কিশোরীকে ১৮ দিন আটকে রেখে ধর্ষণ অভিযুক্তের বাড়িতে হামলা
রিয়াজুল হক সাগর/রংপুর অফিসঃ
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে কিশোরীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ১৮ দিন আটকে রেখে ধর্ষণ করেছে ট্রাক ড্রাইভার। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিযুক্তের বাড়িতে হামলা চালিয়ে গরু-ছাগল, টাকা পয়সা লুট করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অপরদিকে ওই ড্রাইভারের লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সর্জ্জিত হয়ে প্রতিবাদকারীদের ধাওয়া করে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে বৃহস্পতিবার (২০মার্চ) দুপুরে সেনাবাহিনীর একটি দল ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেশকিছু দেশীয় অস্ত্র জব্দ করে এবং নির্যাতিত কিশোরীকে উদ্ধার করে রাজারহাট থানা পুলিশ হেফাজতে দেয়।
সেনাবাহিনী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলায় গকুন্ডা ইউনিয়নের চড়গকুন্ডা গ্রামের বাসিন্দা মৃত টেংরা মামুদের পুত্র ড্রাইভার ফজলুল হক (৪৮)। সে গত ২ মার্চ কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের মধ্য সুলতান মাহমুদ গ্রামের বাসিন্দা ১৭ বছরের এক কিশোরীকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়।
তখন থেকে কিশোরী মেয়েটিকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত ফজলুল হক নিজ বাড়িতে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন করে এবং শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণসহ ছবি তুলে রাখার।
বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমসহ লোকমুখে ছড়িয়ে পড়লে বৃহস্পতিবার (২০মার্চ) দুপুরে কুড়িগ্রাম সেনা ক্যাম্পের সেনাবাহিনী অভিযান পরিচালনা করে। এসময় সেনাবাহিনীর সহায়তায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে রাজারহাট থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
এসময় অভিযান চালিয়ে ফজলুল হকের বাড়ি থেকে ২টি ছুরি, দা, কাচি এবং ১টি এসএস পাইপ জব্দ করে।
এ ঘটনায় ওই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য বলেন, ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি মহল অভিযুক্তের বাড়িতে হামলা চালিয়ে গরু-ছাগল, টাকা পয়সা লুট করেছে।
কুড়িগ্রাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান জিহাদী বলেন, আমার গ্রামে এক কিশোরীকে ট্রাক চালক ফজলুল হক অপহরণ করে টানা ১৮ দিন ধর্ষণ করেছে। গতকাল রাতে ভুক্তভোগী কিশোরী কোনো রকমে পালিয়ে আসে এবং এক বাড়িতে আশ্রয় নেয়। কিশোরীর মুখে ঘটনা শুনে এলাকাবাসী ফজুলল হকের বাড়ি ঘেরাও করলে ফজলুল হক ও তার স্ত্রী পালিয়ে যায়।
নির্যাতিত কিশোরী জানায়, দীর্ঘ দিন ধরে ফজলুল হক ও তার স্ত্রী আমাকে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দিয়ে আসছে। আমি রাজি না হওয়ায় তারা আমাকে তুলি নিয়ে যায়। এরপর জোরপূর্বক আমাকে ধর্ষণ করে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারন করে। এই ঘটনা বাইরে প্রকাশ করলে তারা আমার সাথে শারিরিক সম্পর্কের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। আমি এর বিচার চাই।
রাজারহাট থানার ওসি তছলিম উদ্দিন বলেন, মেয়েটি বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তবে ঘটনাস্থল লালমনিরহাট জেলায়। লালমনিরহাট পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। তারা এসে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।