হাবিবুর রহমান মুন্না।।
কুমিল্লায় অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণের খেসারত দিতে হলো এক শিশুকে। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুবারি)সকাল সাড়ে ১১ টায় নগরীর তেলিকোনা এলাকার মানিক মিয়া টাওয়ারে ওই দূর্ঘটনা ঘটে।
মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন ১৬ নং ওয়ার্ড সংরাইশের শামীম মিয়ার ছেলে। ৭ বছর বয়সী আব্দুল্লাহ’ মানিক মিয়া টাওয়ারের সাথে লাগুয়া বিদুৎ এর খুঁটির ফোরফোরটি মেইন লাইনটি ধরে ফেল্লে তার মা মমতাজ বেগম তাৎক্ষণিক অবস্থায় বুদ্ধি খাটিয়ে দা দিয়ে ছেলের হাতে কুপ মারে।কুপ মারার কারণে ছেলেটির হাতের কব্জি বিছিন্ন হয়ে বিদুৎ এর লাইনে আটকে থেকে গেলেও প্রাণে বেঁচে যায়। প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে সে একটি মাদ্রাসার ছাত্র।
শিশুটির বাবা শামীম মিয়া জানান, ১ ফেব্রুয়ারী সকাল ১১টা ৩০ মিনিটের সময় নগরীর তেলিকোনা মানিক মিয়া টাওয়ারের চারতলায় আমরা বসবাস করি।হঠাৎ কিভাবে আমার ছেলে মানিক মিয়া টাওয়ারের ভবন ঘেঁষে বৈদ্যুতের মেইন লাইনের তারে জড়িয়ে গুরুতর আহত হয় । প্রাথমিক ভাবে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় এরপর তাঁর অবস্থার অবনীতি ঘটলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করি।
ওই এলাকার প্রতিবেশী জহিরুল ইসলাম বাপ্পী জানান, মানিক মিয়া ভবনের মালিক এলাকার প্রভাবশালী। কোনো অনুমোদন ছাড়াই তারা বৈদ্যুতিক খুঁটির মেইন লাইন ঘেঁষে ভবন নির্মাণ করছেন ও সর্তরকতা অবলম্বন না করে তিনি ফ্লাট ভাড়া দিয়ে চলছেন। এছাড়া ও মানিক মিয়া ভবনে একটি মাদ্রাসা রয়েছে। যেখানে কোমলমতী শিক্ষার্থীরা খুবই আতংকের সাথে মাদ্রাসায় পড়াশোনা করছে।এতে করে বাচ্চারা চরম ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, মালিকপক্ষের চরম উদাসীনতার কারণে বারান্দার রেলিং এর দরজা খোলা পেয়ে নির্মাণাধীন ভবনের চতুর্থ তলায় ওঠে খেলার সময় বিদ্যুৎ লাইনের মেইন তারে জড়িয়ে সে গুরুতর আহত হয়।’
স্থানীয় ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘কোনো অনুমতি ছাড়াই বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন মানিক মিয়া টাওয়ারের মালিক অলিউল্লাহ। ভবন ঘেঁষে বিদ্যুতের লাইন রয়েছে। তিনি একটু দূরত্বে ভবন নির্মাণ করলে এ ঘটনা ঘটত না। তা ছাড়া তিনি বিদ্যুৎ অফিসের সঙ্গেও যোগাযোগ করেননি।’
তিনি আরো জানান যে,বিদ্যুৎ এর লাইন আজ থেকে প্রায় ৪০ বছর আগেই বিদ্যুৎ এর খুটি এখানে ছিলো।কিন্ত মানিক মিয়া টাওয়ারের মালিকগণ ভবনের নিচ দিয়ে দুইতলা ভবন পর্যন্ত সরকারি জায়গা খালি রেখে তিনতলা থেকে ছয়তলা ভবন পর্যন্ত অংশ বর্ধিত করার ফলে বিদুৎ লাইনের তারের সাথে ভবনটি ঘেঁষে যায়। এরজন্যই আজ এমন দূর্ঘটনা সম্মুখীন হতে হয়েছে।
ভবনমালিক ওলিউল্লাহ বলেন,আজ (বৃহস্পতিবার) সহ একাধিক দূর্ঘটনা হলে ‘আমি বিদুৎ কতৃপক্ষকে একাধিকবার অভিযোগ করেছি। এতে কোন ব্যবস্থা নেই নি।
বিদ্যুতের লাইন ইনচার্জ সাহেদ বলেন, ৪০ বছর ধরে এখানে বিদুৎ এর খুটিটি রয়েছে। বিদ্যুৎ খুটি আগে নাকি ভবন আগে আপনারা বলেন। এখানে যে মানিক মিয়া ভবনটি রয়েছে দুইতলা পর্যন্ত ভবনের নকশা ঠিক আছে কিন্তু তিনতলা থেকে ছয়তলা পর্যন্ত নকশা বহির্ভূত হওয়ার কারণে বিদুৎ এর খুটির লাইনের সাথে ঘেঁষে যাওয়াই এই দূর্ঘটনা ঘটে।
চকবাজার ফাঁড়ির এস আই সাইফুল ইসলাম বলেন,মানিক মিয়া টাওয়ারের মালিক পক্ষের গাফিলতির কারনে এই দূর্ঘটনা ঘটে,আমরা সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ফোরফোরটি লাইনে লেগে থাকা হাতের কব্জি উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক বিভাগে পাঠিয়েছি।
সন্ধা সোয়া ছয়টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ছেলের বাবা শামীম মিয়া জানান,আমার ছেলের অর্ধেক শরীর পুড়ে গেলেও এখন পর্যন্ত আশংকামুক্ত নয় ডাক্তার জানিয়েছেন কিছুক্ষের মধ্যে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যেতে হবে।