DoinikAstha Epaper Version
ঢাকারবিবার ৫ই মে ২০২৪
ঢাকারবিবার ৫ই মে ২০২৪

আজকের সর্বশেষ সবখবর

গান-বাজনার ফলাফল ভয়াবহ পরিণতি, যা বলে ইসলাম

Abdullah
অক্টোবর ৫, ২০২৩ ১২:৫৫ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

গান-বাজনার ফলাফল ভয়াবহ পরিণতি, যা বলে ইসলাম

আস্থা ডেস্কঃ

গান-বাজনা করা ও শোনা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম এবং কবিরা গুনাহ। যে কোনো ধরনের গানের ক্ষেত্রেই একই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেমন- মুর্শীদি, কাওয়ালি, পল্লিগীতি, ভাওয়ালি, ভক্তিমূলকসহ যেকোনো প্রকার গান ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম।

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, “আর মানুষের মধ্য থেকে কেউ কেউ না জেনে আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য বেহুদা কথা খরিদ করে, আর তারা ওইগুলোকে হাসি-ঠাট্টা হিসেবে গ্রহণ করে”।

এ আয়াতে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি ‘লাহওয়াল হাদিস’ অবলম্বন করে, সে দোজখের কঠিন শাস্তি প্রাপ্ত হবে, কাজেই তা হারাম। এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে, ‘লাহওয়াল হাদিস’ কি? তাফসীরে ইবনে কাছীরে বলা হয়েছে, ‘লাহওয়াল হাদিস’ এর অর্থ হচ্ছে গান-বাজনা।

আল্লাহ শয়তানকে সম্বোধন করে বলেছেন, “তোমার কন্ঠ দিয়ে তাদের মধ্যে যাকে পারো প্ররোচিত করো।” এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসীর ইবনে জারীরে আল্লামা ইবনে জারীর তাবারী (রহ.) বর্ণনা করেছেন, “হযরত মুজাহিদ (রহ.) তিনি উক্ত আয়াত সম্বন্ধে বলেন, শয়তানের শব্দের অর্থ হচ্ছে গান-বাজনা।

সূরা আন-নাজমে আল্লাহ বলেন, “তোমরা ক্রীড়া-কৌতুক করছো বা তোমরা কি এ কথার (কুরআন শরিফ-এর) ওপর আশ্চর্য্যান্বিত হচ্ছো ও হাস্য করছো এবং ক্রন্দন করছো না, অথচ তোমরা গান-বাজনা করছো?”

গান-বাজনার ক্ষতিকর যত দিক ইসলাম কোনো জিনিসের মধ্যে ক্ষতিকারক কিছু না থাকলে তাকে হারাম করেনি। গান-বাজনার মধ্যে নানা ধরনের ক্ষতিকর জিনিস বিদ্যমান রয়েছে।

গান-বাজনা হচ্ছে নফসের মদ স্বরুপঃ-
মদ যেমন মানুষের শারীরিক ক্ষতি করে, বাদ্যও মানুষের আত্মিক ক্ষতি করে। যখন গান-বাজনা তাদের আচ্ছন্ন করে ফেলে, তখনই তারা শিরকে পতিত হয়। আর তখন তারা অশ্লীল কাজ ও জুলুম করতে উদ্যত হয়। তারা শিরক করতে থাকে এবং যাদের হত্যা করা নিষেধ তাদেরকেও হত্যা করতে থাকে। যেনা করতে থাকে। যারা গান-বাজনা করে তাদের বেশিরভাগের মধ্যেই এই তিনটি দোষ দেখা যায়। তাদের বেশিরভাগই মুখ দিয়ে শিস দেয় ও হাততালি দেয়। অথচ মুখ দিয়ে শিস ও হাততালি দেওয়া হারাম।

