DoinikAstha Epaper Version
ঢাকাশনিবার ১০ই মে ২০২৫
ঢাকাশনিবার ১০ই মে ২০২৫

আজকের সর্বশেষ সবখবর

কুরআনের ভাষায় সৌভাগ্যবান ও দুর্ভাগার পরিচয়

মাওলানা মুহাম্মাদ তাওহীদুল ইসলাম তায়্যিব
সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩ ১২:৪৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সবাই জীবনে সুখী হতে চায়। সৌভাগ্যবান হতে চায়। নিরাপদে, স্বস্তিতে, শান্তি ও প্রশান্তিতে জীবনযাপন করতে চায়। সেজন্য প্রত্যেকেই তার বুঝ ও বুদ্ধি অনুযায়ী চেষ্টা করে। সাধ্য ও সামর্থ্য অনুযায়ী মেহনত করে। যোগ্যতা ও পরিকল্পনা অনুযায়ী অগ্রসর হয়। কিন্তু সুখ ও সৌভাগ্যের সংজ্ঞা সবার কাছে এক হয় না। ফলে প্রত্যেকে তার পরিচিত সংজ্ঞা অনুযায়ী সুখ চায়। নিজেদের বুঝ ও বিবেচনা অনুযায়ী সৌভাগ্য লাভের আশা করে।

সুখী ও সৌভাগ্যবান মানুষ বলতে সমাজে এমন লোকদেরকে বোঝানো হয়, জাগতিক জীবনে যাদের প্রায় সকল চাহিদা পূর্ণ হয়। কাক্সিক্ষত অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থান থাকে। সম্মান ও মর্যাদা এবং ক্ষমতা ও পদ-পদবি থাকে। সবাই জানে, উপরোক্ত সকল বিষয় পূর্ণাঙ্গরূপে কারো পক্ষে লাভ করা সম্ভব নয়। সেজন্য এসব বিষয়ে যে যতটা অগ্রসর থাকে, তাকে ততটা সুখী ও সৌভাগ্যবান মনে করা হয়।

কোনো সন্দেহ নেই— দুনিয়ার এ জীবন ক্ষণস্থায়ী। দুনিয়াবী জীবনের সুখ-দুঃখ ক্ষণস্থায়ী। দুনিয়াকেন্দ্রিক সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্যও ক্ষণস্থায়ী। সেজন্য প্রকৃত সুখ ও সৌভাগ্য হবে সেটাই, যা দুনিয়া-আখেরাত উভয় জগতে লাভ হবে কিংবা চিরস্থায়ী জীবন আখেরাতে লাভ হবে।

কুরআন মাজীদে প্রকৃত সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্যের কথা আলোচনা করা হয়েছে। হাশর দিবসের প্রসঙ্গে উল্লেখিত হয়েছে সৌভাগ্যবান ও দুর্ভাগাদের কথা। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন : (সেদিন) তাদের মধ্যে কতক হবে দুর্ভাগা, আর কতক হবে সৌভাগ্যবান। যারা দুর্ভাগা হবে, তারা থাকবে আগুনে। সেখানে তাদের চিৎকার ও আর্তনাদ শোনা যাবে। তারা তাতে থাকবে চিরকাল যতদিন বিদ্যমান থাকবে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী; যদি না আপনার রব অন্য কিছু ইচ্ছা করেন। আর যারা সৌভাগ্যবান হবে, তারা থাকবে জান্নাতে। তাতে তারা থাকবে চিরকাল যতদিন বিদ্যমান থাকবে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী; যদি না আপনার রব অন্য কিছু ইচ্ছা করেন। (আর তাদেরকে দেওয়া হবে) নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার। (সূরা হুদ : ১০৫-১০৮)।

এখানে প্রকৃত সৌভাগ্যবানদের পরিণাম যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, তেমনি উল্লেখ করা হয়েছে প্রকৃত দুর্ভাগাদেরও পরিণতি। প্রকৃত সৌভাগ্যবান তারা, যারা চিরস্থায়ী জান্নাত লাভ করবে। চিরস্থায়ী সুখ ও চিরকালীন আবাস লাভ করবে। সেখানে তারা পাবে এমন সবকিছু, যা তারা কামনা করে। তাদের থাকবে অত্যুচ্চ সম্মান ও মর্যাদা। তাদেরকে স্পর্শ করবে না কোনো দুশ্চিন্তা ও পেরেশানী। আর প্রকৃত দুর্ভাগা তারাই হবে, যারা সেই জান্নাত থেকে বঞ্চিত হবে এবং নিক্ষিপ্ত হবে জাহান্নামের ভয়ানক আগুনে। যেখানে থাকবে বিভিন্ন রকমের আজাব ও গজব এবং চিৎকার ও আহাজারি।

সৌভাগ্যবান ও দুর্ভাগাদের এই বিভাজন তো হবে আখিরাতে। কিন্তু দুনিয়াতে তাদের পরিচয় ও পরিচিতি কী হবে? কেমন হবে তাদের চিন্তা ও কর্মনীতি? সে প্রসঙ্গেও কুরআন মাজীদে একাধিক আয়াত রয়েছে। তন্মধ্যে মৌলিক বক্তব্যসম্পন্ন একটি আয়াত রয়েছে সূরা ত্বহায়। তাতে সর্বপ্রথম মানব ও নবী হযরত আদম (আ.) এবং তাঁর জীবনসঙ্গিনী ‘হাওয়া’ রাযিয়াল্লাহু আনহাকে দুনিয়াতে পাঠানোর সময় যে নসিহত করা হয়েছিল সেই প্রসঙ্গটি উত্থাপিত হয়েছে।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন : তোমরা উভয়ে এখান থেকে নিচে নেমে যাও। তোমরা একে-অন্যের শত্রু। পরবর্তীতে যদি তোমাদের কাছে আমার পক্ষ থেকে কোনো হেদায়েত পৌঁছে, তখন যে ব্যক্তি আমার হেদায়েত অনুসরণ করবে সে বিপথগামী হবে না এবং দুর্ভাগাও হবে না। (সূরা ত্বহা : ১২৩)।

এখান থেকে বোঝা যায়, সৌভাগ্যবান তারাই, যারা দুনিয়ার জীবনে আল্লাহ তায়ালার নাজিলকৃত হেদায়েতের অনুসরণ করে। আর দুর্ভাগা তারা, যারা সেই হেদায়েতের অনুসরণ করে না। হেদায়েত মানে নির্দেশনা। সঠিক পথের দিশা। সঠিক গন্তব্য ও কাক্সিক্ষত লক্ষ্যাভিমুখী পথনির্দেশ।

স্পষ্ট কথা যে, প্রত্যেক মুমিনের কাক্সিক্ষত লক্ষ্য হলো আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি; গন্তব্য জান্নাত। এই লক্ষ্য ও গন্তব্যের সঠিক নির্দেশনা আল্লাহ তায়ালা নবী রাসূলগণের মাধ্যমে নাজিল করেছেন। এরপর নির্দেশ করেছেন সেই হেদায়েতের পূর্ণ অনুসরণ করতে। যারা অনুসরণ করেছে তাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে : ‘তারা বিপথগামী হবে না এবং দুর্ভাগাও হবে না’।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৩:৫৩
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৬:৩৫
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৩:৫৮
  • ১১:৫৮
  • ৪:৩২
  • ৬:৩৫
  • ৭:৫৭
  • ৫:১৮