DoinikAstha Epaper Version
ঢাকাশুক্রবার ২৭শে ডিসেম্বর ২০২৪
ঢাকাশুক্রবার ২৭শে ডিসেম্বর ২০২৪

আজকের সর্বশেষ সবখবর

কবির সঙ্গে কবি-কথা।

News Editor
এপ্রিল ২০, ২০২১ ২:৩৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

কবির সঙ্গে কবি-কথা।

সিয়াম সরকার জান, বিনোদন প্রতিনিধিঃ

মেহেদী হাসান লিমন। বর্তমান বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় গীতিকার। দেশের বর্তমান সব শিল্পীরই একটা আস্থার নাম। তাকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। তার ঝুলিতে রয়েছে অসংখ্য সুপার ডুপার হিট গান। তো এরই ধারাবাহিকতায় সত্য সংবাদের নান্দনিক ক্ষেত্র দৈনিক আস্থা’র তাকে নিয়ে এই আয়োজন। সাথেই থাকুন।

জানঃ কেমন আছেন গীতিকার সাহেব?

লিমনঃ এই তো আলহামদুলিল্লাহ। তুমি কেমন আছো?

জানঃ আছি ভালোই ভাই। দিনকাল চলছে কেমন?

লিমনঃ এই তো। আসলে এখন সমসাময়িক যে একটা পরিস্থিতি, যে একটা অসুস্থতা আমাদের পুরো সমাজ জাতি, দেশ ও বিশ্বে বিরাজমান— এর মধ্যে সবার সাথে মিলেমিশে নিজেকে মানিয়ে যতোটা ভালো রাখা যায়। এই আর কি।

জানঃ আপনি  তো এই সময়ের সুপারস্টার গীতিকার আমরা জানি। গান লেখার অনুপ্রেরণা কোথায় পেলেন?

লিমনঃ আমি সুপারস্টার গীতিকার না সিয়াম। এটা হয়তো তুমি ভাবছো। আমি নিজেকে এভাবে ভাবি না। আমি খুবই সাধারণ একজন মানুষ। যাই হোক গান লেখার অনুপ্রেরণা আমি পেয়েছিলাম আমার এক কাজিনের কাছ থেকে। আবুল কালাম আজাদ তার নাম। সে গান কবিতা লিখতো। তাকে দেখেই লেখা শুরু। ২০০৫ থেকে ২০০৭ সালের কথা।  আসলে আমি মানুষের জন্যই লিখি, মানুষের কথা লিখি। এই আর কি।

জানঃ এমন কেউ কি বিশেষ প্রিয়জন আছে যাকে ভেবে গান লিখেন?

লিমনঃ সবাই আমার কাছে বিশেষ। আমি মানুষের মনের কথাগুলো নিজের মত করে প্রকাশ করার চেষ্টা করি। সবাই স্পেশাল আমার কাছে।

জানঃ এ পর্যন্ত কতোটি গান বের হয়েছে আপনার?

লিমনঃ এই ধরো ১৫০ এর বেশী। সঠিক সংখ্যা মনে নেই।

জানঃ আপনার সবচেয়ে বেশী প্রশংসিত হওয়া পাঁচটা গানের নাম বলুন।

লিমনঃ আচ্ছা। প্রথমটা হলো, “কী করে বোঝাই তোকে”। এটা আসিফ আকবর ভাইয়া আর কর্ণিয়া গেয়েছে। রিলিজ হয়েছে  ধ্রব মিউজিক স্টেশন থেকে।  দ্বিতীয়টা হলো, ইমরানের গাওয়া “এমন একটা তুমি চাই”। এটা এসেছে সিএমভি থেকে। তৃতীয়টা হলো, ইমরানেরই “আমার কাছে তুমি অন্যরকম”। এটাও সিএমভি থেকে। চার নম্বরে আছে, মিনারের “চোখ”। এটাও সিএমভি থেকে। তারপর আছে, তাহসান ভাইয়ের ভালোবাসি তাই। এটা ডেডলাইন থেকে এসেছে।

জানঃ শিল্পীদের মধ্যে কাকে সবচেয়ে ভালো লাগে?