গান হল যেনার রাস্তা স্বরূপঃ-
বেশিরভাগ অশ্লীল কাজ অনুষ্ঠিত হয় গানের মজলিসে। যেখানে পুরুষ, বালক, বালিকা ও নারী চরম স্বধীন ও লজ্জাহীন হয়ে পড়ে। এভাবে গান শ্রবণ করতে করতে নিজেদের ক্ষতি ডেকে আনে। তখন তাদের জন্য অশ্লীল কাজ করা সহজ হয়ে দাঁড়ায়, যা মদ্যপানের সমতুল্য কিংবা আরও অধিক। অনেক সময় গান শ্রবণ করতে করতে উত্তেজিত হয়ে একে অপরকে হত্যা করে ফেলে। যারা গান-বাজনা করে ও শোনে তারা মূলত শয়তানের সঙ্গী হয়ে যায়।

আল্লাহ বলেছেন: “যে ব্যক্তি আল্লাহর স্মরণ থেকে চোখ ফিরিয়ে নেয়, আমি তার জন্যে এক শয়তান নিয়োজিত করে দেই, অতঃপর সে-ই হয় তার সঙ্গী। আর নিশ্চয়ই তারাই (শয়তান) মানুষদেরকে আল্লাহর পথ থেকে বাধা দেয়। অথচ মানুষ মনে করে তারা হিদায়েত প্রাপ্ত।”

আল্লাহ তাদের জন্য শয়তানকে নির্দিষ্ট করে দেন, যাতে তারা আরও পথভ্রষ্ট হতে পারে। আল্লাহ বলেছেন: “বল, যে বিভ্রান্তিতে রয়েছে তাকে পরম করুণাময় আল্লাহ্ প্রচুর অবকাশ দেবেন।” শয়তান যে তাদের সাহায্য করে, এতে আবাক হওয়ার কিছুই নেই।

বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ গান হয় বিয়ের মজলিসে, কোনো অনুষ্ঠান বা উৎসবে। এগুলোর বেশিরভাগই অশ্লীলতা, দেখা-সাক্ষাৎ ইত্যাদির উপরে ভিত্তি করে রচিত। তাতে থাকে মুখের, কপালের এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রতঙ্গের বর্ণনা, যা যুবকদের মনে অশ্লীলতা জাগিয়ে তোলে।

আরো পড়ুন :  কুমিল্লায় ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণ শেষে হত্যার ঘটনায় মূল আসামিকে গ্রেপ্তার

যখন গায়ক- গায়িকারা গান বাজনার নামে একত্রিত হয়, তখন ওই সব ধন দৌলত ব্যয় হয়, যা সংস্কৃতির নামে জাতীয় তহবিল হতে চুরি করা হয়। তারপর ওই সম্পদ নিয়ে ইউরোপ আমেরিকা গিয়ে বাড়ি গাড়ি ইত্যাদি ক্রয় করে। তারা তাদের অশ্লীল গান বাজনা দিয়ে জাতীয় চরিত্র নষ্ট করে দেয়। তাদের অশ্লীল ও নগ্ন ছবি দিয়ে যুবকদের চরিত্র নষ্ট করে। ফলশ্রুতিতে তারা আল্লাহকে ছেড়ে তাদেরকে ভালবাসতে থাকে।

সর্বোপরি হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, “আমি ‘বাদ্য-যন্ত্র’ ও ‘মুর্তি’ ধ্বংস করার জন্যে প্রেরিত হয়েছি।”

গান-বাজনা ইসলামে নাজায়েয, হারাম ও নিষিদ্ধ। কেননা গান দ্বারা অন্তরে নিফাক বৃদ্ধি পায়। যেমনিভাবে পানি দ্বারা ফসল বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া গান দ্বারা অন্তরে যৌনতার চাহিদা সৃষ্টি হয় এবং মানুষ বিপথগামী হয়।

সাহাবি ও তাবেঈনদের ভাষ্য অনুযায়ী বহু গুনাহের সমষ্টি হলো গান ও বাদ্যযন্ত্র। যথাঃ-

