমোদিত বিভিন্ন বিষয়ে ৫৭ হাজার ৩৬০টি পদ শূন্য রয়েছে। এটি মাঠ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই শেষে চলতি মাসে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এ দিকে, সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০১৭ সালে একটি মেধা তালিকা তৈরি করা হয়। নিবন্ধিত প্রার্থীদের ওই তালিকা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে এমপিও নীতিমালা- ২০১৮ প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের আপিল ডিভিশন ১৩তম নিবন্ধিত প্রার্থীদের সরাসরি নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশনা দেয়।
ফলে দুটি সিদ্ধান্ত ভিন্ন হওয়ায় দেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্য পদের তালিকা চূড়ান্ত হলেও নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি। এ জন্য নতুন করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনটিআরসিএ।
বিষয়টিতে এনটিআরসিএ এর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রথম থেকে ১৫তম নিবন্ধিত মেধা তালিকায় ছয় লাখ ৩৪ হাজার ১২৭ জন রয়েছেন। এর মধ্যে ১ লাখ ৮২১ জনের বয়স ৩৫ বছর পার হওয়ায় তারা নিয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন না। এছাড়া ৩৫ বছরের মধ্যে আরও ২ লাখ ৮৮ হাজার নিবন্ধিত প্রার্থী রয়েছেন। তবে তাদের অনেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরাসরি নিয়োগ পেয়েছেন। মামলা জটিলতায় অনেকের বয়স পার হলেও চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তবে প্রার্থীদের মধ্যে বড় একটি সংখ্যা নিয়োগের অপেক্ষায় রয়েছেন।
এ বিষয়ে তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশী শিক্ষক ফোরামের নেতৃবৃন্দরা বলছেন, আমরা শূন্য আসনের তালিকা প্রকাশ ও নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করতে ছয় দফায় স্মারকলিপি দিয়েছি। এটি গত ফেব্রুয়ারিতে দেওয়ার কথা থাকলেও এখনও শুরু হয়নি। ফলে অনেকের চাকরিতে যোগদানের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে। বিষয়গুলো বিবেচনা করে দ্রুত আদালত থেকে নির্দেশনা এনে নিয়োগ কার্যক্রম শুরুর দাবি জানান তারা।
এ ব্যাপারে সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এনটিআরসিএ এর চেয়ারম্যান আকরাম হোসেন বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সারাদেশের অনুমোদিত শূন্য আসনের সংখ্যা পেলেও আদালতের নির্দেশনার কারণে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।
আরও পড়ুন : শেখ হাসিনাসহ ৬৪ বিশ্ব নেতার ‘প্রকৃতির জন্য অঙ্গীকার’র উদ্যোগ
তিনি বলেন, ১৩তম নিবন্ধিত প্রার্থীদের সরাসরি নিয়োগের বিষয়টি স্থগিত রেখে মেধাক্রমে নিয়োগ শুরু করতে আমরা নতুন করে আদালতে আপিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরই ধারাবাহিকতায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে চলতি সপ্তাহে আপিল করা হবে। আদালত থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পেলে তৃতীয় ধাপে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।