লিমনঃ স্পেসিফিকলি বলা মুশকিল। আমার তো সবাইকেই ভালোলাগে।

জানঃ অনেকে বলে গীতিকার সর্বোচ্চ সম্নান পাওয়ার অধিকার রাখে কিন্তু বাস্তবতা এমন না। সব দিক থেকেই গীতিকাররা নিগৃহীত– এই ব্যাপারে আপনার কী অভিমত। আপনি কী কখনো এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন?

লিমনঃ আমি শেষ থেকে ধরি, এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি আমি তেমন একটা হই নি। তবে গীতিকাররা এমন অভিজ্ঞতার স্বীকার হয়েছে জানি। এর জন্য আমি অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি ব্যক্তিগতভাবে। কিন্তু আমার একার পক্ষে তো সম্ভব না। তুমি যদি আমাদের পাশের দেশে তাকাও তাহলে দেখতে পাবে সেখানে গীতিকারদের কীভাবে মান  প্রদর্শন করে বড় বড় মিউজিসিয়ানরা। তারা অনেক সম্মান পায় – এটা প্রচলিত। আমাদের এখানে এই প্রচলন নেই। আসলে আমি মনে করি, এটা নিচু  মনমানসিকতার পরিচয়, শিক্ষার অভাব, নিজেকে বড় করে উপস্থাপন করে অন্যকে সম্মান না করার প্রবণতা! অনেকে জানেনই না যে অন্যকে সম্মান করলে সম্মান বাড়ে। আর গীতিকারদেরও দোষ আছে! অধিকাংশই নিজের অধিকার সচেতন না আমি বোধ করি। তারা ভাবে এগুলো নিয়ে প্রতিবাদ করলে দুই একটা কাজ কমে যাবে। হয়তো সে আর কাজ পাবে না!   এটা শিক্ষার অভাবে সৃষ্ট অসভ্যতা। আমি এখন খুব সচেতন এ ব্যাপারে। তুমি দেখবে যে এখন আমার গান কম কেননা আমি আমার যথাযথ সম্মান যেখানে পাই না সেখানে কাজ করি না। আমার প্রতিবাদটা এমনই।

জানঃ একটা গান লেখার জন্য আপনাকে সর্বনিম্ন কতো আর সর্বোচ্চ কতো টাকা সম্মানী দেয়া হয়?

লিমনঃ সরাসরি বলবো না। তবে আমি আমার সর্বোচ্চ মর্যাদা  নিয়েই  কাজ করি। মজার ব্যপার হলো ২০০৯ সালে আমার প্রথম গানের পেমেন্ট ছিলো এক হাজার টাকা। এখান থেকেই আমার শুরু।

জানঃ আপনার সবচেয়ে অপ্রিয় শিল্পী কে?

লিমনঃ কেউ না। সবাইকে ভালোবাসি

জানঃ আপনি কোন ধরনের গান লিখতে সবচেয়ে বেশী ভালোবাসেন?

লিমনঃ বিরহের গান। তুমি দেখবে আমার সুপারহিট সব গানই রোমান্টিক। এর ব্যাখ্যা আমি জানি না আজও।

জানঃ কোন ধরনের গান শুনতে সবচেয়ে বেশী ভালোবাসেন?

লিমনঃ সব ধরনের গান শুনি। যখন যা সামনে পাই। সব শুনি। বিশেষ করে বলার মতো কিছু নেই।

জানঃ মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা খুব একটা ভালো না – এই বিষয়ে আপনার কী অভিমত? আপনি কী এই অবস্থার উত্তরণে কোনো ব্যবস্থা নিয়েছেন বা নিতে চান নিজ থেকে?

লিমনঃ আমি ছোট আমরা আর কতোটুকুই করতে পারবো বলো? যারা ইন্ডাস্ট্রির ধারক বাহক এই উত্তরণ তারাই করতে পারে। মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা তো আজকে খারাপ না বিগত দশ বছর ধরেই খারাপ। চাইলেই হুট করে বদলে যাবে না সবকিছু। অনেক সময় নিয়ে যেই সংস্কৃতি তৈরি এটা পুরোপুরি যাওয়ার জন্যও তোমাকে কিছুটা সময় দিতেই হবে, তাই না?