১. নিফাক এর উৎস
২. ব্যভিচারের প্রেরণা জাগ্রতকারী
৩. মস্তিষ্কের উপর আবরণ সৃষ্টিকারী
৪. কুরআনের প্রতি অনিহা সৃষ্টিকারী
৫. আখিরাতের চিন্তা নির্মূলকারী
৬. গুনাহের প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টিকারী
৭. জিহাদী চেতনা বিনষ্টকারী

গান সম্পর্কে চার ইমামের ভাষ্যঃ-
গান ও বাদ্যযন্ত্রের ব্যাপারে ইমাম আবু হানীফা, ইমাম মালেক, ইমাম শাফেয়ী ও ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.) এক ও অভিন্ন সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন। সব গান-বাদ্যকে হারাম বলে আখ্যায়িত করেছেন।

ইমাম মালেক (রহ.) কে গান-বাদ্যের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছেন, ‘কেবল ফাসিকরাই তা করতে পারে।’ ইমাম শাফেয়ী (রহ.) বলেছেন যে, ‘গান-বাদ্যে লিপ্ত ব্যক্তি হল নির্বোধ।’

গান-বাজনা, নৃত্য এগুলোর কি কোনো শাস্তি দুনিয়াতে দেওয়া হবে?
উত্তর হচ্ছে, হ্যাঁ দেওয়া হবে। এরকম অনেকের নিকৃষ্ট শাস্তি দুনিয়াতেই হবে। আর পরকালের শাস্তি তো আরো মারাত্মক। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, “নিশ্চয়ই আপনার পালনকর্তার শাস্তি খুবই কঠোর।

১. উদ্দাম-উশৃংখলার গান-বাজনা মানুষকে উন্মত্ত করে দেয়। এগুলো মানুষকে এতটাই উন্মত্ত করে দেয় যে, নারীরা লজ্জা-শরম ভুলে নিজেদেরকে পুরুষদের কাছে বিলিয়ে দিতে দ্বিধা করে না।

২. পুরুষদের জন্য প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে অশ্লীল নারী। টাকার জন্য কিছু নারীকে উপস্থাপন করা হয় লম্পট পুরুষদেরকে আকর্ষণ করার জন্য। আর পরিবেশ এমন হয়, অনেক সাধারণ মেয়েরাও এ সব নর্তকীদের সঙ্গে পুরুষদের মনোরঞ্জনে নেমে পড়ে।

৩. কেয়ামতের একটা লক্ষণ হচ্ছে গায়িকার সংখ্যা বেড়ে যাওয়া। কারণ নারীদের কণ্ঠ লাখ লাখ যুবকের চরিত্রের শুদ্ধতা নষ্ট করে দিতে পারে।

৪. ডিজে পার্টিগুলো অনেক তরুণের নেশা ধরার স্থান। ফ্রি তে দামি নেশাদ্রব্য খেয়ে বাকি জীবন নেশার পেছনেই ধ্বংস করে।

গান বাজনার চূড়ান্ত শাস্তিঃ-
“ভূমিধ্বসে ধ্বংস করে দেওয়া হবে, মানুষের আকৃতি পরিবর্তন করা হবে।” কি আকৃতি পরিবর্তন করা হবে? মানুষকে শূকর ও বানরে পরিণত করে দেওয়া হবে। যেমন, পূর্বে ইয়াহুদীদেরকে করা হয়েছিল।

হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন: “আমার উম্মতের কিছু সংখ্যক লোক মদের নাম পরিবর্তন করে তা পান করবে। তাদের মাথার উপরে গান-বাজনা ও নারী-নৃত্য চলতে থাকবে। আল্লাহ তাদেরকে মাটিতে ধসিয়ে দেবেন। আর তাদেরকে বানর ও শূকরে পরিণত করে দেবেন।”

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৩:৫৭
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৬:৩৩
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:০২
  • ১১:৫৯
  • ৪:৩১
  • ৬:৩৩
  • ৭:৫৩
  • ৫:২১