সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় রিমান্ডে থাকা এজাহারনামীয় ছয় আসামির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০১ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কড়া পুলিশ পাহারায় তাদের সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে স্থাপিত ডিএনএ ল্যাবের বিশেষজ্ঞরা আসামিদের ডিএনএ সংগ্রহ করেন। এরপর দুপুর দেড়টায় তাদের আবার শাহপরান থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
জনগণ যে রায় দেবে আমরা তা মেনে নেবো, উপনির্বাচন নিয়ে কাদের
যাদের ডিএনএ নমুনা নেয়া হয়েছে তারা হলেন গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, অর্জুন লঙ্কর, রবিউল ইসলাম, মামলার সন্দেহভাজন আসামি মিসবাউর রহমান রাজন ও আইনউদ্দিন। তারা সবাই ছাত্রলীগ কর্মী এবং বর্তমানে গ্রেফতাকৃত আটজনের সবাই পাঁচদিনের পুলিশ রিমান্ডে আছেন।
এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. হিমাঙ্গশু লাল রায় জাগো নিউজকে বলেন, এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ মামলার ছয় আসামিকে হাসপাতালের নিচতলায় ডিএনএ ল্যাবে আনা হয়। পরে তাদের প্রয়োজনীয় ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেন ল্যাবের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা। দপুর দেড়টার দিকে পুলিশ তাদের নিয়ে গেছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশের (গণমাধ্যম) জ্যোতির্ময় সরকার বলেন, তারেকুল ইসলাম তারেক ও মাহফুজুর রহমান মাসুম ছাড়া গ্রেফতার অপর ছয়জনের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে নেয়া হয়। সেখানে নমুনা সংগ্রহ করার পর তাদের পুলিশের হেফাজতে আনা হয়েছে।
২৫ সেপ্টেম্বর রাতে এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন এক গৃহবধূ। রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামীর কাছ থেকে ওই গৃহবধূকে জোর করে তুলে নিয়ে ছাত্রাবাসের সামনে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় কলেজের সামনে তার স্বামীকে আটকে রাখে দুজন।
এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে শাহপরান থানায় মামলা করেছেন। মামলায় ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত আরও তিনজনকে আসামি করা হয়। এ ঘটনায় র্যাব ও পুলিশ এজাহারভুক্ত ছয় আসামির সবাইসহ আরও সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেফতার করেছে। তারা সবাই বর্তমানে পাঁচদিনের পুলিশ রিমান্ডে রয়েছেন।
গ্রেফতারকৃত সবাই ছাত্রলীগকর্মী। তারা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক রণজিৎ সরকারের অনুসারী বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় রোববার দুপুরে সিলেট মহানগর হাকিম (তৃতীয়) আদালতের বিচারক শারমিন খানম নিলার কাছে সেই রাতের ঘটনার জবানবন্দি দেন নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ। এ সময় তিনি ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। আদালত গৃহবধূর জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে পরিবারের জিম্মায় দিয়ে দেন।