জানঃ আপনার পরিবার সম্পর্কে বলুন।

লিমনঃ বাবা মা ছোট দুই ভাই মিলে আমার পরিবার। তারমধ্যল আমি সবার বড়৷ বেড়ে ওঠা কুমিল্লায়।

জানঃ কী করতে সবচেয়ে ভালোলাগে আর কী করতে ভালোলাগে না?

লিমনঃ এটা সময়ের উপর নির্ভরশীল।

জানঃ একজন স্বনামধন্য গীতিকার হিসেবে আপনার চাওয়াটা কেমন বাংলাদেশকে নিয়ে?

লিমনঃ আমি তো স্বনামধন্য না আগেই বলেছি তোমাকে। আমি তো কতো কিছুই চাই, আমার চাওয়ার মতো করে তো সব হবে না। সবার চাওয়া এক হলে একটা কিছু হওয়া সম্ভব। তবে আমার একটাই চাওয়া যে, গীতিকাররা তাদের প্রাপ্য সম্মানটা পাক, একটু শিক্ষার আলো আসুক এখানে আর আমাদের গান সারা বিশ্বে সমাদৃত হোক।

জানঃ বিয়ের বয়স তো পেরিয়ে যাচ্ছে ভাই। বিয়ে করছেন না কেনো?

লিমনঃ আসলে বিয়ে তো হলো নিজে দায়িত্ব নিয়ে নিজের সমস্যা তৈরি করে সেই ফাঁদে পা রাখার মত। এখনও তেমন কিছু ভাবছি না। বয়স হলেও হোক। দেখা যাক। বাকিটা আল্লাহ জানেন।

জানঃ প্রেম সংক্রান্ত কোনো বিষয় কী আপনার জীবনে আছে?

লিমনঃ আছে। মানুষের প্রতি ভালোবাসা।

জানঃ এখন এমন একটা প্রশ্ন করছি যেটার জন্য আপনি এখন প্রস্তুত নাও থাকতে পারেন। আমাকে আপনার কেমন লাগে? সরাসরি বলুন ভাই।

লিমনঃ ব্যক্তিগতভাবে বলতে গেলে আর সত্য কথা বলতে গেলে তোমার খারাপ কিছু আমি এখনো এতো দিনের পরিচয় থাকা সত্ত্বেও ধরতে পারি নি। আসলে তুমি খুবই ডিপ্লোমেটিক মাইন্ডেড পার্সন। কারে কী বুঝ দেয়া দরকার তা তুমি খুব ভালো করেই জানো। আর খুব সাহসী মনা এবং গান পাগল সংস্কৃতি পাগল বলতে যা বোঝায় তার সবই তোমার মধ্যে কোণায় কোণায় পূর্ণ। তুমি খুব ডেডিকেটেড। অল্প বয়সেই তুমি যা করছো বা অলরেডি করেছো তা ভাবাই যায় না। আর একটা জিনিস যা জানি তা অনেকেই জানে না তা হলো তুমি অনেক ভালো গাইতে পারো। তোমার গান আমার অনেক ভালোলাগে।  এগিয়ে যাও ভাই। লাভ ইউ।

জানঃ ওহ মাই গড! জীবনটা এক্কেবারে ধন্য করে দিলেন ভাই। বাই দ্য ওয়ে, সত্য সংবাদের নান্দনিক প্রতিনিধি দৈনিক আস্থা’র পক্ষ থেকে আপনাকে হাজারও শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

লিমনঃ দৈনিক আস্থা’কেও খুব খুব কৃতজ্ঞতা জানাই। এমন আয়োজন আরও অনেক বেশী হওয়া উচিত এটাই আস্থা’র প্রতি আমার দাবী। আর দর্শকদের বলতে চাই, আপনারা বেশী করে বাংলা গান শুনুন বাংলা সংস্কৃতির সাথেই থাকুন।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৫:১৭
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৫:২২
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:১২
  • ১২:০২
  • ৩:৪২
  • ৫:২২
  • ৬:৪১
  • ৬:৩৮